ঢাকা, ১৯ জুন বৃহস্পতিবার, ২০২৫ || ৬ আষাঢ় ১৪৩২
good-food
২২

ভেঙে ফেলা হলো ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্য

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০০:২০ ১৯ জুন ২০২৫  

ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাককানইবি) স্থাপিত ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ ও পুরাতন কলা অনুষদ ভবনের মাঝখানে পুকুর পাড়ে স্থাপিত ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হয়।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম ছুটিতে থাকায় রুটিন দায়িত্ব পালন করছেন ট্রেজারার অধ্যাপক জয়নুল আবেদীন সিদ্দিকী।

 

ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে অনেক আগেই ডিন ও সবাইকে নিয়ে একটা সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এটা সম্ভবত সেই সিদ্ধান্তের কারণেই হয়েছে। তখন তো অনেকগুলো বিতর্কিত কর্মকাণ্ড হয়েছিলো, কেউ কেউ ভাস্কর্যটি নিয়ে তীব্রভাবে আপত্তি জানিয়েছিল। ফলে ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।”

 

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে চার কোটি বেশি টাকা ব্যয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ পুকুরগুলোর সৌন্দর্য বর্ধনের কাজের অংশ হিসেবে নির্মাণ করা হয়েছিল ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্য।তখন উপাচার্য ছিলেন অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর। ৫ অগাস্ট সরকার পরিবর্তনের পর উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম।

 

ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগ-এলজিইউডি বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, “এখানে সৃষ্টি সুখের উল্লাসে মেতে আছে পরিকল্পনা দপ্তরের পরিচালক প্রকৌশলী মো. হাফিজুর রহমান। পরিকল্পনা দপ্তর বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুর থেকে শুরু করে রাস্তা, ড্রেন, ভবন নিজে হাতে বারবার সৃষ্টি করল। আবার ধ্বংস করল। প্রতিবার ভিসি হিসেবে নতুন কেউ আসলে মাস্টার প্ল্যান চেঞ্জ হয়। কিন্তু আমার মনে হয়, ‘অঞ্জলি লহ মোর’ এর ক্ষেত্রে এসব কোনো দিকই বিবেচনা করা হয়নি।”

 

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সৌখিন আহমেদ বলেন, “পুরাতন কলা ও বিজ্ঞান ভবনের মিলিত স্থানে আগে একটি পুকুরঘাট ছিল, যেখানে বসার ব্যবস্থা ছিল। তা ভেঙে সৌমিত্র শেখর তার সময়কালে তৈরি করেছিলেন ‘অঞ্জলি লহ মোর’। এখন সেটা আবার ভেঙে ফেলা হচ্ছে। তাও এমন সযয়ে যখন শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে নেই তখন।

 

তিনি বলেন, “এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অলিখিত নিয়ম হলো ছুটি চলাকালীন সময়ে সেই কাজগুলো করে ফেলা যেটাতে শিক্ষার্থীরা দ্বিমত জানাতে না পারে। এটা ভেঙে ফেলায় নজরুলের কর্ম-প্রচার প্রয়াসকে যেমন ক্ষুণ্ন করা হয়েছে, তেমনি জনগণের কষ্টের টাকার অপচয়ে প্রথম শ্রেণির শিক্ষিত সমাজের কিছু যায় আসে না- এটাও প্রমাণ হবে।”

 

‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভেঙে ফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মিজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা দপ্তরের পরিচালক হাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। হাফিজুর রহমান বলেন, “অঞ্জলি লহ মোর ভাস্কর্যটি শিক্ষার্থীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই ভাঙা হয়েছে। ”