ঢাকা, ২৭ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪ || ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
১০০

পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে আবারও মুখোমুখি আওয়ামী লীগ-বিএনপি

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৪:১৩ ২৬ জানুয়ারি ২০২৪  

শনিবার (২৭ জানুয়ারি) রাজধানীতে শান্তি সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। দলীয় এক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছে, রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে’ এ সমাবেশ হবে।

 

বিএনপি এর আগে গত রোববার (২১ জানুয়ারি) পরপর দুই দিনের ‘কালো পতাকা মিছিল’ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। সে অনুযায়ী দলটি শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) জেলায় জেলায় এবং পরদিন শনিবার (২৭ জানুয়ারি) মহানগরগুলোয় ‘কালো পতাকা’ মিছিলের কর্মসূচি পালন করবে।

 

রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির সঙ্গে আন্দোলনে থাকা দল ও জোটগুলোও ওই দিন একই কর্মসূচি পালন করবে। এই দুই দলের কর্মসূচি ঘিরে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে রাজনৈতিক মাঠ। তাই প্রশ্ন উঠছে, আবারও কি সংঘাত-সহিংসতার পথে হাঁটছে রাজনীতি? এ নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে নতুন সমীকরণ। এসব নিয়ে কী ভাবছেন প্রধান দুই দলের নেতারা?

 

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক গণমাধ্যমে বলেছেন, আমরা তো আমাদের এক দফা থেকে এখনও একচুল সরে আসিনি। সরকার রাষ্ট্রীয় যন্ত্র ব্যবহার করে গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমাতে চায়। সেজন্য বিএনপি এখন তার কৌশল ঠিক করছে। অতীতের কৌশলও ব্যর্থ হয়নি, পরাজিত হয়েছে সরকারের রাষ্ট্রীয় যন্ত্রের কাছে। আমি মনে করি, আগামীতে রাজনীতি উত্তপ্ত হবে এবং উত্তপ্ত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

 

এ নেতার দাবি, আওয়ামী লীগ মানুষের ভোটাধিকার হরণ করছে, কেড়ে নিয়েছে গণতান্ত্রিক অধিকার। তাই অধিকার আদায়ে লড়াই চলবে। তিনি বলেন, আমাদের এক দফা এখনও আছে। যেকোনো তালবাহানা তারা করুক না কেনো, জনগণ ও নেতাকর্মীরা সংগঠিত হচ্ছে। ধীরে ধীরে আমরা মামলা-হামলা থেকে বের হয়ে আসছি। খুব দ্রুতই আবার কঠোর আন্দোলনে নামবো। ভোটের অধিকার ফিরিয়েই ঘরে ফিরবো।

 

তবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বিভিন্ন গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, শুধুমাত্র দায়সারা কর্মসূচি দিয়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি তাদের দেউলিয়াত্ব অথবা অন্তঃসারশূন্যতা প্রমাণ করছে। দেশবাসী সেটি নিশ্চয় মূল্যায়ন করবে।

 

তার দাবি, আওয়ামী লীগ ভোটাধিকার নিশ্চিত করেছে এবং সাংবিধানিক ধারা সমুন্নত রেখেছে। তাই বিশৃঙ্খলা করলে রাজপথে সমুচিত জবাব দেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তা দেখবে। তবে রাজনৈতিক সহিংসতার জবাব রাজপথেই দেয়া হবে। দেশের সম্পদ রক্ষায় কোনো ছাড় দেয়া হবে না।

 

বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, শান্তি সমাবেশের নামে অশান্তি সৃষ্টিই করাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের লক্ষ্য। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশের নামে অশান্তি সৃষ্টি করছে। ইতোপূর্বেও তারা করেছে। তারা এই অশান্তির সমাবেশ করে বিএনপির কর্মসূচি প্রতিহত করতে পারবে না। আমাদের যে কর্মসূচি সেটি আমরা পালন করছি। দাবি আদায়ের যে সংগ্রাম সেটি চলছে এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত চলবে।

 

বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবী আবদুন নূর দুলাল বলেন, আওয়ামী লীগ এত দেউলিয়া হয়নি যে বিএনপিকে অনুসরণ করবে। আমরা আমাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি দিই, সেটি তাদের সাথে মিলে যেতেই পারে।

 

বিশ্লেষকদের মত, সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশে সৃষ্ট রাজনৈতিক সংকটের স্থায়ী সমাধান হওয়া জরুরি। সংঘাত-হানাহানি পরিহারে দেশের বড় দুই দলকেই নমনীয় হওয়ার পরামর্শ তাদের।

 

প্রসঙ্গত, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে জয় পেয়ে টানা চতুর্থ দফায় সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। ওই নির্বাচনে বিএনপিসহ অনেক রাজনৈতিক দল অংশ নেয়নি। নির্বাচনের পর ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে বিজয়ের পর সেটিই ছিল প্রথম প্রকাশ্য সমাবেশ। এরপর ২৭ জানুয়ারির সমাবেশের ঘোষণা এল।