ঢাকা, ২৬ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪ || ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
১৩৩৮

ক্রাইস্টচার্চ হামলা

স্বামী-সন্তানহারা নারীর আবেগঘন সাক্ষাৎকার

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:০৯ ২২ মার্চ ২০১৯  

গেল ১৫ মার্চ ছিল মুসলিম উম্মাহর শোক বেদনার দিন। ওই দিন নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে জুমার নামাজের সময় নৃশংস হামলা চালায় কট্টর মুসলিমবিদ্বেষী ২৮ বছরের ব্রেন্টন ট্যারান্ট। রক্তপিপাসু এ শেতাঙ্গ বর্ণবাদীর হাতে বিনা দোষে নিহত হন ৫০ জন নিরীহ মুসলমান। এদের মধ্যে পাকিস্তানের নাগরিক জন। রক্তে রঞ্জিত হয় প্রার্থনাস্থল।

সবচেয়ে বড় কথা, অনেকেই অন্য মুসলিম ভাই-বোনকে বাঁচাতে নিজেদের জীবন পর্যন্ত বিসর্জন দিয়েছেন। পরে তাদের আত্মীয়স্বজনরাও শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করেছেন। এদেরই একজন হলেন পাকিস্তানের ডা. নাঈম রশিদের স্ত্রী।

তিনি হারিয়েছেন প্রাণপ্রিয় স্বামী রশিদ এবং আশা-ভরসা সান্তনার প্রতীক ২১ বছরের টগবগে যুবক পুত্রসন্তান তালহাকে। স্বামী সন্তানকে হারিয়ে সর্বোচ্চ ধৈর্যের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এ মুসলিম নারী। এজন্য গর্ববোধ করতেও কুণ্ঠাবোধ করছেন না। নিজেকে গর্বিত মনে করছেন তিনি।

ধৈর্যের মূর্ত প্রতীক নারীর স্বামী সন্তান উভয়ই হামলায় আক্রান্ত মানুষকে নিরাপত্তা দিতে গিয়ে মৃত্যুকে আলীঙ্গন করেছেন। শহীদ ডা. নাঈম রশিদের স্ত্রী তালহার মা জিও টিভিকে এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তার আবেগঘন বক্তব্য মুসলিম উম্মাহর হৃদয় নাড়িয়ে দিয়েছে। মানবিকতা নৈতিকার প্রতি নিজেদের বিলিয়ে দিতেও উদ্বুদ্ধ করেছে।

তিনি বলেন, আল-নূর লিনউড মসজিদের সন্ত্রাসী হামলায় স্বামী পুত্রকে হারিয়ে স্বাভাবিকভাবেই শোকে স্তব্দ হওয়ার কথা। তবে আমার এতটুকু আফসোস নেই। কারণ আমার স্বামী সন্তান শহীদ হয়েছেন।  তারা খুবই ভালো মানুষ ছিলে। মানুষকে বাঁচাতে গিয়েই মৃত্যুর কোলে প্রাণ সঁপে দিয়েছেন। আমার জন্য এটা খুবই গর্বের। আমি এজন্য দুঃখিত নই।

স্বামী-সন্তানহারা এ নারী বলেন, বরং সন্ত্রাসী ট্যারান্টের জন্য দুঃখ হয়। তার অন্তর বিদ্বেষ ঘৃণায় ভরপুর ছিল। মানুষের প্রতি হৃদয়ে কোনো সহানুভূতি ভালোবাসা ছিল না। কারণ মানুষের আর্তনাদ বাঁচার চেষ্টা তাকে হত্যাযজ্ঞ থেকে বিরত রাখতে পারেনি।

গর্ব বরে তিনি বলেন, কিন্তু আমাদের অন্তরে ভালোবাসা আছে। আমরা মানুষকে ভালোবাসতে জানি। আমার স্বামী সন্তানের হৃদয়েও মানুষের প্রতি ছিল অনন্য ভালোবাসা। সেই ভালোবাসার টানেই  নিজেদের কথা না ভেবে মানুষের নিরাপত্তায় জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আল্লাহর হুকুম পালন করতে গিয়ে যারা শহীদ হন তাদের জন্য দু: নেই। তারা তো জান্নাতি। দ্বীন তো এটাই কামনা করে। আমি গর্বিত যে শহীদি মৃত্যু লাভ করেছে ওরা।