ঢাকা, ১৯ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪ || ৬ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
১১৪৭

এরশাদের মোট সম্পত্তি কতো ?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১১:১৯ ১৭ এপ্রিল ২০১৯  

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তার সমস্ত সম্পত্তি ট্রাস্ট গঠন করে তাতে দিয়ে দিয়েছেন। সব সম্পত্তি উইল করার পর তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি নিয়ে আগ্রহ বেড়ে যায় সবার মধ্যেই।

উইলের তথ্য অনুযায়ী এরশাদের এফডিআর রয়েছে ১৫ কোটি টাকার।  

কোনো কৃষিজমিই নেই এরশাদের। ঠাকুরগাঁওয়ে ধর্মগড়ে ১২০ বিঘার মতো কৃষিজমি ছিল। তা অনেক আগেই এতিমদের নামে লিখে দিয়েছেন। তার প্রতিষ্ঠিত এতিমখানায় অধ্যয়ন করা অনাথদের ১০ বিঘা করে জমি লিখে দিয়েছেন তিনি।

 

ট্রাস্টের নামে উইল করে দিয়েছেন এফডিআর, রংপুরের পদাগঞ্জের পল্লীবন্ধু কোল্ড স্টোরেজ, ৬৫ শতক জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত রংপুর শহরে বাসভবন (পল্লী নিবাস), বারিধারার ফ্লাট - প্রেসিডেন্ট পার্ক, যেখানে তিনি নিজে অবস্থান করেন, গুলশানের ফ্লাট, বনানী বিদ্যা নিকেতনের বিপরীতে অবস্থিত একটি ফ্লাট, বনানী ইউআই শপিং কমপ্লেক্সের দু-টি দোকান ও নিজের নামে কেনা পাঁচটি গাড়ি।

 

কোল্ড স্টোরেজ স্থাপনের সময়ে চাচাতো ভাই সামছুজ্জামান মুকুলকে কিছু শেয়ার লিখে দিয়েছিলেন এরশাদ। সে কারণে পুরো কোল্ড স্টোরেজ ট্রাষ্টে লিখে দিলেও এর থেকে প্রাপ্ত আয়ের ২০ শতাংশ হিস্যা মুকুলের নামে দিয়েছেন। আর ৮০ শতাংশ মুনাফা যাবে ট্রাস্টের ফান্ডে। তবে কোল্ড স্টোরেজের মূলধনে মুকুলের কোনো শর্ত রাখা হয়নি।

 

ট্রাস্ট পরিচালনায় পাঁচ সদস্যের বোর্ড থাকবে। এতে রয়েছেন : হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, এরিক এরশাদ, ভাতিজা মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) খালেদ আক্তার, ব্যক্তিগত সহকারি জাহাঙ্গীর আলম ও চাচাতো ভাই সামছুজ্জামান মুকুল (রংপুরের বাসার কেয়ারটেকার)।

 

এরশাদ যতোদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন চেয়ারম্যান থাকবেন তিনিই। তার অবর্তমানে বোর্ডে বসে সিদ্ধান্ত নেবে কে চেয়ারম্যান হবেন। বোর্ডের সদস্য সংখ্যা পূরণের জন্য বাইরে থেকে একজনকে সদস্য অথবা চেয়ারম্যান মনোনয়ন দেয়ার এখতিয়ার রয়েছে বোর্ডের হাতে।

 

তবে ট্রাস্টিদের কোনো রকম সম্মানি বা ভাতা প্রদানের সুযোগ রাখা হয়নি। তারা কাজ করবেন স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে। ট্রাস্টের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বিক্রি বা মালিকানা পরিবর্তেনের ক্ষমতা রোহিত করা হয়েছে।

 

 

 

মুনাফার অর্থে পরিচালিত হবে এই ট্রাস্ট। ট্রাস্টের মুনাফায় প্রথমত ব্যয় হবে হুসেইন মুহম্মদের এরশাদ ও এরিক এরশাদের ভরণপোষণ। সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হয়েছে এরশাদের অবর্তমানে এরিকের ভরণপোষণের বিষয়টি।

 

এরিকের পরবর্তী প্রজন্মও এখান থেকে সুবিধাপ্রাপ্ত হবেন।

 

দুস্থ অসহায়, এতিমদের আজীবন ভাতা দেয়ার কথা বলা হয়েছে এতে। যেহেতু এফডিআর থেকে বছরান্তে আয় আসবে, সে কারণে বছরান্তে একবার অডিট করার বিধান রাখা হয়েছে।

 

তবে উইলে বর্তমানে এরশাদের দেয়া চলমান অনেক ভাতার বিষয়ে কোনো উল্লেখ নেই। সে কারণে ধারণা করা হচ্ছে, এরশাদের অবর্তমানে তাদের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে। রানা প্লাজায় আহত আটজন, তাজরীন গার্মেন্টসে নিহতের তিন পরিবারসহ মোট ৪৩ জনকে প্রতিমাসে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। এজন্য ব্যাংক টু ব্যাংক চলে যায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা। যা তার সংসদের সম্মানির তহবিল থেকে সরবরাহ করে থাকেন।

 

সংসদের বেতন কখনই নিজের জন্য নেননি এরশাদ। সব সময় গরিব অসহায়দের দিয়েছেন।

বর্তমানে প্রায় ১২ লাখ টাকা মাসিক ভাতা প্রদান করেন বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে। এরমধ্যে দলের এক/দু’জন প্রেসিডিয়াম সদস্য, মধ্যম সারির নেতা, দুস্থ অসহায় পরিবারও রয়েছে। এই টাকার কোনো সংস্থান রাখা হয়নি।

 

একাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামার এরশাদ নিজের নামে ৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৮০ হাজার ২০০ টাকার সম্পদের ঘোষণা দেন। হলফনামায় বাৎসরিক আয় দেখানো হয় - ১ কোটি ৮ লাখ ৪২ হাজার ২০৬ টাকা। এছাড়া, ২ কোটি ৩২ লাখ ৪ হাজার ৬৩৫ টাকার দুইটি ব্যাংকে ঋণের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।