পালকি প্রায় বিলুপ্ত
লাইফ টিভি 24
প্রকাশিত: ১৯:৫৮ ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯
পালকি মানুষ বহনের একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বাহন। এতে ১ বা ২ জন যাত্রী নিয়ে ২, ৪ বা ৮ জন বাহক কাঁধে তুলে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেত। পালকি শব্দটি সংস্কৃত ‘পল্যঙ্ক’ বা ‘পর্যঙ্ক’ থেকে উদ্ভূত। পালি ভাষায় এই যানের নাম ‘পালাঙ্কো’। হিন্দি ও বাংলায় এটি পালকি নামেই পরিচিত। অনেক জায়গায় এ যানকে ডুলি, শিবিকা প্রভৃতিও বলা হয়। পর্তুগিজরা এর নাম দেয় পালাঙ্কুয়নি।
রামায়ণে পালকির উল্লেখ রয়েছে। বিখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতা এবং চতুর্দশ শতকের পর্যটক জন ম্যাগনোলি ভ্রমণের সময় এটি ব্যবহার করতেন। সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে এবং পরবর্তী সময়ে সেনাধ্যক্ষদের যাতায়াতের অন্যতম বাহন ছিল এটি। আধুনিক যানবাহন আবিষ্কৃত হওয়ার আগে অভিজাত শ্রেণির লোকেরা এতে চড়েই যাতায়াত করতেন। বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে বিয়েতে ও অন্যান্য শুভ অনুষ্ঠানে বর-কনের জন্য পালকি ব্যবহারের প্রথা চালু ছিল। এছাড়া অসুস্থ’ রোগীকে চিকিৎসালয়ে নেয়া আনার জন্যও এটি ব্যবহৃত হতো।
পালকি বিভিন্ন আকৃতি ও ডিজাইনের হয়ে থাকে। সবচেয়ে ছোট ও সাধারণ পালকি (ডুলি) দুজনে বহন করে। সবচেয়ে বড় পালকি বহন করে চার থেকে আটজন বাহক। বাহকদের বলা হয় বেহারা বা কাহার। হাডি, মাল, দুলে, বাগদি, বাউডি প্রভৃতি সম্প্রদায়ের লোক এটি বহন করে। এরা দিনমজুরের কাজ এবং মাছের ব্যবসাও করে। বেহারারা পালকি বহন করার সময় নির্দিষ্ট ছন্দে পা ফেলে চলে। এ রীতি তারা বয়স্কদের কাছ থেকে শেখে। বহনের সময় তারা বিশেষ ছন্দে গানও গায়। তাদের চলার গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে গানের তাল-লয় পরিবর্তিত হয়।
কাঠমিস্ত্রীরা সেগুন কাঠ, শিমুল কাঠ, গান কাঠ প্রভৃতি দিয়ে পালকি তৈরি করে। বটগাছের বড় ঝুরি দিয়ে তৈরি হয় বাঁট বা বহন করার দন্ড। পালকি সচরাচর তিন ধরনের হয়ে থাকে যেমন সাধারণ, আয়না ও ময়ূরপঙ্খি। সাধারণ পালকি আয়তাকার। চারদিক কাঠ দিয়ে আবৃত এবং ছাদ ঢালু। এর দুদিকে দুটি দরজা থাকে। কোনো কোনোটিতে জানালাও থাকে।
পালকির বাইরের দিকে আলপনা আঁকা থাকে। আয়না পালকিতে আয়না লাগানো থাকে। ভিতরে চেয়ারের মতো দুটি আসন ও একটি টেবিল থাকে। ময়ূরপঙ্খি পালকির আয়তন সবচেয়ে বড়। এটি ময়ূরের আকৃতিতে তৈরি করা হয়। ভিতরে দুটি চেয়ার, একটি টেবিল ও তাক থাকে। এর বাঁটটি বাঁকানো। বাইরের দিকে কাঠের তৈরি পাখি, পুতুল ও লতাপাতার নকঁশা থাকে।
