ঢাকা, ২৯ মার্চ শুক্রবার, ২০২৪ || ১৫ চৈত্র ১৪৩০
good-food
১৮১

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় করোনা আক্রান্ত, কী করবেন?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২৩:১৮ ১২ মে ২০২১  

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণের মতোই আতঙ্ক ছড়াচ্ছে দ্বিগুণ হারে। লাগামহীন সংক্রমণে বাদ পড়ছেন না অন্তঃসত্ত্বা নারীরাও! কীভাবে! বাড়িতে থাকলেও যেকোনও সময় তাঁরা সংক্রমিত হতে পারেন বলে ধারণা ডাক্তারদের। এর জন্য দায়ী বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা। মাস্ক না পরা, পরিস্কার, পরিচ্ছন্ন না থাকা- এসব কারণে উপসর্গহীন কোভিড পজিটিভ কারও থেকে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। 


পাশাপাশি ডাক্তার দেখানোর জন্য ঘন ঘন বাইরে বেরনো, চেম্বার বা হাসপাতালে যাওয়া-আসা করলেও কোভিড পজিটিভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন অবস্থায় অযথা দুশ্চিন্তা করতে নিষেধ করছেন ডাক্তাররা। মায়ের মতোই সন্তানের স্বাস্থ্যের কথা ভেবেই তারা পরামর্শ দিচ্ছেন করোনা আক্রান্ত হলে শরীরের মতোই মনেরও খেয়াল রাখুন।


এ প্রসঙ্গে ডাক্তার সৌম্যদীপ মুখার্জি জানালেন, প্রেগনেন্ট অবস্থায় কোভিড পজিটিভ ধরা পড়লে, বাকিরা যে ওষুধ খাচ্ছে, সেগুলো একেবারেই খাওয়া যাবে না। প্রেগনেন্ট নারীদের ক্ষেত্রে উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দেব। যদি সামান্য জ্বর, সর্দি-কাশি, গায়ে ব্যথা এগুলো থাকলে, নিজস্ব ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে ওষুধ খেয়ে বাড়িতেই থাকতে বলব। মারাত্মক শ্বাসকষ্ট হলে অক্সিজেন লেভেল ৯৪ এর নীচে নেমে গেলে তখন হাসপাতালে ভর্তি হতেই হবে। 


তিনি বলেন, তাছাড়া এ অবস্থায় যেহেতু মেয়েদের ইমিউনিটি কমে আসে, তার উপর কোভিড পজিটিভ ধরা পড়লে খাওয়া দাওয়ার প্রতি বিশেষ জোর দিতে হবে। আর যেটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, আক্রান্ত হলেও দুশ্চিন্তা করা চলবে না। মানসিক চাপ কমাতে গেলে শান্ত থাকতে হবে। 


সৌম্যদীপ মুখার্জি বলেন, অতিরিক্ত টেনশন করলে, স্ট্রেস নিলে বা প্যানিক করলে প্রি-টার্ম সন্তান জন্মায়। এতে সন্তানের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয় খুব। যে কারণে মা হওয়ার আগে শান্ত, ধীরস্থির থাকার পরামর্শ দেন ডাক্তাররা। পাশাপাশি ভ্যাকসিনও নিতে পারেন তাঁরা। এতে সাধারণত কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয় না।


ডাক্তার মালা দাস জানালেন, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় নারীদের শরীরের দেখভালের পাশাপাশি একনাগাড়ে কাউন্সিলিং করাতে হয় ডাক্তারদের। মন ভালো থাকলে শরীর আপনা থেকেই সুস্থ থাকবে। এই অবস্থায় সন্তানের কথা ভেবে মায়েরা একটু চিন্তা করেনই। আবার কোভিড পজিটিভ হলে, সন্তান পজিটিভ হবেন কি না সেই চিন্তাও মাথায় ঘুরপাক খায়। 


তিনি বলেন, সেক্ষেত্রে বলব, পেটে থাকা অবস্থায় সন্তানের পজিটিভ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তাই বাড়তি স্ট্রেস নেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। আর উপসর্গ নেই অথচ পজিটিভ ধরা পড়েছে, এক্ষেত্রে বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা করাতে বলব। ভিটামিন সি, জিঙ্ক, এগুলো তো খাবেনই। আর অসুস্থ হলেও বাড়িতে একটু পজিটিভ পরিবেশ রাখার চেষ্টা করবেন। 


মালা বলেন, খবর দেখা, সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় নষ্ট না করে গল্প করুন, গল্পের বই পড়ুন। সন্তানের স্বাস্থ্য অনেকটাই নির্ভর করে, মায়েরা অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কীভাবে থাকেন তার উপর। সেটা মাথায় রাখবেন সবসময়। আর সন্তানের জন্ম নেওয়ার পর বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করলে চলবে না।

অন্যদিকে ডাক্তার প্রকাশ দাসের মতে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ-এ এক মাসের শিশুও কোভিড পজিটিভ ধরা পড়েছে। এবারে কেউই বাদ পড়ছে না। মিউট্যান্টের কারণে নতুন নতুন উপসর্গ। যে উপসর্গগুলো দেখা দিলে করোনা হতে পারে এ ধারণাও মাথায় আসে না। এ সময় বাড়িতেই থাকেন অন্তঃসত্ত্বা মহিলারা। তাই কোভিড পজিটিভ হলে বাড়ির কারও থেকেই হয়েছে বলে ধরে নিতে হবে। 


তিনি বলেন, রিপোর্ট পজিটিভ এলে শুরুতেই ভেঙে পড়লে চলবে না। মাথায় রাখতে হবে সন্তানের স্বাস্থ্যের কথা। তাই শান্ত থাকবে হবে। ঠিকমতো খেতে হবে। ডেলিভারির সময় এগিয়ে এলে ডাক্তারদের সঙ্গে পরামর্শ নিতে হবে। করোনা মানুষকে এমনিতেও দুর্বল করে দেয়। 


প্রকাশ বলেন, তাই নিজেকে ঠিক সুস্থ সবল রাখাটা ভীষণ জরুরি এ সময়। চিকিৎসকের উপর ভরসা রেখে সব নিয়ম মেনে চললেই সুস্থ হয়ে উঠবেন সকলে। তাই অকারণে টেনশন করে স্ট্রেস নিতে বারণ করব তাঁদের।
 

করোনাভাইরাস বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর