ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ১১ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
১০০০

অভিযোগ খতিয়ে দেখবে ইউজিসি

ভিসি নিজেই ভাগ করে দেন কোটি টাকা!

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২২:৫২ ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯  

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অভিযোগ তদন্ত করতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) দায়িত্ব দেয়া হবে। এজন্য চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হতে পারে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে এসব তথ্য।

কমিশন বাণিজ্যের অপরাধে ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে এরই মধ্যে পদত্যাগ করতে হয়েছে। একই অভিযোগে উঠেছে জাবি উপাচার্যের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি পক্ষ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে গেল কয়েকদিন ধরে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছেন। 
এসব বিষয় গুরুত্ব দিয়ে উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অপরাধ প্রমাণিত হলে উপাচার্যকে পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হতে পারে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, জাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের কমিশন বাণিজ্যের ব্যাপারে শিক্ষকদের দেয়া লিখিত অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে। এ জন্য ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগমকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হতে পারে। দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয় থেকে ইউজিসিকে চিঠি দেয়া হবে। তদন্ত শেষে কমিটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হবে। অপরাধের প্রমাণ মিললে উপাচার্যের পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেয়া হতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রগুলো বলছে, কমিশন কেলেঙ্কারির ঘটনায় জাবি উপাচার্য দায় এড়াতে পারেন না। একজন উপাচার্যের কাছে ছাত্রনেতারা কীভাবে কমিশন দাবির সাহস পায়, এ বিষয় নিয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গেইবা উপাচার্য কীভাবে বৈঠক করেন। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন চলছে। এ অপরাধে জন্য সবাই জাবি উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করছেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল্লাহ আল হাসান চৌধুরী বলেন, জাবি উপাচার্যের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গোপনে খোঁজ-খবর নেয়া হয়েছে। এতে অভিযোগের কিছুটা সত্যতা পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিবিড়ভাবে খতিয়ে দেখতে ইউজিসিকে দায়িত্ব দেয়া হবে। এজন্য একটি কমিটি গঠন করাও হতে পারে।

তিনি বলেন, অভিযোগ খুবই গুরুতর। তবে বিষয়টি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে। অভিযোগের সত্যতা মিললে দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে জাবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আমির হোসেন বলেন, কমিশন আদায়ের বিষয়টি নিয়ে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। কেউ কেউ উপাচার্যের এমন ঘটনা মেনে নিতে পারছে না, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছেন। তবে এ নিয়ে একাডেমি কার্যক্রমে কোনো প্রভাব পড়েনি।

  
এদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির টাকা নিয়ে ফাঁস হওয়া  অডিও রেকর্ড বা ফোনালাপে জাবি ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম এক পর্যায়ে রাব্বানীকে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা ভাগ করে দেয়ার বিষয়টি জানান। ফোনে তিনি বলেন, বাকি ৬০ লাখ টাকার ব্যাপারে জানেন না। তবে জুয়েলকে ৫০ লাখ, চঞ্চলকে ২৫ লাখ এবং তাকে ২৫ লাখ টাকা করে উপাচার্য নিজেই ভাগ করে দিয়েছেন বলে ফোনালাপে জানান সাদ্দাম। তিনি আরও জানান, তাদেরকে না জানিয়ে বাকি ৬০ লাখ টাকা জুয়েল ও চঞ্চলকে দেয়া হতে পারে।

ফাঁস হওয়া ফোনালাপে বলা হয় আলোচিত ১ কোটি টাকা জাবি শাখা ছাত্রলীগকে ঈদ সালামি হিসেবে দেন উপাচার্য ফারজানা ইসলাম। টাকা লেনদেন ও ফোনালাপ ফাঁসের বিষয়ে জানতে চাইলে জাবি ছাত্রলীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ফাঁস হওয়া ফোনালাপে আলোচিত ১ কোটি টাকা শাখা ছাত্রলীগকে ঈদ সালামি হিসেবে দিয়েছেন ভিসি ফারজানা ইসলাম। এটি অস্বীকার করার কিছুই নেই।

এদিকে সোমবার দুপুরে হঠাৎ করে দেড় শতাধিক ছাত্রলীগ কর্মী নিয়ে ক্যাম্পাসে ঘণ্টাখানেক শোডাউন দেন সাদ্দাম হোসেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, আসলে এটা শোডাউন নয়। সামনে ভর্তি পরীক্ষা, তাই ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করলাম। সবকিছু ঠিকঠাক আছে কিনা এবং সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে কিনা, তা দেখলাম।