বাংলায় সতেরো ও আঠারো শতকে ইউরোপীয় বণিকরা হাটে-বাজারে যাতায়াত এবং মালপত্র বহনের জন্য পালকি ব্যবহার করত। তারা এর ব্যবহারে এতটাই অভ্যস্ত হয়ে পড়ে যে, কোম্পানির একজন স্বল্প বেতনের সাধারণ কর্মচারিও এদেশে যাতায়াতের জন্য একটি পালকি রাখত এবং ব্যয়ভার বহন করত। কিন্তু ব্যয় বহন করতে গিয়ে কর্মচারিরা অবৈধ আয়ের নানাবিধ পন্থা অবলম্বন করতে থাকে। ফলে কোর্ট অব ডিরেক্টরস ১৭৫৮ খ্রিস্টাব্দে সাধারণ কর্মচারিদের পালকি ক্রয় ও ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
বস্তুত, ওই যুগের পালকি ছিল এখনকার মোটরগাড়ি অনুরূপ। স্টিমার ও রেলগাড়ি আবির্ভাবের পূর্বে ভারতের গভর্নর জেনারেলও পালকিতে চড়ে যাতায়াত করতেন। ঊনিশ শতকের প্রথমদিকে ডাক ও যাত্রী বহনের জন্য ডাকবিভাগ ‘স্টেজ পালকি’ চালু করে। এ প্রথা ঊনিশ শতকের শেষ নাগাদ প্রচলিত ছিল। দূরের যাত্রীরা ডাকঘর থেকে স্টেজ পালকির টিকেট ক্রয় করত। ঊনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ইংরেজরা পালকিতে চড়া প্রায় বন্ধ করে দেয়। তবে ওই শতকের শেষাবধি স্থানীয় বাবু এবং অভিজাত শ্রেণির ব্যক্তিবর্গ যাতায়াতের জন্য পালকিই ব্যবহার করতেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদহ অবস্থানকালে নিজের জমিদারি কাচারি পরিদর্শনের সময় যে পালকি ব্যবহার করতেন, তা এখনও কুঠিবাড়িতে সংরক্ষিত রয়েছে। সেই যুগে সচ্ছল পরিবারের নিজস্ব পালকি থাকত। সাধারণ মানুষ তা ভাড়া করত। ঊনিশ শতকের চতুর্থ দশকে দাসপ্রথা বিলোপের পর বিহার, উড়িষ্যা, ছোটনাগপুর এবং মধ্যপ্রদেশ থেকে পালকি বাহকরা বাংলায় আসতে থাকে। বহু সাঁওতাল বাহকের কাজ নেয়। শুষ্ক মৌসুমে তারা নিজেদের এলাকা থেকে এদেশে আসত এবং বর্ষা মৌসুমে আবার চলে যেত। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমের শেষে তারা নির্দিষ্ট কয়েকটি এলাকায় যেত এবং কোথাও কোথাও অস্থায়ী কুঁড়েঘর বানিয়ে সাময়িক আবাসের ব্যবস্থা করে নিত।
ঊনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে স্টিমার ও রেলগাড়ি চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পালকির ব্যবহার কমতে থাকে। ক্রমশ সড়ক ব্যবস্থার উন্নতি এবং পশুচালিত যান চালু হলে যাতায়াতের বাহন হিসেবে পালকির ব্যবহার প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৩০-এর দশকে শহরাঞ্চলে রিকশার প্রচলন হওয়ার পর থেকে পালকির ব্যবহার উঠে যায়। যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্রমাগত প্রসার, সড়ক ও নদীপথে মোটর ও অন্যান্য যানের চলাচল এবং প্যাডেল চালিত রিকশা জনপ্রিয় হয়। ফলে পালকির ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে এটি বাংলাদেশের অতীত ঐতিহ্য নিদর্শন হিসেবেই পরিচিত।
- সেনা কর্মকর্তাদের ভার্চ্যুয়ালি হাজিরার আবেদন খারিজ
- শীতে লেপ-কম্বলের যত্ন নেবেন যেভাবে
- প্রতি মুহূর্তে অমিতাভের প্রেমে পড়েন জয়া
- ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরিতে কোহলির ‘৫৩’
- সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতেই হবে: ইসি সানাউল্লাহ
- সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতেই হবে: ইসি সানাউল্লাহ
