ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ১২ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
২৭২

যাত্রী অর্ধেক, আন্ত:জেলা বাস প্রয়োজনে বন্ধ

জানুন ১৮ নির্দেশনা

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:৫৭ ২৯ মার্চ ২০২১  

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। এমন পরিস্থিতিতে সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়সহ সব ক্ষেত্রে সব ধরনের জনসমাগম সীমিত করাসহ ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করেছে সরকার।

 

সোমবার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউসের স্বাক্ষরে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে।  

 

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এসব নির্দেশনা অবিলম্বে সারাদেশে কার্যকর হবে এবং আপাতত অন্তত দুই সপ্তাহ বলবৎ থাকবে।

 

যেসব এলাকা সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে, সেসব জায়গায় আন্তঃজেলা যান চলাচল সীমিত করা, প্রয়োজনে বন্ধ রাখার কথা বলা হযেছে নতুন নির্দেশনায়।

 

বিনোদন ও পর্যটনকেন্দ্রে জনসমাগম সীমিত করার পাশাপাশি মেলা বা সামাজিক অনুষ্ঠানে নিরুৎসাহিত করতে বলা হয়েছে।

 

স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় এতদিন বন্ধই ছিল, তার সঙ্গে মাদ্রাসাও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

 

গণপরিবহন এবং হোটেল-রেস্তোরাঁয় মানুষের সংখ্যা আসন সংখ্যার অর্ধেকের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। আর বিদেশ থেকে আসা সবার ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

 

১৮ দফা : 

ক.  সব ধরনের জনসমাগম (সামাজিক/রাজনৈতিক/ধর্মীয়/অন্যান্য) সীমিত করতে হবে। উচ্চ সংক্রমণের এলাকায় সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ থাকবে। বিয়ে/জন্মদিনসহ যে কোনো সামাজিক অনুষ্ঠান উপলক্ষে জনসমাগম নিরুৎসাহিত করতে হবে

 

খ.  মসজিদসহ সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে

 

গ.  পর্যটন/বিনোদন কেন্দ্র/সিনেমা হল/থিয়েটার হলে জনসমাগম সীমিত করতে হবে এবং সব ধরনের মেলা আয়োজন নিরুৎসাহিত করতে হবে


ঘ.  গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং ধারণ ক্ষমতার ৫০ শতাংশের বেশি যাত্রী পরিবহন করা যাবে না

 

ঙ.  সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকির এলাকায় আন্তঃজেলা যান চলাচল সীমিত করতে হবে; প্রয়োজনে বন্ধ রাখতে হবে

 

চ.  বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক (হোটেলে নিজ খরচে) কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে

 

ছ.  নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য খোলা/উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনা-বেচার ব্যবস্থা করতে হবে, ওষুধের দোকানেও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে

 

জ.  স্বাস্থ্যসেবার প্রতিষ্ঠানগুলোতে মাস্ক পরাসহ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে\

 

ঝ.  শপিং মলে ক্রেতা-বিক্রেতা সবাইর যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে

 

ঞ.  সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাদ্রাসা, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়) ও কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে

 

ট.  অপ্রয়োজনীয় ঘোরাফেরা/আড্ডা বন্ধ করতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাত ১০টার পর বাইরে বের হওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে

 

ঠ.  প্রয়োজনে বাইরে গেলে মাস্ক পরাসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে। মাস্ক না পরলে কিংবা স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে


ড.  করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বা লক্ষণযুক্ত ব্যক্তির আইসোলেশন নিশ্চিত করতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা অন্যদেরও কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে

 

ঢ.  জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস/প্রতিষ্ঠান/ শিল্প কারখানায় পরিচালনা করতে হবে অর্ধেক জনবল দিয়ে। গর্ভবতী/ অসুস্থ/ ৫৫ বছরের বেশি বয়সী কর্মীদের বাড়িতে থেকে কাজের ব্যবস্থা করতে হবে

 

ণ.  সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ কর্মশালা যথাসম্ভব অনলাইনে আয়োজনের ব্যবস্থা করতে হবে

 

ত.  সশরীরে উপস্থিত হতে হয় - এমন যে কোনো ধরনের গণপরীক্ষার ক্ষেত্রে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে

 

থ.  হোটেল-রেঁস্তোরায় ৫০ শতাংশ আসনের বেশি মানুষ বসানো যাবে না

 

দ.  কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ এবং অবস্থানকালে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে

 

১৮ দফা নির্দেশনায় ফের গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।  আর এ কারণে বর্তমান ভাড়ার ৬০ ভাগ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।

 

সোমবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর মহাখালীর সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের প্রধান কার্যালয়ে জরুরি বৈঠকে ভাড়া বাড়ানোর এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার সংবাদমাধ্যমকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।

 

তিনি জানিয়েছেন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ পেলেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
 

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে। গত ৩০ নভেম্বরের পর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত সংক্রমণ ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে।

 

কিন্তু মার্চের শুরু থেকে দৈনিক শনাক্ত রোগী, মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। গত এক দিনে ৫ হাজার ১৮১ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা মহামারী শুরুর পর থেকে সর্বোচ্চ।

 

তাতে দেশে শনাক্ত মোট রোগীর সংখ্যা ৬ লাখ ছাড়িয়ে গেছে; মৃত্যু হয়েছে মোট ৮ হাজার ৯৪৯ জনের।

করোনাভাইরাস বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর