ঢাকা, ২৬ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪ || ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৮৩০

এলিয়েন দেখতে আমেরিকায় ফেসবুক ইভেন্ট

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২২:০৫ ২২ জুলাই ২০২০  

এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে এলিয়েন খুঁজে বেড়াচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এদের কেউ বলেন, বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের কোথাও এর অস্তিত্ব আছে। আবার অনেকে বলেন, এ দাবি একেবারে অবাস্তব, ভিত্তিহীন।

এলিয়েন নিয়ে অনেক কল্পকাহিনী রচিত হয়েছে। অসংখ্য সাহিত্য ও চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। কিন্তু ভিনগ্রহ থেকে আসা এরকম কোনও প্রাণির খোঁজ মেলেনি আজও।

তবে অনেকেই এলিয়েনের অস্তিত্বের কথা বিশ্বাস করেন। তারা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রেই এরকম কিছু কোনও এক সময় নেমে এসেছিল। সরকার তাদের নেভাডার এরিয়া-৫১ তে (প্রত্যন্ত অঞ্চল) লুকিয়ে রেখেছে।

এ ধারণায় বিশ্বাসীদের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। এলিয়েন দেখার আশায় তারা এখন সেখানে যাওয়ারও পরিকল্পনা করছে।

ঘটনার শুরু কৌতুকের মাধ্যমে। এলিয়েন দেখতে নেভাডায় যাওয়ার ইভেন্টও খোলা হয় ফেসবুকে। নাম দেয়া হয় ‘স্টর্ম এরিয়া ৫১, দে ক্যান্ট স্টপ অল অব আস’। অর্থাৎ চল যাই এরিয়া- ৫১, তারা আমাদের সবাইকে থামাতে পারবে না।

গেল মঙ্গলবার পর্যন্ত এ ইভেন্টে ১৩ লাখেরও বেশি মানুষ সাইন-আপ করেছে। এছাড়া 'আগ্রহী' হিসেবে মার্ক করেছে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ।

এরকম পরিস্থিতিতে লোকজনকে সতর্ক করেছে মার্কিন বিমান বাহিনী। কেউ যেন এরিয়া-৫১ এর ধারে কাছেও না যায়।

এ এলাকাটি বিমান বাহিনীর অত্যন্ত গোপনীয় ঘাঁটি। কিন্তু ইভেন্টে সই করা বহু মানুষ বিশ্বাস করেন, সেখানে ভিনগ্রহ থেকে আসা প্রাণিদের আটকে রাখা হয়েছে।

তবে বিমান বাহিনীর সতর্কতাকে পাত্তা দিচ্ছে না অনেক উৎসাহী ব্যক্তি। হাজার হাজার মানুষ সেখানে মন্তব্য করেছেন- আমরা তাদের বুলেটের চেয়েও দ্রুতগতিতে ছুটতে পারি। এলিয়েনদের দেখতে দাও।

বিমান বাহিনীর মুখপাত্র জানান, তারা এ ইভেন্ট হতে দেবেন না। তিনি বলেন, আমরা আমেরিকা ও দেশের সম্পদ রক্ষার জন্য প্রস্তুত।

ফেসবুকে এ ইভেন্টের আয়োজনকারী জ্যাকসন বার্নেস ইভেন্ট পাতায় যুক্তরাষ্ট্রের সরকারকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, এটা একটা কৌতুক। এ পরিকল্পনা নিয়ে সামনে এগুনোর কোনও পরিকল্পনা আমাদের নেই। আমি শুধু ভেবেছি এটা খুব মজার বিষয় হবে। এখন লোকজন যদি সত্যিই এরিয়া-৫১তে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে আমি এর জন্য দায়ী হব না।

কিন্তু বিমান বাহিনী এরকম ইভেন্টকে এখন আর "মজার বিষয়" হিসেবে নিচ্ছে না। ওই মুখপাত্র বলেন, এরিয়া-৫১ হচ্ছে মার্কিন বিমান বাহিনীর একটি উন্মুক্ত প্রশিক্ষণ রেঞ্জ। আমেরিকার সশস্ত্র বাহিনীর লোকজনকে সেখানে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এরকম একটি জায়গায় আসার ব্যাপারে আমরা লোকজনকে নিরুৎসাহিত করছি।

এ এরিয়া সম্পর্কে ২০১৩ সাল পর্যন্ত জনগণকে কিছুই জানানো হয়নি। এর আগে এ এলাকাটিকে গোপন রাখা হয়। কিন্তু ইউ-টু নামের গোয়েন্দা বিমানের ব্যাপারে গোপণ তথ্য প্রকাশ করতে গিয়ে মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ প্রথমবারের মতো এর কথা স্বীকার করে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, এলাকাটিকে ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়। সেই কারণে সেখানে এলিয়েন লুকিয়ে রাখার মতো "ষড়যন্ত্র তত্ত্বের" জন্ম হয়েছে।

এ তত্ত্ব ঘিরে ব্যাপক গুজবের ডালপালা বিস্তৃত হয়েছে। অনেকে মনে করেন, এ ইভেন্টে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন যারা, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই তাদের গতিবিধির উপর নজর রাখছে।

ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বিশ্বাসীদের অনেকে মনে করেন, এলিয়েনের জীবন ও ইউএফও সম্পর্কে মার্কিন সরকারের কাছে অনেক তথ্য আছে। কিন্তু সেগুলো তারা জনগণের কাছে গোপন রেখেছে।

তারা বিশ্বাস করেন, পৃথিবীতে নেমে আসা এরকম কিছু এলিয়েনকে আটক করে কোথাও লুকিয়ে রাখা হয়েছে। এরকম ধারণা সবসময়ই অস্বীকার করেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।

এরিয়া ৫১-তে কাজ করেছেন বব লাজার। ১৯৮৯ সালে টেলিভিশনে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এরকম দাবি করেন। তখনই এ "ষড়যন্ত্র তত্ত্ব" তীব্র হতে শুরু করে।

সম্প্রতি নেটফ্লিক্সে তার ওপর একটি তথ্যচিত্রও প্রকাশ করা হয়েছে। যাকে কেন্দ্র করে লোকজনের মধ্যে এলিয়েনের ব্যাপারে আবারও আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে।

তবে মি. লাজার যেসব দাবি করেছেন, সেই বিষয়ে তিনি সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য প্রমাণ দেখাতে পারেননি।