ঢাকা, ২৯ মার্চ শুক্রবার, ২০২৪ || ১৪ চৈত্র ১৪৩০
good-food
১৩১৬

অবশেষে যুবলীগ নেতাকে আনা হলো আইনের আওতায়

সম্রাট গ্রেপ্তার

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১১:২৯ ৬ অক্টোবর ২০১৯  

ক্যাসিনোকাণ্ডের চাঞ্চ্ল্যকর তথ্যের পর অবশেষে গ্রেপ্তার হলেন আত্মগোপনে থাকা ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাট।   

রোববার ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানার আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জশ্রীপুর গ্রাম থেকে সম্রাট এবং তার সহযোগী আরমানকে গ্রেপ্তার করছে র‌্যাব।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় র্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর থেকে আলোচনায় ছিল যুবলীগ নেতা সম্রাটের নাম।

সেদিন যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূইয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর সদলবলে কাকরাইলে সংগঠনের কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে রাতভর সেখানে ছিলেন সম্রাট। কিন্তু এরপর তিনি নিরুদ্দেশ হন।

র্যাবের অভিযানের সময় মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া চক্রের ভেতরে সম্রাটের বিশাল ছবি দেখা যায়। ওই ক্লাবের ক্যাসিনো তিনিই চালাতেন এবং মতিঝিল ক্লাবপাড়ায় অন্য ক্যাসিনোগুলো থেকেও প্রতিদিন নির্দিষ্ট হারে চাঁদা তার কাছে যেত বলে গণমাধ্যমে খবর আসে।

চৌদ্দগ্রাম থানার আলকরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক হেলাল জানান, কুঞ্জশ্রীপুর গ্রামের যে বাড়ি থেকে সম্রাটকে ধরা হয়েছে, সেটি স্টার লাইন পরিবহনের মালিক আলাউদ্দীনের ভগ্নিপতি মনিরের বাড়ি। শনিবার সন্ধ্যা থেকেই বাড়িটি ঘিরে রেখেছিল র্যাব।

তবে মনির কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি ইউপি চেয়ারম্যান হেলাল।           

সহযোগী সংগঠন যুবলীগের নেতাদের চাঁদাবাজি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার অসন্তোষ প্রকাশ পাওয়ার পর জুয়ার আখড়া বন্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই অভিযান শুরু হয়।

মতিঝিলের ইয়ংমেন্স ফকিরেরপুল ক্লাবে ক্যাসিনো চালানোর ঘটনায় ১৮ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করা হয় যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে। পরদিন কলাবাগান ক্লাব থেকে গ্রেপ্তার হন কৃষক লীগের নেতা সফিকুল আলম ফিরোজকে। দুদিন পর নিকেতন থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ঠিকাদার জি এম শামীমকে, তিনিও যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দিতেন।

‘অপকর্মকারীদের’ বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর মনোভাব অত্যন্ত কঠোর - এমন বার্তা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছ থেকে আসার পর আত্মগোপনে যান সম্রাটসহ যুবলীগের বেশ কয়েকজন নেতা।

তাদের মধ্যে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমান, মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বকুল এবং ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মতিঝিলের ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোমিনুল হক সাঈদের নামও এসেছে।

সম্রাট নিরুদ্দেশ হওয়ার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই তাকে নিয়ে বিভিন্ন রকম খবর আসছিল সংবাদ মাধ্যমে। কিন্তু যুবলীগের অফিস কিংবা বাসা - কোথাও তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না।   

এরই মধ্যে সম্রাটের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়, তার এবং তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব তলব করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইনানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট-বিএফআইইউ।

ক্ষমতাসীন দলের যুব সংগঠনের এই নেতাকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আটক করেছে বলে এর আগেও বিভিন্ন সমেয়ে শোনা গেছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা স্বীকার করেনি।  

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলে আসছিলেন, ‘সম্রাট হোক আর যেই হোক’, অপরাধ করলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। অবশেষে তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনলো সরকার।