ঢাকা, ১৭ মে শুক্রবার, ২০২৪ || ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
good-food
২৫৮

সরকারি খরচে বিদেশ ভ্রমণ ও গাড়ি কেনা বন্ধ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৫:০৫ ৩ জুলাই ২০২৩  

সরকারি খরচে রাষ্ট্রায়ত্ত সব সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সব ধরনের গাড়ি, উড়োজাহাজ/হেলিকপ্টার ও নৌযান কেনা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ রোববার এ বিষয়ে পরিপত্র জারি করেছে।

 

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা এবং দেশে ডলার সংকটের কারণে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের ওপর চাপ কমানোর পরিকল্পনা করছে সরকার। এর অংশ হিসেবে ফের নিজ নিজ সংস্থার ব্যয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত সব সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হলো। তবে অন্য কোনো দেশের সরকার, সংস্থা বা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নে মাস্টার্স, পিএইচডি ও পেশাগত প্রশিক্ষণে বিদেশে যাওয়া যাবে।

 

অর্থ বিভাগের উপসচিব মো. আনিসুজ্জামান স্বাক্ষরিত পরিপত্রে বলা হয়েছে, বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে সরকারের পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং এসবের আওতাধীন অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, পাবলিক সেক্টর করপোরেশন এবং রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলোর সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সব ধরনের বিদেশ ভ্রমণ/ওয়ার্কশপ/সেমিনারে অংশগ্রহণ পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

 

স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, পাবলিক সেক্টর করপোরেশন এবং রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানির নিজস্ব অর্থায়নেও সব বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ থাকবে। তবে বৈদেশিক সরকার/প্রতিষ্ঠান/উন্নয়ন সহযোগী/বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ অর্থায়নে প্রদত্ত স্কলারশিপ/ ফেলোশিপের আওতাধীন মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়ন এবং বৈদেশিক সরকার/প্রতিষ্ঠান/উন্নয়ন সহযোগীর আমন্ত্রণে ও সম্পূর্ণ অর্থায়নে আয়োজিত বিশেষায়িত/ পেশাগত প্রশিক্ষণ/সেমিনারে অংশ নেয়া যাবে।

 

এছাড়া সরবরাহকারী/ঠিকাদার/পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন কর্মকর্তারা গুণগত মান নিরীক্ষা করতে বিদেশে যেতে পারবেন। পরিপত্রে বলা হয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দের ৭৫ শতাংশ খরচ করা যাবে। আর গ্যাস ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দের ৮০ শতাংশ খরচ করা যাবে। অর্থাৎ বিদ্যুৎ-জ্বালানি দুই খাতেই ২০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত খরচ বাঁচাতে বলা হয়েছে।

 

 

নতুন করে গাড়ি, নৌযান বা উড়োজাহাজ-হেলিকপ্টার কেনা বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্রে বলা হয়, সব ধরনের মোটরযান, জলযান ও আকাশযান খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় বন্ধ থাকবে। তবে ১০ বছরের বেশি পুরনো মোটরযান প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের অনুমোদনক্রমে ব্যয় নির্বাহ করা যাবে।

 

এছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ভূমি অধিগ্রহণ খাতে যে ব্যয় হয়, এই অর্থবছরে বরাদ্দ সেই অর্থ খরচও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে পরিপত্রে। অর্থ বিভাগের তরফ থেকে বলা হয়, ওপরের খাতের বরাদ্দকৃত অর্থ অন্য কোনো খাতে এবং অন্য কোনো খাত থেকে এসব খাতে পুনঃ উপযোজন করা যাবে না।

 

এর আগে করোনা মহামারি-পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের সময় রাষ্ট্রীয় খরচে বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল সরকার। ২০২২ সালের ১২ মে থেকে জারি করা এক নির্দেশনায় অর্থ মন্ত্রণালয় সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সব সংস্থাসহ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়।

 

পরে ২০২২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর শর্তসাপেক্ষে তা শিথিল করে সরকার। সরকারি কর্মকর্তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির কার্যক্রম অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেয়া হয় বলে সে সময় জানিয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। এরপর ২০২২ সালের নভেম্বরে আবার নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয় সরকারের তরফ থেকে।