ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ১২ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
১৬৫৭

মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স : দীপুমনি

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৬:০৮ ২৮ জানুয়ারি ২০১৯  

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত

বর্তমান সরকারের বিগত ১০ বছরের সাফল্য তুলে ধরে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, শিক্ষাখাতে গত ১০ বছরে অনেক বড় কাজ হয়েছে। বড় বড় অর্জন রয়েছে। সেসব অর্জনকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে শিক্ষাখাতের বিষয়ে যেসব প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে, ইশতেহার ধরে ধরে সেগুলো বাস্তবায়নে তিনি কাজ করবেন।

ইশতেহার মানে জনগণের সঙ্গে সরকারের চুক্তি। এ ব্যাপারে তিনি শতভাগ আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করবেন।

নিজ মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্সের কথা জানিয়ে ডা. দীপু মনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির ব্যাপারে যে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন, এ মন্ত্রণালয়ও তার বাইরে নয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে দুর্নীতি আগের চেয়ে কমেছে। তথ্য অধিকার আইন, তথ্য কমিশন, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল- এ সবই দুর্নীতি কমানোর অংশ। গণমাধ্যমেরও ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। তাই দুর্নীতি সর্বত্র কমতে বাধ্য। মন্ত্রী, এমপি, প্রভাবশালীদের দুর্নীতি দমন কমিশন ডাকবে, আগে এটা কেউ ভাবেননি। এখন দুদক একটা ভয়ের নাম। দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিজের সুদৃঢ় অবস্থানের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো বিষয়ে অভিযোগ এলে তদন্ত করে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ডা. দীপুমনি  নিজ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যে চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়টি সামনে এসেছে।
নকলমুক্ত, প্রশ্নফাঁসমুক্ত নির্বিঘ্ন পরীক্ষার জন্য করণীয় সবকিছু তারা এরই মধ্যে করেছেন। আশা করছেন, সম্পূর্ণ নির্বিঘ্নে ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এবারের এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করেন শিক্ষামন্ত্রী।

নিজেদের সীমাবদ্ধতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, গত ১০ বছরে অনেক কাজ হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সব ক্লাসরুমকে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমে পরিণত করার চেষ্টা করা হবে। শিক্ষকদের তৈরি করা ডিজিটাল কনটেন্ট সবার জন্য উন্মুক্ত রয়েছে। ঢাকায় নামি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রখ্যাত কোনো শিক্ষক যা পড়াচ্ছেন, তা যেন অনলাইনের মাধ্যমে সারাদেশের সব শিশুদের কাছে ছড়িয়ে দেওয়া যায়। এভাবে ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞানের দক্ষ শিক্ষকের অভাব কিছুটা পূরণ করা যায়। সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ল্যাবরেটরির যে অভাব রয়েছে, অনলাইনের মাধ্যমেও সে অভাব কিছুটা পূরণ করা যায়। হাতে-কলমে না হলেও শিক্ষার্থীরা দেখে কিছুটা বাস্তব জ্ঞান পাবে। অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এভাবে অনেক কিছু করা সম্ভব।

শিক্ষামন্ত্রী জানান, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে দু'বছর বন্ধ ছিল। এখন তা হতে যাচ্ছে। বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে ৩৯ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। সরকারি বিদ্যালয়েও যোগ্য শিক্ষকের অভাব রয়েছে। শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে যোগ্য শিক্ষকের অভাব দ্রুতই পূরণের চেষ্টা করা হবে।

কোচিং বাণিজ্যের বিষয়ে তিনি জানান, এ বিষয়ে তিনি অবহিত আছেন।

স্পষ্টভাষায় বলেন, যেখানে শিক্ষকরা ক্লাসে না পড়িয়ে কোচিংয়ে বা নিজ বাড়িতে অর্থের বিনিময়ে পড়তে যেতে ছাত্রছাত্রীদের বাধ্য করবেন, কোচিংয়ে পড়তে না এলে স্কুলে ওই শিক্ষার্থীকে ফেল করিয়ে দেন, সেই কোচিং কোনোভাবে চলতে দেয়া যায় না। নিষিদ্ধ নোট-গাইড বইয়ের বিকিকিনি বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, এগুলো নিষিদ্ধ আছে। তিনি আশা করেন, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন আরও উদ্যোগী হবেন, যেন কোনোভাবেই এগুলো চলতে না পারে। অপর প্রশ্নে তিনি বলেন, ঝুলে থাকা শিক্ষা আইন দ্রুতই প্রণয়ন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

কারিগরি বৃত্তিমূলক শিক্ষা বিষয়ে নিজের মত তুলে ধরে ডা. দীপু মনি বলেন, কারিগরি শিক্ষার বিষয়ে সবার মাইন্ড সেটে পরিবর্তন আনতে হবে। লাখ লাখ মাস্টার্স ডিগ্রি পাস তৈরি করা হবে নাকি কর্মমুখী শিক্ষার দিকে যাওয়া হবে, তা ঠিক করতে হবে। ২০২০ সালের মধ্যে কারিগরি শিক্ষার্থী ২০ ভাগে উন্নীত করার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের লক্ষ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, এ শিক্ষাকে কতটা আকর্ষণীয় করে তোলা যাবে, তার ওপর সবকিছু নির্ভর করবে। চাকরির বাজারের সঙ্গে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার সংযোগ ঘটাতে হবে।

দেশের উচ্চশিক্ষা নিয়ে তিনি বলেন, উচ্চশিক্ষায় মান নির্ধারণের ক্ষেত্রে এখনো পিছিয়ে আছি। অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল গঠনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এটা হলে তখন অন্যান্য দেশের অ্যাক্রিডিটেশন প্রসেসে ঢুকতে পারবো। তখন আমাদের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মানও বৈশ্বিক মানদন্ডে নির্ণয় করা যাবে।