ঢাকা, ১৫ ডিসেম্বর রোববার, ২০২৪ || ৩০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১
good-food
২৬৩১

ঘুরে আসুন ছোট সোনামসজিদ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২০:৫৯ ২৮ জানুয়ারি ২০১৯  

কাজের চাপে নাকাল হয়ে অনেকেই ছুটে যেতে চান শহর থেকে দূর-দূরান্তে। ক্লান্তি কাটাতে, পরিশ্রান্ত মনটা সতেজ করতে ঘুরে আসতে পারেন উত্তরবঙ্গের সীমান্তঘেঁষা সবুজ-শ্যামলে ঘেরা আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহাসিক স্থান ছোট সোনামসজিদ। স্থাপত্যশিল্পটি নিমিষেই আপনার চোখ জুড়িয়ে দেবে। এক ঢিলে দুই পাখিও মেরে আসতে পারেন। দেখে আসতে পারেন নয়নাভিরাম স্থাপনাটির নিকটবর্তী তোহাখানা, দারসবাড়ি মসজিদ, মাদ্রাসা ও ষাঁড় বুরুজ।

দৃষ্টি জুড়ানো প্রকৃতির সঙ্গে ইতিহাসের অনন্য কীর্তি যাদের আকর্ষণ করে, তাদের জন্য ছোট সোনামসজিদ ঘুরে দেখা গুরুত্বপূর্ণ। নিরিবিলি প্রকৃতির সান্নিধ্যে সীমান্তবর্তী এ অঞ্চল বাংলার প্রাচীন জনপদ গৌড়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল। সেন বংশের রাজাদের খনন করা দীঘি আর সুলতানি আমলের মুসলিম শাসকদের স্থাপিত মসজিদ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন স্থাপনা অঞ্চলটিকে দিয়েছে ঐতিহাসিক সমৃদ্ধি।

সেসঙ্গে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত বেশ কয়েকটি স্থাপনা ইতিহাসের পুনর্পাঠ হিসেবে দেখা যাবে। দূর অতীতে স্থানটি আলোকিত এবং ঐতিহ্যে লালিত ধনজনে পূর্ণ ও সমৃদ্ধশালী ছিল। ঢাকা থেকে ৩১৭ কিলোমিটার এবং বিভাগীয় শহর রাজশাহী থেকে দূরত্ব মাত্র ৮২ কিলোমিটার।

ছোট সোনামসজিদ

জেলাজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় নানা পুরাকীর্তির নিদর্শনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ গৌড়ের ঐতিহাসিক ছোট সোনামসজিদ। মুসলিম স্থাপত্যশিল্পের এক অপূর্ব নিদর্শন। মসজিদের চারকোণে চারটি অষ্টকোনাকৃতির মিনার বা টারেট। ওপরে ১২টি অর্ধগোলাকৃতির ও তিনটি চৌচালা আকৃতির মোট ১৫টি গম্বুজ আছে। গম্বুজগুলোতে একসময় সোনার পিণ্ড ছিল বলে মসজিদের নামকরণ করা হয়েছে সোনামসজিদ। এমন জনশ্রুতি রয়েছে। স্থাপত্যকলা ও শৈল্পিক সৌন্দর্যের বিচারে এ মসজিদ গৌড়ের রত্ন বলে উল্লেখ করেন ঐতিহাসিকরা। মসজিদটি সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহের আমলে ওয়ালী মুহাম্মাদ কর্তৃক ১৪৯৩ থেকে ১৫১৯ খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে নির্মিত হয়। মসজিদের পাশেই শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের সমাধি।

তোহাখানা

ঐতিহাসিক ছোট সোনামসজিদের অদূরেই অবস্থিত তোহাখানা। ১৬৫৫ সালে শাহ সুজা এটি নির্মাণ করেন। কথিত আছে, তাপনিয়ন্ত্রিত ইমারত হিসেবে এটি নির্মাণ করা হয়। এর পাশেই রয়েছে মোঘল আমলের মসজিদ ও হজরত শাহনেয়ামতুল্লাহর মাজার।

চামচিকা মসজিদ ও স্থলবন্দর

ছোট সোনামসজিদের অদূরেই আছে চামচিকা মসজিদ ও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সোনামসজিদ। ঢুঁ মেরে আসতে পারেন সেখানেও। আমের জন্য বিখ্যাত এ অঞ্চল। তাই আমের মৌসুমে বাগানগুলো দর্শনার্থীদের আকর্ষণে বাড়তি মাত্রা যুক্ত করে। ছায়া-সুনিবিড় বাগানে ঘোরাঘুরির পাশাপাশি নির্ভেজাল পুষ্টিসমৃদ্ধ আমের স্বাদ নিতে কে না চায়।

যেভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগমাধ্যম সড়কপথ। সময় লাগবে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা। জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটারের মধ্যেই ছোট সোনামসজিদ। প্রতিটি স্থাপনার দূরত্ব খুব সামান্য। ঢাকা থেকে সরাসরি শিবগঞ্জ বাস যায়। হানিফ, শ্যামলী, ন্যাশনাল ট্রাভেলস, দেশ পরিবহনসহ অনেক কোম্পানির বাস চলে। ভাড়া পড়বে ৭০০ থেকে ১০০০ টাকা। অন্যান্য বাহন-ও আছে। এছাড়া ঢাকা থেকে ট্রেনযোগে যেতে পারেন রাজশাহী। সেখান থেকে সরাসরি সোনামসজিদ। 

থাকার ব্যবস্থা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহর ও শিবগঞ্জ উপজেলা শহরে থাকার জন্য রয়েছে স্বল্প খরচে বেশ কয়েকটি হোটেলের ব্যবস্থা। নাহিদ, আলহেরা, স্বপ্নপুরীসহ এসব হোটেলের সিঙ্গেল অথবা ডাবল বেডের ভাড়া পড়বে ৩০০ থেকে ১০০০ টাকার মধ্যেই। এসি, ননএসি দুটোই মিলবে।

বাংলাদেশকে জানো বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর