ঢাকা, ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ১৪ চৈত্র ১৪৩০
good-food
১২৬০

মর্গের সামনে বাবার লাশের অপেক্ষায় জমজ সন্তান

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৮:৪২ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

স্ত্রী ও ফুটফুটে যমজ সন্তান নিয়ে সংসার কাওসারের। আছেন মা, বাবা, ভাইসহ আত্মীয়স্বজন। সবাইকে রেখেই ফেরার দেশে চলেই গেলেন তিনি। জীবিত না পাওয়ার আশা ছেড়ে তার লাশের খোঁজে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) মর্গের সামনে ছুটে বেড়াচ্ছেন প্রিয়জনেরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিবিএ চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মোহাম্মদ কাওসার আহমেদ। শিক্ষার্থী হিসেবে খুবই মেধাবী ছিলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় হন ১৭তম। নিয়মিত পড়াশোনা করতেন। পাশাপাশি চকবাজারে মদিনা মেডিকেল হল ক্লিনিক চালাতেন। ঘটনার দিন ওই ক্লিনিকেই ছিলেন।

কাওসারের ভাই ইলিয়াস জেনেছেন, ভয়াবহ ওই অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে কাওসারসহ অন্তত পাঁচজন মারা গেছেন। মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, সে নেই জানি। লাশ মর্গে আছে। তবে দেখতে পাচ্ছি না। খুঁজে বেড়াচ্ছি।

ঘটনার খবর শুনেই মর্গে ছুটে আসেন কাওসারের দুই ভাই, মা ও স্ত্রী মুক্তা। তাদের কোলে রয়েছে ছোট্ট দুই শিশু। তারা যমজ ছেলে-মেয়ে। নাম আবদুল্লাহ ও মেহজাবীন। স্বজনেরা ওদের মুখের দিকে তাকাতে পারছেন না। অবিরাম চোখ বেয়ে ঝরছে পানি। বিলাপ করছেন মা। কী বোঝাবেন দুই অবোধ শিশুকে?

দন্ত চিকিৎসক ইলিয়াস বলেন, আমি, ইয়ামীন, ফয়সাল, কাওসার-আমরা চার ভাই। কাওসার মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। পরে ঢাবিতে ভর্তি হয়। অংশীদারিত্বে ক্লিনিকের ব্যবসা শুরু করে। আমাদের বাবার নাম খলিলুর রহমান। বাড়ি কুমিল্লায়। সবাই চকবাজারে থাকতাম।

তিনি জানান, আগুনের সময় ক্লিনিকের ভবনের গেট বন্ধ ছিল। খোলা থাকলে হয়তো ভাইকে পেতাম। কাওসারের সঙ্গে ছিলেন তিন দাঁতের চিকিৎসক ও এক রোগী।

কাওসারের স্বজনদের মতো শত শত মানুষের বিলাপ ও কান্নায় ভারী হয়ে গেছে ঢামেকের মর্গ। স্বজন হারানোর বেদনা নিয়েও লাশগুলো দ্রুত চাইছেন তারা।