ঢাকা, ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ১৪ চৈত্র ১৪৩০
good-food
১৩৪৭

হরেক রকম মাছের মেলা

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:০৯ ১৭ নভেম্বর ২০২০  

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় চলছে নবান্ন উৎসব উপলক্ষে মাছের মেলা। মূলত এটা জামাইদের নিয়ে মেলা। দিনটিকে ঘিরে এখানে দিনব্যাপী চলে মাছ কেনা-বেচার উৎসব। এ দিনের জন্য পুরো বছর অপেক্ষায় থাকেন উপজেলাবাসী।

প্রায় ১০০ বছর আগে থেকে চলে আসা এ মেলায় নদী, দীঘি ও পুকুরে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠা দেশীয় প্রজাতির টাটকা মাছ কিনতে ক্রেতা ও পাইকাররা ভিড় জমায়। অগ্রহায়ণে মাঠ থেকে নতুন ফসল কৃষকদের ঘরে উঠলেই নবান্ন উৎসবের আয়োজন করেন উপজেলার সব কৃষক। 

এই অনুষ্ঠান পালন করতে আসেন জেলা ও উপজেলার জামাই-মেয়ে ও বেয়াই-বেয়াইনসহ আত্মীয়-স্বজনরা। এজন্য উপজেলার পাঁচশিরা বাজারে বসে মাছের মেলা। সেখানে প্রতিটি দোকানে সাজানো হয় বোয়াল, রুই, মৃগেল, কাতলা, চিতল, সিলভার কার্প, পাঙ্গাস, ব্রিগেট,বাঘাআইরসহ নানা ধরনের মাছ। সর্বোচ্চ ১৪ কেজি ওজনের মাছ বিক্রি হয়েছে।

পঞ্জিকা অনুসারে মঙ্গলবার পহেলা অগ্রহায়ণ। এ মাসের প্রথম তারিখে নতুন ধান কাটার পর সেটি থেকে প্রস্তত চালের প্রথমবার রান্না দিয়ে শুরু হয় নবান্ন উৎসব। প্রতিবছর অগ্রহায়ণে আমন ধান কাটার পর নবান্ন উৎসব আয়োজন করেন উপজেলার সকল কৃষক। নিজেদের জামাই-মেয়ে, বেয়াই-বেয়াইন এবং আত্মীয়-স্বজনদের আমন্ত্রণ করেন এ নবান্ন উৎসবে। তাদের আমন্ত্রণে ওই অনুষ্ঠান পালন করতে যোগ দিতে আসেন সবাই। 

এ দিন যেন হয় গ্রামীণ জনপদে উৎসবের আমেজ। কৃষকদের ঘরে ঘরে শুরু হয় নতুন চালের নবান্ন এবং চলে পিঠা-পুলি,পায়েস, ক্ষীর, খই ও মুড়ি। দিনটিতে কৃষকদের ঘরে হয় যেন এক মিলনমেলা। এ উপলক্ষে জেলার সর্ববৃহৎ মাছের মেলা বসে পাঁচশিরা বাজারে। 

এ এলাকার মাছ ব্যবসায়ীরা আগের দিন থেকেই বাজারে নিজেদের আড়ৎ ঘরে জেলা-উপজেলার বিভিন্ন দীঘি, পুকুর, নদী থেকে নানা জাতের বড় বড় মাছ সংগ্রহ করেন। এ উপলক্ষে এই দিনে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণীর পেশাজীবি মানুষেরা উচ্চমূল্যে ওই সব মাছ ক্রয় করেন। 

এবার মাছের মেলাতে বোয়াল, রুই, মৃগেল, কাতলা, চিতল, সিলভার কার্প, পাঙ্গাস, ব্রিগেট, বাঘাআইরসহ ৫ কেজি থেকে ১৪ কেজি ওজনের মাছের সমাগম হয়েছে। মেলায় মাছ বিক্রি করতে আসা ব্যবসায়ী মো.সাইফুল ও আব্দুল লতিফ বলেন, এজন্য বিভিন্ন পুকুর, দীঘি ও নদী থেকে বিভিন্ন জাতের বড় বড় মাছ সংগ্রহ করা হয়। কাতলা, রুই, মৃগেল ৭শ থেকে ৮শ টাকা কেজিতে এবং বাঘাআইর, বোয়াল ও চিতল মাছ হাজার থেকে ১২শ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। তবে মাঝারি আকারের মাছ ৪৫০ টাকা থেকে ৫শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া ২৫০ টাকা দরে ব্রিগেট ও সিলভার কার্প বিক্রি হচ্ছে।

মেলায় মাছ কিনতে আসা মুনীশ, বোলু ও জলিল বলেন, অন্য বছরের চেয়ে এবার মাছের দাম একটু বেশী। মেয়ে-জামাইয়ের জন্য কাতলা, ব্রিগেট ও রুই মাছ কেনা হয়েছে।
 

বাংলাদেশকে জানো বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর