একটি রেল ভ্রমণের অভিজ্ঞতা
লাইফ টিভি 24
প্রকাশিত: ১০:৫৮ ২৮ মে ২০১৯
রেলওয়ের অনিয়ম হরহামেশা শুনি। কিন্তু এসব কতটা সত্যি, তা নিজের চোখে না দেখলে কাউকে বোঝানো যাবে না। তেমনি একটি অভিজ্ঞতার কথা বলছি। গত ৪ ও ৫ এপ্রিল রাতের ট্রেন ভ্রমণ করে সেই দৃশ্য নিজ চোখে দেখলাম। টিকিট করতে গিয়ে দেখি দালালের অভাব নেই। একজন বললেন, তার কাছে টিকিট আছে। আরাম করে বসে যেতে পারব। বললাম, কাউন্টার থেকে টিকিট নেবো। লোকটি বললেন, কাউন্টারে বসে যাওয়ার টিকিট পাবেন না। আরেকজন বললেন, ভাই টিকিট লাগবে না। আমার সাথে আসুন, আমি ট্রেনে আপনাকে বসিয়ে দেবো, আমার লোক আছে। ৩০০ টাকা দিলে হবে। এসব পাত্তা না দিয়ে কাউন্টার থেকে টিকিট কিনলাম। যেহেতু ৫ এপ্রিল সকালে কাজ, তাই যেভাবে হোক ঢাকা যেতে হবে। সিট না পেয়ে দাঁড়িয়ে যাওয়ার টিকিট নিলাম। টিকিট কেটে ট্রেনে উঠলাম। উঠে দেখি প্রচুর যাত্রী। দাঁড়িয়ে যাওয়ার মানুষ এত, তা ধারণাতেও ছিল না। বাসেও অনেকবার ঢাকায় গেছি, তাই রাস্তায় যানজটের অভিজ্ঞতাও আছে।
মন খারাপ করে যাত্রা শুরু করলাম। কিছুক্ষণ পর পাশের যাত্রী থেকে জানলাম, তাদের কারো টিকিট নেই। বেশির ভাগ ট্রেনের কর্মচারীদের অল্প টাকা দিয়ে উঠেছেন। তারা সবাই ‘জামাই আদরে’ যাচ্ছেন। যেখানে দাঁড়িয়েছিলাম; পাশের বগিতে দেখি ট্রেনের কর্মচারীরা নাশতা বিক্রি করছেন। সেখানেও ১২-১৫ যাত্রী টুলে বসে যাচ্ছেন। হেঁটে তাদের পাশে গেলাম। এর মধ্যে একজন টিকিট চেক করতে এলেন। দেখি, যারা দাঁড়িয়ে এবং টুলে বসে যাচ্ছেন, তাদের প্রায় সবারই টিকিট নেই। টিকিট নেই কেন- জিজ্ঞেস করতেই তারা অন্য এক কর্মচারীকে দেখিয়ে দেন। যিনি টিকিট চেক করছেন, তিনিও কথা না বাড়িয়ে চলে গেলেন। তারপর দেখি যিনি টিকিট চেক করছিলেন তিনি টাকা ভাগবাটোয়ারা করে চলে যাচ্ছেন। টিকিট ছিল হাতেগোনা আমাদের কয়েকজনের কাছে। যিনি টিকিট দেখছিলেন তিনি বলছেন, এত দূর দাঁড়িয়ে যাবেন? আমাদের কর্মচারীর সাথে কথা বলুন। একটা টুল এনে দেবেন। কিছু টাকা দিতে হবে। এই হলো আমাদের রেলওয়ে। ৬ তারিখ আমার চাকরির ইন্টারভিউ।
দেখতে দেখতে কুমিল্লা চলে এলাম। স্টেশনে থামার পর দেখি অনেক যাত্রী নামছেন। অনেকটা ফাঁকা হলো বগি। দু-একটা সিটও খালি পড়ে রইল। তবে সেখানে বসার সুযোগ নেই। অবৈধ যাত্রীরা বসবেন। হঠাৎ পাশের যাত্রীকে দেখলাম একটি টুলে বসে আছেন। আমার দিকে চোখ পড়তেই বলে ওঠেন- ১৪০ টাকা দিয়ে টুল পেলাম। তিনি বলেন, আপনিও একটা টুল নিন। কতক্ষণ দাঁড়িয়ে যাবেন? তখন বলছিলাম- অর্ধেক তো চলে এলাম, আর অর্ধেকও না হয় এভাবে চলে যাবো। ঠিক এমন সময় ট্রেনের কর্মচারীর পরিচিত একজন ট্রেনে উঠলেন। ট্রেনের বগিতে লেখা আছে, ধূমপানমুক্ত এলাকা। কিন্তু তার হাতে সিগারেট। তাকে দেখি টুল এনে দিলেন তার বন্ধু। তারা সবাই একসাথে সিগারেট খাচ্ছেন আর আড্ডা দিচ্ছেন।
কুমিল্লার পরের এক স্টেশনে এক যাত্রী নামলেন। তার সিট খালি হলে আমার পাশের একজন বসে পড়লেন। তার সাথে অনেকক্ষণ কথা বলেছি। তিনিও জরুরি কাজে ঢাকা যাবেন। তিনি দাঁড়াতে পারছেন না, তাই বসে পড়লেন। কিন্তু বেশিক্ষণ বসতেও পারলেন না। হঠাৎ একজন উঠলেন ট্রেনে। তিনি বসে থাকা সবার টিকিট চেক করলেন। আমার পাশের যাত্রীর টিকিটে দেখেন সিট নেই, দাঁড়িয়ে যেতে হবে। তাকে উঠিয়ে দিয়ে নিজে বসলেন। বিষয়টি দেখে সবাই অবাক। পাশের যাত্রী তাকে বলছেন, আপনার টিকিট কই? তখন বসে থাকা লোকটি তাকে পারে তো মারবেন, এমন ভাব করে কথা বলছেন।
অন্য দিকে পাশের বগিতে কয়েকটা ছেলে সিগারেট খাচ্ছেন, তাই ওইদিকে যেতেও পারছি না। তাদের হাসির আওয়াজ কানে আসছে।
এভাবে এসব দেখতে দেখেতে ট্রেন ভ্রমণ শেষ হলো। বিমানবন্দর স্টেশনে নামলাম। নির্দিষ্ট কাজ শেষ করে ফের চট্টগ্রামে রওনা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। রাতে পৌঁছাতে হবে। গাজীপুর থাকেন এক সেনাকর্মকর্তার সাথে ভালো সম্পর্ক। তার সাথে দেখা না করলে তিনি কষ্ট পাবেন। তাই গাজীপুর যাওয়া। তিনি আমার জন্য চট্টগ্রামে যাওয়ার টিকিটের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। যদিও ট্রেনে যাওয়ার স্বাদ আমার একবারেই ছিল না। কিন্তু টিকিট যখন ঠিক করে রেখেছে, তখন আর না করতে পারলাম না। সেজন্য আমাকে কমলাপুর রেল স্টেশনে যেতে হবে। সাথে ছিলেন আমার এক সঙ্গী। তাকে নিয়ে জয়দেবপুর রেল স্টেশন থেকে কমলাপুরের টিকিট কাটলাম। কিছুক্ষণ দাঁড়ানোর পর ট্রেন এলো। তারপর যা হলো, তা দেখে অবাক। ট্রেনে তিল ধারণের জায়গা নেই। ছাদে প্রচুর মানুষ। সাথের জন ছাদে গেলেন। ছাদে ওঠার সাহস করতে পারিনি। তাই কোনো রকম ট্রেনের হাতল ধরে ভেতরে ঠেলে দাঁড়িয়েছি। যেভাবে ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়েছেন যাত্রীরা, যেন নিঃশ্বাস নেয়ার উপায় নেই। এভাবে প্রতিটি স্টেশনে ওঠানামা করছেন যাত্রীরা।
বিমানবন্দর স্টেশনে এসে থামল ট্রেন। রেলওয়ে পুলিশ বাঁশি বাজিয়ে ট্রেনের ছাদ থেকে সবাইকে নামিয়ে দিচ্ছেন। ভাবছি; এরা ভেতরে এলে আরো নাকাল হবো। এ ছাড়া সঙ্গী ছাদে উঠেছেন। তাই তার খোঁজ করতে অনেক কষ্টে ঠেলে-ঠুলে নামলাম। এর মধ্যে সবাই যে যার মতো ছাদ থেকে নেমে ভেতরে আসছেন। সাথে যিনি ছিলেন তাকে দেখতে পেলাম না। ট্রেন থেকে নামার পর খুঁজছি। এর মধ্যে তার ফোন। জিজ্ঞেস করেন, কোথায়? বললাম প্রথম বগির দিকে। এসে দাঁড়ালেন পাশে। ততৎক্ষণে ট্রেনও ছেড়ে দিচ্ছে। উঠতে গিয়ে দেখি তিল ধারণের ঠাঁই নেই। শেষ পর্যন্ত ট্রেনে উঠতে পারলাম না। অথচ টিকিট পকেটে। এরপর সিদ্ধান্ত নিলাম বাসে করে কমলাপুর যাবো। ঠিক তখনই দেখলাম কিছু তরুণ এক লোককে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। তাদের অনুসরণ করলাম। জিজ্ঞেস করলাম, কী হয়েছে, টানছেন কেন? তারা বলেন, লোকটি ছাদে উঠেছেন। তাদের বলি, এখন কী করবেন? তারা বলেন, স্যারের কাছে নিয়ে যাবো। তাদের স্যার এক রেল পুলিশ (কনস্টেবল)। পুলিশ সদস্য কোনো কথা না শুনে একটি রুমে আটকে রাখলেন লোকটিকে। ভেতরে দেখি আরো কয়েকজন। তারা বলছেন, কাল আমাদের পরীক্ষা। ছেড়ে দিন। পুলিশ সে কথায় কান দিচ্ছেন না। এরপর পুলিশকে বললাম, ভাই তাদের শাস্তি কি এটাই? ছেড়ে দেবেন কখন? পুলিশ বলল, স্যার না এলে ছাড়া যাবে না। আর ১০০ টাকা করে দিতে হবে। এটা জরিমানা।
রওনা দিলাম কমলাপুরের পথে। পৌঁছে রাতের খাবার খেয়ে নির্দিষ্ট ট্রেনে উঠে নিজের আসনে বসলাম। একটু আগে আসায় পুরো স্টেশন একবার চক্কর দিলাম। আসার সময় যা দেখেছি তার পুনরাবৃত্তি দেখলাম। নিজের আসনে বসে পড়লাম। ট্রেনও ছেড়ে দিলো নির্দিষ্ট সময়ে। মাঝপথে এক যাত্রী নামায় সিট ফাঁকা হয়। ট্রেনের এক গার্ড সেখানে এক লোককে বসিয়ে দিলেন। ওই যাত্রী বললেন, ৩০০ টাকা দিয়ে এখানে বসতে পেরেছেন। এসব নিয়ে আর না ভেবে চোখ বন্ধ করেই চট্টগ্রাম ফিরলাম।
লেখক : শিক্ষার্থী, ওমরগনি এমইএস কলেজ, চট্টগ্রাম
[email protected]
- অ্যালার্জি নাকি ঠান্ডা-কাশি, বোঝার উপায় ও প্রতিকার
- এলডিসির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
- বাংলাদেশে আসছেন বলিউডের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী আতিফ আসলাম
- এবার নিঝুম দ্বীপের সেই পুকুরে ধরা পড়ল ১০০ ইলিশ
- প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে সৈকত
- অ্যানেস্থেসিয়ার ওষুধ পরিবর্তন: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ
- মাদ্রাসা শিক্ষকদের জন্য সুখবর
- মানুষ খুশিতে কেঁদে ফেলে কেন?
- নিশো নয়, শাকিব খানের বিপরীতে খলনায়ক যিশু!
- সব রেকর্ড ভেঙে আইপিএলে হায়দরাবাদের ইতিহাস
- অকৃতজ্ঞরা ভুলে যায় জিয়াকে মেজর জেনারেল বানিয়েছিল আ. লীগ
- ভুটানের রাজাকে পদ্মা সেতু ঘুরে দেখালেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী
- ভারত-পাক সমকামী যুগলের বিয়ে ভাঙলো
- মিস ইউনিভার্স সৌদি আরব তরুণী আলকাহতানি
- বাংলালিংকের নেটওয়ার্ক পাচ্ছে টেলিটক
- ইফতারে ইসবগুলের ভুসির শরবত খেলে পাবেন ৫ উপকার
- নিপুণের আবেদনে পেছাল ভোটের তারিখ, অসন্তুষ্ট মিশা
- মেসির পর ডি মারিয়াকে হত্যার হুমকি
- স্বাধীনতার চেতনায় সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ব: প্রধানমন্ত্রী
- নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস
- নতুন কারিকুলামে পাঁচ ঘণ্টায় পরীক্ষা
- মাইগ্রেনে আক্রান্তরা রোজা রাখতে যা করবেন
- মানুষের মাঝে বিনা পয়সায় খাদ্য বিতরণ করছি: প্রধানমন্ত্রী
- সমবায় ব্যাংককে ডিজিটাল প্লাটফর্মে পরিণত করা হবে: দারা
- ৫১ বছর বয়সে মা হলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী
- আইসিসির আম্পায়ারিং প্যানেলে পাঁচ বাংলাদেশি নারী
- বুধবার থেকে রাত ৯টার পরও চলবে মেট্রোরেল
- বিআরআরএফের ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত
- কুয়াকাটা সৈকতে হাজারো জেলিফিশ
- উপজেলা ভোট: প্রার্থী কে মনোনয়ন দেবে, দলগুলোকে জানাতে বলল ইসি
- রেলের টিকিট কালোবাজারি, সহজ ডটকমের দুজনসহ গ্রেফতার ৯
- ভারত-পাক সমকামী যুগলের বিয়ে ভাঙলো
- বাংলালিংকের নেটওয়ার্ক পাচ্ছে টেলিটক
- সমবায় ব্যাংককে ডিজিটাল প্লাটফর্মে পরিণত করা হবে: দারা
- ইসরায়েলের সেনাপ্রধানের পদত্যাগের ঘোষণা
- সুখী মানুষরা যেসব কাজ করেন না
- মিস ইউনিভার্স সৌদি আরব তরুণী আলকাহতানি
- বিআরআরএফের ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত
- দিন হবে রাতের মতো, যুক্তরাষ্ট্রে স্কুল বন্ধ
- নতুন ফিচার নিয়ে এলো হোয়াটসঅ্যাপ
- উপজেলা ভোট: প্রার্থী কে মনোনয়ন দেবে, দলগুলোকে জানাতে বলল ইসি
- এ বছরের ফিতরা কত, জানালো ইসলামিক ফাউন্ডেশন
- ভোটের আগে দিল্লির মূখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল গ্রেফতার
- মাইগ্রেনে আক্রান্তরা রোজা রাখতে যা করবেন
- রোজায় বুকজ্বলা: নিজেই করুন সমাধান
- ঈদে ৩১ মার্চ থেকে ব্যাংকে মিলবে নতুন টাকার নোট
- কুয়াকাটা সৈকতে হাজারো জেলিফিশ
- ৬ সেকেন্ডে গোল করে অস্ট্রিয়ান ফুটবলারের ইতিহাস
- নতুন কারিকুলামে পাঁচ ঘণ্টায় পরীক্ষা
- মস্কো কনসার্টে হামলা: ৬০ জন নিহত