ঢাকা, ২৯ মার্চ শুক্রবার, ২০২৪ || ১৫ চৈত্র ১৪৩০
good-food
২৪০৬

৬০ টাকা দিয়ে মাশরুম চাষ শুরু করে এখন কোটিপতি

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২২:০৬ ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

৬০ টাকার পুঁজি নিয়ে মাশারুম চাষ শুরু করে কোটিপতি হয়েছেন কেরানীগঞ্জের জাহাঙ্গীর আলম। তার কাছ থেকে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন আরও শতাধিক চাষি। কেরানীগঞ্জের উৎপাদিত মাশরুম পুষ্টিকর ও সুস্বাদু সবজি হিসেবে রাজধানীর চাইনিজ রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন ফাইভ স্টার হোটেলে বিক্রি হচ্ছে। দেশে বিদেশে ব্যপক চাহিদা থাকায় ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে তা। 


জাহাঙ্গীর প্রতিদন ২৫ থেকে ৩০ কেজি মাশরুম উৎপাদন করেন যা বিক্রি করে তার মাসিক আয় হয় প্রায় লক্ষাধিক টাকা। এছাড়া কেরানীগঞ্জের রোহিতপুর,আব্দুল্লাহপুর ও শাক্তা এলাকার প্রয় ১৫টি স্থানে বাণিজ্যিক ভাবে তা চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন অনেকেই।


তিনি জানান, আমি সাভারের সোবাহানবাগের জাতীয় মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউট থেকে ১৯৮৬ সালে প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রথমে ৬০ টাকা পুঁজি নিয়ে কয়েকটি স্পন বা বীজ ক্রয় করে ছোট পরিসরে মাশরুম চাষ শুরু করি। লাভজনক হওয়ায় আস্তে আস্তে ব্যবসা সম্প্রসারিত হতে থাকে। আমি ২০০০ সালে কেরানীগঞ্জের মধ্যেরচর এলাকায় ৬ শতাংশ জমি ক্রয় করে নিজে ল্যবরেটরি তৈরি করে স্পন বা বীজ উৎপাদন করে ব্যপকভাবে পুষ্টিকর ও সুস্বাদু মাশরুম চাষ শুরু করি। 

 

এ চাষি বলেন, প্রথমে ২০টি স্পন দিয়ে চাষ শুরু করলেও বর্তমানে আমার এখানে ২৫ হাজার স্পন রয়েছে। সারাবছর তা চাষ করা যায়। তবে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের এটি চাষ করতে হয়। আমার এখানে ৬ ধরনের মাশরুম চাষ হয়। এগুলো হলো ঝিনুক, ঋষি,মিল্কি, বাটন, ইনকি ও পপ। শীতের সময় ঝিনুক ও বাটন ভালো উৎপাদন হয়। এসব মাশরুম রাজধানীর চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ও সেরাটন হোটেলসহ বিভিন্ন ফাইভ স্টার হোটেলে বিক্রি হচ্ছে। 

 

জাহাঙ্গীর বলেন, এছাড়া বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা খামার থেকে তা ক্রয় করে বিভিন্ন বিদেশে রপ্তানি করছে। আমার এ খামার থেকে উৎপাদিত মাশরুম বিক্রি করে মাসিক আয় হয় প্রায় লক্ষাধিক টাকা। বর্তমানে আমার খামারের জমিরমূল্যসহ এক কোটি টাকার উপরে বিনিয়োগ রয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আমাদের বিভিন্ন সময় পরামর্শ এবং সবধরনের সহযোগিতা করে থাকে। আমরা এখাতে কোনও ধরনে ব্যাংক ঋণ পাচ্ছি না। সহজ শর্তে তা পেলে আরো ব্যপকভাবে মাশরুম চাষ করা সম্ভব হতো।


কেরানীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল জানান, মাশরুম পুষ্টিকর ও সুস্বাদু সবজি ব্যপক জনপ্রিয় খাবার। এটি দেশের বিভিন্ন চাইনিজ রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যপক চাহিদা রয়েছে। বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য এবং দেশের মানুষের পুষ্টি দূর করতে সরকার আশির দশকে জাপানের সহায়তায় দেশে মাশরুম চাষ শুরু করে। এরপর থেকেই ধীরে ধীরে দেশে বাড়তে থাকে এর চাষ। বিশেষ করে সাভারে মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউট হওয়ার পর থেকে সেখানে দেশের যুবক-যুবতীরা বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে এ সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। 


তিনি বলেন, কেরানীগঞ্জে প্রায় ১৫টি স্থানে বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম চাষ হচ্ছে। আমরা এদের সবধরনের পরামর্শসহ সহযোগিতা করছি। কেউ তা চাষের উপর প্রশিক্ষণ নিতে চাইলে আমরা তাদের সাভারে মাশরুম উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে পাঠানো ব্যবস্থা করে দেই।

সাকসেস স্টোরি বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর