ঢাকা, ১৯ মার্চ মঙ্গলবার, ২০২৪ || ৫ চৈত্র ১৪৩০
good-food
৬৯৬

প্রকৃতি ধ্বংস হলেই প্রাণঘাতী মহামারীর ঝুঁকি

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১০:০৯ ৮ আগস্ট ২০২০  

বলা হয় প্রকৃতি তার নির্মম প্রতিশোধ নিজেই নিয়ে থাকে।  মানুষ কর্তৃক প্রাকৃতিক বাস্তুসংস্থান ধ্বংসের কারণে ইঁদুর, বাঁদুড় ও অন্য কিছু প্রাণীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যারা অনেক রোগজীবাণুর বাহক এবং এভাবেই কভিড-১৯-এর মতো আরো মহামারী সৃষ্টির ঝুঁকি বাড়ছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনই তথ্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

ছয়টি মহাদেশের প্রায় সাত হাজার প্রাণী নিয়ে গবেষণার পর দেখা যায়, বন্যপ্রাণীদের আবাসকে কৃষিজমি কিংবা বসতি জায়গায় রূপান্তরের ফলে বিপুলসংখ্যক প্রজাতি বাস্তুচ্যুত হয়। গবেষকরা দেখেছেন, প্রকৃতির এ পরিবর্তন বা ক্ষতিসাধনের ফলে উপকৃত হয় অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র ও অভিযোজনক্ষম প্রাণী, যারা অধিকাংশই প্যাথোজেন (রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু) বহন করে মানুষের শরীরে পৌঁছে দেয়।

গবেষণায় দেখা যায়, বন্যপ্রাণীর আবাস ধ্বংস হয়েছে এমন স্থানে জুনোটিক রোগ বেড়েছে আড়াই গুণ এবং প্যাথোজেন বহন করে এমন প্রজাতি বৃদ্ধি পেয়েছে ৭০ শতাংশ।

মানবজাতিও ক্রমাগতভাবে এমন সব রোগ দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে যা কিনা প্রাণিকুলের সৃষ্টি। যেমন এইচআইভি, জিকা, সার্স ও নিপাহ ভাইরাস। করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর পর থেকেই জাতিসংঘ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, বিশ্বকে শুধু স্বাস্থ্য আর অর্থনৈতিক উপসর্গ নিয়ে না ভেবে অবশ্যই প্রাদুর্ভাব সৃষ্টির কারণ খুঁজে তার সমাধান করতে হবে।

গত জুন মাসে শীর্ষ অর্থনীতিবিদ ও জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক প্রধান ইনগার অ্যান্ডারসন সতর্ক করে দিয়ে বলেন, কভিড-১৯ মহামারী মানব সম্প্রদায়ের জন্য একটি ‘এসওএস বার্তা’। তাদের মতে, বর্তমান অর্থনৈতিক ভাবনা এটা বুঝতে চায় না যে প্রকৃতির স্বাস্থ্যের ওপরই মানুষের সম্পদ নির্ভরশীল। তিনি বলছিলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি, জীবিকা ও সুস্থতা সবই প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল। আমাদের খাবার থেকে শুরু করে জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ, রোগব্যাধি নিয়ন্ত্রণ ও আধ্যাত্মিক পরিপূর্ণতার সবই প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল। প্রকৃতি ছাড়া কোনো জীবনই থাকবে না।’

অ্যান্ডারসন ও তার সহকর্মীরা বলছিলেন, বন্যপ্রাণী থেকে মানবদেহে যে রোগব্যাধি আসছে তার পেছনের মৌলিক কারণ হলো বর্তমানে প্রকৃতির নির্বিচার ধ্বংসসাধন। গত এপ্রিলে আরেক দল বিজ্ঞানী বলছিলেন, প্রকৃতির ধ্বংসযজ্ঞ না থামালে ভবিষ্যতে এমন প্রাণঘাতী প্রাদুর্ভার আরো আসতেই থাকবে।