- নভেম্বরে বাজারে এসেছে যেসব নতুন বাইক
- শীতে মাফলার যেভাবে পরবেন
- খুনির সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি নিলয় আলমগীরের
- ফের বাড়ল এলপিজির দাম
- চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন বেগম খালেদা জিয়া
- আইপিএল নিলামে সর্বোচ্চ ভিত্তিমূল্যে মুস্তাফিজ
- এবার অ্যান্ড্রয়েড থেকেই সরাসরি তথ্য যাবে অ্যাপলে
- পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা চলছে: নাহিদ
- আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে প্রার্থিতা বাতিল: ইসি আনোয়ারুল
- শীতে বাড়তি শক্তি দেবে এই ১০ সুপার ফুড
- শাকিব খানের যে কথা মেনে চলেন অপু বিশ্বাস
- মেসিকে বিরতি নিতে বললেন ম্যারাডোনার প্রশিক্ষক
- ঘি কি কোলেস্টেরল বাড়ায়?
- ‘আপনার অপেক্ষায় এই হতভাগা জাতি’
- বিপিএল নিলামে কোটিপতি নাঈম শেখ, ৭০ লাখ পেলেন লিটন
- গণভোট আয়োজনে ভোটকক্ষে গোপন বুথ বাড়ানো হবে: ইসি সচিব
- ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’ পেলো চূড়ান্ত অনুমোদন
- বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘দিটওয়া’: চার বন্দরে ২ নম্বর সংকেত
- বিপিএল পিছিয়ে যাচ্ছে কেন?
- সৃজিতের ঘরে এবার মিমি
- আপনার বিছানা কতটা পরিচ্ছন্ন?
- খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা
- যেভাবে ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানিকারকদের কাঁদাচ্ছে বাংলাদেশ
- অন্তর্বর্তী সরকারের অনেকেই নির্বাচন করবেন: আসিফ মাহমুদ
- বিপিএলে কোন ক্যাটাগরিতে কত টাকা পাবেন ক্রিকেটাররা
- একবার ফোন চার্জ দিতে কত টাকা খরচ হয়?
- খালি পেটে ব্যায়াম কতটা কার্যকর?
- বিপিএলের চূড়ান্ত তালিকায় বড় চমক, মুশফিক-লিটনদের ভিত্তিমূল্য কত
- শীতে বাড়তি শক্তি দেবে এই ১০ সুপার ফুড
- ঘি কি কোলেস্টেরল বাড়ায়?
- আবার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদী,`আফটার শক` বলছেন আবহাওয়াবিদরা
- ‘পরকীয়া’সহ স্বামীর বিরুদ্ধে যত বিস্ফোরক অভিযোগ সেলিনার
- বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘দিটওয়া’: চার বন্দরে ২ নম্বর সংকেত
- সৃজিতের ঘরে এবার মিমি
- বিপিএল পিছিয়ে যাচ্ছে কেন?
- হাসিনা, জয় ও পুতুলসহ ২২ জনের সশ্রম কারাদণ্ড ও জরিমানা
- অন্তর্বর্তী সরকারের অনেকেই নির্বাচন করবেন: আসিফ মাহমুদ
- আপনার বিছানা কতটা পরিচ্ছন্ন?
- শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি কীভাবে বুঝবেন?
- বিপিএল নিলামে কোটিপতি নাঈম শেখ, ৭০ লাখ পেলেন লিটন
- কবে বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন দেব-রুক্মিণী?
- ডেঙ্গুতে মৃত্যু বেড়ে ৩৭০, হাসপাতালে ভর্তি ছাড়াল ৯২ হাজার
- যেভাবে ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানিকারকদের কাঁদাচ্ছে বাংলাদেশ
- ‘আপনার অপেক্ষায় এই হতভাগা জাতি’

