ঢাকা, ২৯ মার্চ শুক্রবার, ২০২৪ || ১৪ চৈত্র ১৪৩০
good-food
১০৭৫

রাজিয়ার স্বপ্নটা কী পূরণ হবে না?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২০:০৪ ৩১ জানুয়ারি ২০১৯  

জন্ম থেকেই দুটি-পা অকেজো রাজিয়া সুলতানা রুমকির। মায়ের নিরলস সমর্থন আর নিজের হার না মানা সংগ্রামের ফলে শারীরিক প্রতিকূলতাকে পাশ কাটিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে রেখেছেন মেধার স্বাক্ষর। শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে দীর্ঘ সংগ্রাম শেষে ভর্তি হয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০১৮-১৯ সেশনে আরবি বিভাগের প্রথম বর্ষে। কিন্তু এতদূর এসেও যেন সেই স্বপ্ন থেমে যেতে বসেছে রাজিয়ার।

রাজিয়া সুলতানা জানান, আরবি বিভাগের ক্লাস হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলা ভবনের ৩তলায়। তার জন্য প্রতিদিন সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে ক্লাস করা দুষ্কর। নিজের সমস্যার কথা প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও ফল পাচ্ছেন না। এমন দুর্ভোগে  বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা যেন থমকে যেতে বসেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে তার আবেদন ওকে যেন নিচতলায় ক্লাস হয় এমন বিভাগে স্থানান্তর করা হয়।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, দুই ভাইবোনের মধ্যে বড় রাজিয়া জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। কোমর থেকেই তার পা অকেজো। হুইল চেয়ারে বসেই জীবনযাপন করতে হয় তাকে। এভাবেই ২০১৫ সালে মাধ্যমিকে বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ৪.৩৯ এবং ২০১৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে সরকারী মহিলা কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে ৪.০৮ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। পিকআপ ভ্যান চালক বাবা আর গৃহিণী মায়ের অকুণ্ঠ সমর্থন ও শত সংগ্রাম শেষে ২০১৮-১৯ সেশনে রাবির আরবি বিভাগে ভর্তি হয়েছেন।

রাজিয়ার মা নাজনীন বেগম বলেন, আমার কষ্টটা কষ্টই রয়ে গেল। ছোট থেকেই অনেক কষ্ট করে তাকে পড়াশোনা করিয়েছি। এখন রাবির মতো এত বড় জায়গায় পড়ার সুযোগ পেয়েও সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠার জন্য তার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যেতে বসেছে। রাজিয়ার স্বপ্নটা কী আর পূরণ হবে না?

ওই শিক্ষার্থী বলেন, আমার স্বপ্ন শিক্ষক হওয়ার। পড়াশোনা শেষ করে আমি আমার মতো দুর্ভাগাদের নিয়ে কাজ করতে চাই। যারা এমন সীমাহীন কষ্ট করে জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তিনতলায় উঠে ক্লাস করা আমার জন্য সম্ভব হবে না। আমার স্বপ্নটা বোধ হয় আর পূরণ হবে না।

আরবি বিভাগের সভাপতি বলেন, আমাদের বিভাগে নিয়মিত ক্লাস না করলে টিকে থাকাও মুশকিল হয়ে যাবে। তিনতলায় এসে ক্লাস করাটাও তার জন্য কষ্টকর। এখন যদি উপাচার্য তাকে নিচতলায় যেসব বিভাগের ক্লাস হয়, সেগুলোতে স্থানান্তর করার ব্যবস্থা করেন তাহলে সমস্যাটা সমাধান হতে পারে।