ঢাকা, ০৮ অক্টোবর মঙ্গলবার, ২০২৪ || ২৩ আশ্বিন ১৪৩১
good-food
২৩৭

মালয়েশিয়াগামী ৩০ হাজার কর্মীর স্বপ্নভঙ্গ, যা জানালেন রাষ্ট্রদূত

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১০:৪৫ ১ জুন ২০২৪  

ভিসা পেয়েও বিমানের টিকিটসহ নানা জটিলতায় প্রায় ৩০ হাজার বাংলাদেশি প্রবাসী মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে পারেনি। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) কলিং ভিসায় ঢাকা থেকে সর্বশেষ ফ্লাইট ছেড়ে যায়। দেশটির সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী  ওই দিনই ছিল দেশটিতে কর্মীদের যাওয়ার শেষ সুযোগ। 

 

শুক্রবার (৩১ মে) রাতে কুয়ালালামপুর বিমানবন্দর পরিদর্শন করেছেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান। এসময় তিনি বলেন, যারা ভিসা পেয়ে মালয়েশিয়ায় আসতে পারেনি, তাদের নিয়ে আসার ব্যাপারে হাইকমিশনের পক্ষ থেকে চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। যেন সেসব কর্মীদের দ্রুত নিয়ে আসা যায়। 

 

তিনি আরো বলেন, ৫ লাখ ২৭ হাজারের বেশি ডিমান্ড লেটার সত্যায়ন করেছি। এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ৭২ হাজারের বেশি কর্মী মালয়েশিয়াতে এসেছে। আমরা নিয়োগ কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি, তারা যেন এসে এখানে কাজ পায়।

 

শুক্রবার (৩১ মে) রাত ১১টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে গিয়েছে মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের নিয়ে শেষ ফ্লাইট।  এর মধ্য দিয়ে স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়েছে প্রায় ৩০ হাজারের মতো কর্মীর। সরকার নির্ধারিত জনপ্রতি ব্যয় ৭৯ হাজার টাকা হলেও মালয়েশিয়া যেতে এই দুর্ভাগা কর্মীদের বেশিরভাগেরই গুনতে হয়েছে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা।

 

অভিযোগ উঠেছে কয়েকটি এজেন্সির গাফিলতির জন্য এসব কর্মী মালয়েশিয়ায় যেতে পারেননি। বিদেশগামী কর্মীরা বলছেন, তাদের এই দুঃসময়ে মন্ত্রণালয় এবং এজেন্সি কর্তৃপক্ষের কোনো প্রতিনিধি বিমানবন্দরে উপস্থিত হননি। এ অবস্থায় অনিশ্চিত ভবিষ্যতে একমাত্র সরকারি উদ্যোগে তারা অকূলে কূল পেতে পারেন।

 

বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হচ্ছে শনিবার (১ জুন)। দেশটির সরকারের পরবর্তী নির্দেশনার আগ পর্যন্ত সেখানে প্রবেশ পারবেন না কোনো কর্মী। তাই মালয়েশিয়া সরকারের বেঁধে দেয়া শেষ সময়ে কুয়ালামলামপুরের ফ্লাইট ধরতে শুক্রবার সকাল থেকে রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমাবন্দরে হাজির হন অনুমোদন পাওয়া অন্তত সাড়ে ৩১ হাজার কর্মী।

 

তবে এজেন্সিগুলো বাড়তি টাকা নিয়েও এসব কর্মীদের বিমানের টিকিট দিতে পারেনি। যে কারণে প্রায় ৩০ হাজারের মতো কর্মী মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমাতে পারেননি। আবার শেষ সময়ে বিমানের টিকিটের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টিরও অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। ৩০ হাজার টাকার ওয়ানওয়ে টিকিট কিনতে গুনতে হয়েছে ৯৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৮ হাজার টাকা।

 

ভুক্তভোগীরা জানান, নিউ হ্যাভেন, এলিগেন্ট, আল ফারাহসহ বেশ কয়েকটি এজেন্সি ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা নিয়েও কোনো টিকিট দিতে পারেননি বিদেশগামী কর্মীদের। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা দিয়েও এজেন্সির প্রতারণা শিকার হয়েছেন তারা।

 

এ সমস্যার সমাধানে সরকারি উদ্যোগ চান। পাশাপাশি এ ঘটনায় দায়ীদের বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপেরও দাবি জানিয়েছেন। কুয়ালালামপুরের দুটি আন্তর্জাতিক বিমান টার্মিনালের ফ্লোরেও আটকা পড়েছেন প্রায় পাঁচ হাজার বাংলাদেশি কর্মী।

 

বিদেশগামী কর্মীদের আশার বাণী শোনাতে পারেননি বায়রা মহাসচিব শামীম আহমেদ নোমান। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রবেশের সময় বাড়ানোর বিষয়ে কোনো খবর পাইনি। তবে মালয়েশিয়ায় এয়ারপোর্টে আটকে পড়া প্রবাসী কর্মীরা দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবেন।

 

প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক যেতে না পারার ঘটনায় শুধু রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর গাফিলতি দেখছেন বায়রা মহাসচিব। তিনি বলেন, যদি কোনো এজেন্সি বিমানের টিকিট ছাড়া কর্মীদের এয়ারপোর্টে পাঠিয়ে থাকে, এ ধরনের অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবে বায়রা।

প্রবাস বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর