ঢাকা, ০৪ আগস্ট সোমবার, ২০২৫ || ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২
good-food

দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে মোটরসাইকেলের যত্নে যা যা করবেন

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২৩:১৯ ৩ আগস্ট ২০২৫  

নতুন মোটরসাইকেলের যত্ন নেয়া একটি বিশেষ প্রক্রিয়া, যা বাইকের কর্মক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী এবং রাইডিংয়ের অভিজ্ঞতাকে আরও সুখকর করে তোলে। নতুন বাইক কিনে প্রথম দিন থেকেই যদি সঠিক যত্ন নেয়া হয়, তাহলে বাইক থাকবে ভালো অবস্থায়, কম খরচে চলবে এবং যেকোনো সমস্যা থেকে মুক্ত থাকবে।

 

নতুন বাইকের যত্ন শুরু হয় বাইক চালানোর প্রথম দিন থেকেই। কারণ, বাইকের ইঞ্জিন ও যন্ত্রাংশগুলো তখনও পুরোপুরি চালকের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে না। তাই প্রথম কয়েক শত কিলোমিটার ধীরে ধীরে গতি বাড়ানো উচিত এবং একটানা দীর্ঘ সময় চালানোর থেকে বিরত থাকা ভালো। এর ফলে ইঞ্জিনের বিভিন্ন অংশ ঠিকভাবে মিশে যায় এবং বাইকের কর্মক্ষমতা অনেক বেশি উন্নত হয়।

 

নতুন বাইকের তেল পরিবর্তন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ৫০০ থেকে ১০০০ কিলোমিটার গাড়ি চালানোর পরে ইঞ্জিনের মধ্যে জমে থাকা ধুলো কণা ও ময়লা দূর করতে হবে। পরবর্তীতে নিয়মিত সময়ে মানানসই ও ভালো মানের তেল ব্যবহার করলে ইঞ্জিন দীর্ঘদিন ভালো থাকে এবং ঘর্ষণ কম হয়। তেলের পাশাপাশি ফুয়েল ট্যাংক ও ফুয়েল ফিল্টারও নিয়মিত পরীক্ষা করতে হয়। ট্যাংকে পানি জমে গেলে বা ময়লা প্রবেশ করলে ইঞ্জিনে সমস্যা হতে পারে, তাই জ্বালানি ভালো ও পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত জরুরি।

 

টায়ারের অবস্থা ও চাপ নিয়ন্ত্রণও নতুন বাইকের জন্য অত্যন্ত জরুরি। সঠিক চাপ থাকলে বাইকের গ্রিপ ভালো হয়, আর টায়ার দীর্ঘ সময় টিকে থাকে। অনিয়মিত চাপ বাইকের চালনাকে অসুবিধাজনক করে তোলে এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ায়।

 

নতুন বাইকের চেইন মাঝে মাঝে পরিষ্কার করে বিশেষ লুব্রিকেটর ব্যবহার করলে এটি দীর্ঘস্থায়ী হয়। পাশাপাশি ব্রেকের অবস্থা সব সময় ঠিক রাখতে হবে। ব্রেক প্যাড ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা, ব্রেক লেভেল যথেষ্ট আছে কিনা, নিয়মিত চেক করা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা কমানো যায়।

 

নতুন বাইকের যত্নে বাইক ধোয়ার বিষয়টিও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ধোয়ার সময় খুব সাবধানে কাজ করতে হয় যেন ইঞ্জিন বা বৈদ্যুতিক অংশে পানি না যায়। নরম কাপড় ও স্পঞ্জ ব্যবহার করে বাইক ধোবেন এবং ধোয়ার পর ভালো করে শুকিয়ে নেবেন। বাইক সার্ভিস করানো নিয়মিত রাখতে হবে। সার্ভিসের মাধ্যমে বাইকের যেকোনো ছোটখাটো সমস্যা আগেই ধরা পড়ে এবং দ্রুত সমাধান করা যায়। এতে বাইকের কর্মক্ষমতা বাড়ে এবং ভবিষ্যতে বড় ধরনের মেরামতের ঝামেলা এড়ানো যায়।

 

মোটরসাইকেল পার্কিং করার ক্ষেত্রেও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বাইককে রোদ বা বৃষ্টির মধ্যে দীর্ঘ সময় রাখতে এড়িয়ে চলুন। বর্ষায় বাইকের জন্য কভার ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ যেমন লাইট, হর্ন, ইন্ডিকেটর নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে যেন সবকিছু ঠিকঠাক কাজ করে। চালানোর সময় অবশ্যই নিরাপত্তা ব্যবস্থা মেনে চলতে হবে, হেলমেট ব্যবহার করা আবশ্যক। ভারি মালামাল বহন এড়িয়ে চললে বাইক ভালো থাকবে এবং চালানোও সহজ হয়।

 

সবশেষে বলা যায়, নতুন বাইকের যত্ন মানে হলো ধৈর্য ধরে নিয়মিত পরিচর্যা ও সঠিক ব্যবহার। এই যত্ন যদি নিয়মিত এবং মনোযোগ দিয়ে নেয়া হয়, তাহলে আপনার বাইক থাকবে দীর্ঘস্থায়ী, ঝঞ্ঝাট মুক্ত এবং সর্বোচ্চ কর্মক্ষমতায়। নতুন বাইকের সঠিক যত্ন নিলে তা আপনার যাত্রাকে আনন্দময় ও নিরাপদ করে তোলে।