ঢাকা, ১৯ মার্চ মঙ্গলবার, ২০২৪ || ৫ চৈত্র ১৪৩০
good-food
১০১৫

চলে গেলেন এরশাদ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২০:২০ ১৪ জুলাই ২০১৯  

সাবেক রাষ্ট্রপতি, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান একাদশ জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)
সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি রোববার সকাল পৌনে ৮টায় ইন্তেকাল করেন।  

পল্লীবন্ধু এরশাদ বিগত দিন যাবত সিএমএইচ- লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) তার মৃত্যু সংবাদটি নিশ্চিত করে। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। তিনি দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।

ভাইয়ের শারীরিক অবস্থার কথা জানাতে গিয়ে জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জি এম কাদের শনিবার বলেছিলেন, এরশাদের কোনো অঙ্গ আর স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে না। প্রতিদিন ডাকলে চোখে মেলে তাকানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু আজ তা করেননি।

জাতীয় পার্টি সূত্র জানায়, রোববার বাদ জোহর সেনা কেন্দ্রীয় মসজিদে এরশাদের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে তার মরদেহ সিএমএইচ-এর হিমঘরে রাখা হবে। আগামীকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় দ্বিতীয় জানাজা হবে। পরে মরদেহ কাকরাইল কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের দেখার জন্য রাখা হবে। এরপর বাদ আছর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে তৃতীয় জানাজা হবে। জানাজা শেষে মরদেহ পুনরায় সিএমএইচ-এর হিমঘরে রাখা হবে।

তৃতীয় দিন মঙ্গলবার সকালে হেলিকপ্টার যোগে তাকে রংপুরে নিয়ে যাওয়া হবে। সকাল সাড়ে ১০টায় রংপুর ঈদগাহ মাঠে তার শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে ফের মরদেহ হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় নিয়ে এসে বাদ জোহর সেনা কবরস্থানে দাফন করা হবে।
এদিন থেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের জন্য শোক বই খোলা থাকবে।

সাবেক সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী জানিয়েছেন, বিকেল ৫টায় চট্টগ্রামের লালদিঘি ময়দানে এরশাদের গায়েবানা জানাজা হবে।

সাবেক সেনাপ্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ১৯৩০ সালের ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮২ সালে এক রক্তপাতহীন সামরিক অভূত্থানে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন হন। টানা বছর দেশ শাসন করেন। ১৯৯০ সালে গণতন্ত্রকামী মানুষের গণঅভূত্থানে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন। পরে বেশ কিছু অভিযোগে কারাবরণও করেন।

কারাগারে অন্তরীণ থাকা অবস্থায় ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুরের ৫টি আসনে নির্বাচিত হন। পরবর্তী প্রতিটি নির্বাচনে তিনি রংপুর থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
প্রথমে জাতীয় ফ্রন্ট পরে ফ্রন্ট নাম পরিবর্তন করে জাতীয় পার্টি নামে রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরবর্তীতে বেশ কিছু উপদলে বিভক্ত হয়ে নানাভাবে জাতীয় পার্টি নামেই রয়েছে। তবে এরশাদের জাতীয় পার্টিই তাদের মূল দলীয় প্রতীক লাঙ্গল নিয়ে সব নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর তিনি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এরশাদ ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫২ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। ১৯৭৫ সালের ২৪ আগস্ট ভারতে প্রশিক্ষণরত অবস্থায় মেজর জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি পান এবং উপসেনা প্রধান হিসেবে নিয়োগ পান।

এরশাদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদের স্পিকার . শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বি মিয়া, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পৃথক শোক জানিয়েছেন।
তারা মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।