ঢাকা, ১৯ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪ || ৬ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৬৮৪

সংরক্ষিত আসনে আলোচনায় বিএনপির এক ডজন নেত্রী

কে যাচ্ছেন সংসদে?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২৩:৫৫ ১৭ মে ২০১৯  

একাদশ সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনেও প্রার্থী দিতে যাচ্ছে বিএনপি। নিয়মানুযায়ী একজন নারী সংসদ সদস্য পাবে বিএনপি। তবে তফসিল ঘোষণার সপ্তাহ পার হলেও এখন পর্যন্ত প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি দলটি।

 

 

একটি মাত্র সংরক্ষিত আসনে প্রার্থী হতে বিএনপির নেত্রীদের মধ্যে প্রকাশ্যে কোনো তৎপরতা না থাকলেও পর্দার অন্তরালে চলছে নানামুখী দৌড়ঝাঁপ। বিএনপি নেত্রীদের মধ্যে অনেকেই গোপনে গোপনে লবিং-তদবির করছেন। যার যার বলয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টাটাই করছেন দলের টিকিট নিয়ে সংসদে যেতে। এ দৌড়ে রয়েছেন অন্তত ডজনখানেক নারী নেত্রী।

 

বিএনপির নারী নেত্রীদের মধ্যে সংরক্ষিত নারী আসনে দলীয় টিকিট পাওয়ার ক্ষেত্রে যারা আলোচনায় আছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন : বিএনপি চেয়ারপারসনের পুত্রবধূ ও প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক নারী সংসদ সদস্য নিলুফার চৌধুরী মনি এবং নিপুণ রায় চৌধুরী। বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ফাহিমা মুন্নী, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খান ও সাবেক সংসদ সদস্য আশিফা আশরাফী পাপিয়ার নামও রয়েছে আলোচনায়।

 

তবে এদের মধ্যে কেউ কেউ এই দৌড়ে নেই বলে দাবি করেছেন। কিন্তু তাদের নাম বিএনপির কেন্দ্রে আলোচনায় আছে। তবে শেষ পর্যন্ত কে হবেন বিএনপির ভাগ্যবান নারী এমপি বিষয়টি নির্ধারণ করবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও মহাসচিবের মত নিয়ে তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটিই চূড়ান্ত।

 

সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি হতে আগ্রহীরা বিএনপির হাইকমান্ডের কাছে সাংগঠনিক যোগ্যতা, রাজনৈতিক পটভূমি, পরিবারের অবদান ও নিজের ত্যাগের বিষয়টি তুলে ধরে মনোনয়ন দাবি করছেন। রাজনৈতিক দক্ষতা ও যোগ্যতাকে মূল্যায়ন করা হলে মনোনয়ন পাবেন, এমন প্রত্যাশা করছেন বেশ কয়েকজন নারী নেত্রী। দলের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষায় আছেন তারা।

 

গত সোমবার ২০-দলীয় জোটের বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শরিক নেতাদের জানান, সংরক্ষিত নারী আসনে একজনকে মনোনয়ন দেয়া হবে। তবে নির্দিষ্ট কারও নাম জানাননি তিনি। এর পর থেকে বিএনপির নারী নেত্রীরা নিশ্চিত হন যে, বিএনপি সংসদে নারী প্রতিনিধি পাঠাবে। ওই দিন থেকে তাদের দৌড়ঝাঁপ বেড়ে যায়। একাদশ নির্বাচনের আগে আলোচনা ছিল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান কোনো একটি আসন থেকে নির্বাচন করবেন। তাকে ঘিরেই বিএনপির ভবিষ্যৎ রাজনীতি পরিচালিত হবে। কিন্তু সেটি আর হয়ে ওঠেনি। পাসপোর্ট জটিলতায় দেশে আসতে পারেননি ডা. জোবাইদা। এখন জিয়াউর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হোক এটি চাচ্ছেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের কেউ কেউ।

 

এ রকম বাস্তবতায় বিএনপির ভেতর চলছে নানা সমীকরণ। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সিঁথি শেষ পর্যন্ত বিএনপির টিকিটে সংসদে গেলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। কারণ বিএনপির হাইকমান্ডকে পরিবর্তিত রাজনৈতিক বাস্তবতায় এখন অনেক বিকল্প মাথায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। যেমনটি হয়েছে দলের ৫ এমপির শপথগ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময়।

 

কোকোর মৃত্যুর পর শর্মিলা সিঁথি তার দুই কন্যাকে নিয়ে লন্ডনে বসবাস করছেন। সর্বশেষ গত বছরের অক্টোবরে শাশুড়ি খালেদা জিয়ার চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে শর্মিলা দেশে এসেছিলেন। তখন খালেদা জিয়া বিএসএমএমইউতে ভর্তি ছিলেন। এদিকে সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন পেতে দলের অনেকেই নীতিনির্ধারকদের বাসায় গিয়ে তদবির শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। দলের একজন নীতিনির্ধারক যুগান্তরকে বলেন, শর্মিলা সিঁথিকেই সংরক্ষিত নারী আসনে একমাত্র এমপি হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে।

 

তবে সিনিয়র নেতারা মনে করছেন, এ ক্ষেত্রে তারেক রহমান যাকে মনোনয়ন দেবেন তিনিই সংরক্ষিত আসনের এমপি হবেন। এ ক্ষেত্রে সিঁথিকে শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন নাও দেয়া হতে পারে।

 

অবশ্য, ডজন প্রতিযোগী থাকলেও নারী এমপির তালিকায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে রয়েছেন চারজন। তারা হলেন- ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, আফরোজা আব্বাস, নিপুণ রায় চৌধুরী ও শামা ওবায়েদ।

 

বিএনপির একটি সূত্র বলছে, বুধবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ব্যাংকক গেছেন। ওখান থেকে তিনি লন্ডন যাবেন। সেখানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে সংরক্ষিত নারী আসন ও বগুড়া-৬ আসন প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন।

 

গত বুধবার নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বিএনপির একটি নারী আসনের জন্য তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল অনুযায়ী, ২০ মের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২১ মে, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৮ মে এবং ভোট ১৬ জুন।