ঢাকা, ২৬ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪ || ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৫১২

কাশ্মীরে চরম আতঙ্ক, দলে দলে পালাচ্ছে লোকজন

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২০:০৮ ৪ আগস্ট ২০১৯  

ভারত শাসিত কাশ্মীরে শুক্রবার অভূতপূর্ব এক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঘোষণা করা হয়। এর পর থেকে সেখানে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। পালানোর জন্য হাজার হাজার লোক বিমানবন্দর, বাস টার্মিনালে ভিড় করছেন।
হিন্দুদের পবিত্র অমরনাথ তীর্থযাত্রা কাটছাঁট করে সবাইকে কাশ্মীর উপত্যকা ছেড়ে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। পর্যটকদের দ্রুত ফিরে যেতে বলা হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিমানবন্দর, বাস টার্মিনালগুলো লোকে লোকারণ্য।
ওই দিন হঠাৎ করে কেন্দ্রীয় সরকার ও সেনাবাহিনী ঘোষণা করে অমরনাথ যাত্রাপথে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র, ল্যান্ড মাইন উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য গোয়েন্দা তথ্য থেকে আশঙ্কা করা হচ্ছে বড় ধরণের সন্ত্রাসী হামলা হতে পারে। সেজন্যই পর্যটকদের উপত্যকা থেকে দ্রুত চলে যেতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর বাড়তি ২৮ হাজার সদস্যকে কাশ্মীরে পাঠানো হচ্ছে।
গত দুদিন ধরে সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে পড়ছে। অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করছেন, কাশ্মীরের বিশেষ স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখে ভারতীয় সংবিধানের কিছু ধারা।  সেগুলো সংশোধনের চেষ্টার অংশ হিসেবে ইচ্ছা করে এ পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। সেরকম প্রচেষ্টা হলে কাশ্মীরে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দিতে পারে। মুলত তা সামাল দিতেই বাড়তি নিরাপত্তা বাহিনী পাঠানো হচ্ছে। 
কাশ্মীর রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের সঙ্গে ইতিমধ্যে প্রায় সব কটি রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীরা দেখা করেছেন। রাজ্যপাল জানাচ্ছে, এ বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা শুধু সন্ত্রাসবাদী হামলা মোকাবেলার আশঙ্কার কারণেই। এর সঙ্গে অঞ্চলটির বিশেষ সাংবিধানিক রক্ষাকবচ সরিয়ে নেয়ার কোনও পরিকল্পনাই নেই।
শনিবার দুপুরে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে আসার পর রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা বলেন, অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যেই হঠাৎ করে অমরনাথ যাত্রা বন্ধ করে দেয়া হলো। পর্যটকদের রাজ্য ছেড়ে চলে যেতে বলা হলো। এগুলোর অর্থ বোঝা যাচ্ছে না! রাজ্যপালের কাছে সেটাই জানতে গিয়েছিলাম, আসলে হচ্ছেটা কী! 
মি. আবদুল্লা বলছেন, গুজবে কান দেবেন না। ৩৫ এ বা ৩৭০ ধারা নিয়ে কোনও পরিকল্পনা নেই সরকারের। আশা করব, কেন্দ্রীয় সরকার এটা সোমবার সংসদে স্পষ্ট করে সেটা জানাক।
এর আগে শুক্রবার রাতে রাজ্যপালের সঙ্গে জরুরি অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে দেখা করেন আরেক সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিসহ আরও কয়েকজন নেতা। তাদেরও একই কথা জানিয়েছেন রাজ্যপাল মি. মালিক।
সেই বৈঠক থেকে ফিরে মেহবুবা মুফতি সাংবাদিকদের বলেন, কাশ্মীরে মানুষের মধ্যে আমি ব্যাপক আতঙ্ক দেখছি, যা আগে কখনও দেখিনি।
শ্রীনগর থেকে বিবিসির সংবাদদাতা মাজিদ জেহাঙ্গীর বলছেন, শুক্রবারের মতো শনিবারও সরকার, সেনাবাহিনীর বা রাজ্যপালের দেয়া এসব আশ্বাসে মানুষ খুব একটা ভরসা করছেন না। গতকাল থেকেই পেট্রল পাম্প বা অন্যান্য দোকানগুলোতে মানুষের ভিড় লেগে রয়েছে। সবাই রেশন আর জ্বালানী জোগাড় করে রাখছেন।
সরকারি পরামর্শ মেনে হাজার হাজার মানুষ এখন কাশ্মীর ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। বিমানবন্দরে বা বাস টার্মিনালে তিল ধারণের জায়গা নেই। বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষ সব বিমান সংস্থাকে অনুরোধ করেছে, আগামী কয়েকদিন কাশ্মীর থেকে অতিরিক্ত বিমান চালাতে প্রস্তুত থাকেন তারা।

বিশ্ব বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর