ঢাকা, ২৬ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪ || ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৬০৮

ড্রাইভার নয়, আবরারকে খুন করে বাস কন্ডাকটর

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৯:৪০ ২৭ মার্চ ২০১৯  

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিউপি) ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরীকে চাপা দেয়া বাসটি লাইসেন্সধারী কোনো চালক চালাচ্ছিলেন না। সুপ্রভাত পরিবহনের ওই বাসের স্টিয়ারিংয়ে ছিলেন কন্ডাকটর। তার কোনো প্রশিক্ষণও ছিল না।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আব্দুল বাতেন এসব তথ্য জানিয়েছেন। বুধবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে পুলিশের গণমাধ্যম কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে  তিনি এ নিয়ে বিস্তারিত জানান।

তিনি বলেন, দুর্ঘটনার সময় সুপ্রভাতের বাসটি চালাচ্ছিলেন কন্ডাকটর ইয়াসিন। তার কোনো ড্রাইভার্স লাইসেন্স ছিল না।

ইতিমধ্যে বাসের কন্ডাকটর ও হেলপারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে চাঁদপুরের শাহরাস্তি থেকে ওই বাসের কন্ডাকটর ইয়াসিন এবং আজ সকালে ঢাকার মধ্যবাড্ডা থেকে ওই চালকের সহকারী ইব্রাহীমকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। ঝটিকা অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে এর সদস্যরা।

গেল ১৯ মার্চ ঢাকার প্রগতি সরণিতে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। পরে টানা দুই দিন রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে বিইউপিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। পরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়রের আশ্বাসে দাবি পূরণ শর্তে সাতদিন কর্মসূচি স্থগিত করেন তারা।

ওই দিনই বাসটির চালক সিরাজুল ইসলামকে (২৪) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আবরারের বাবা আরিফ আহমেদ চৌধুরীর করা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে সাত দিনের রিমান্ডে পাঠান আদালত।

মো. আব্দুল বাতেন বলেন, সিরাজুল ওই দিন ভোর পৌনে ৬টার দিকে সদরঘাট থেকে বাসটি নিয়ে রওনা হন। সহকারী ইব্রাহিম ও কন্ডাকটর ইয়াসিনও বাসে ছিলেন। শাহজাদপুর বাঁশতলায় সেই বাসের চাপায় গুরুতর আহত হন মিরপুর আইডিয়াল গার্লস ল্যাবরেটরি কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সিনথীয়া সুলতানা মুক্তা। এতে বাসের যাত্রীরা চালক সিরাজুলকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে।

তিনি বলেন,  ওই ঘটনার পর বাসটি রাস্তার পাশে দাঁড় করানো ছিল। উত্তেজিত জনতা তাতে আগুন ধরিয়ে দিতে পারে এমন আশঙ্কায় মালিক ননী গোপালকে ফোন করেন ইয়াসিন। মালিক তাকে দ্রুত বাসটি নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিতে বলেন।

পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বাসটি সেই এলাকা থেকে সরিয়ে নেয়ার সময় চালকের আসনে ছিলেন কন্ডাকটর ইয়াসিন। নর্দ্দায় প্রগতি সরণিতে বসুন্ধরা গেইটে সেটি আবরারকে চাপা দেয়। এতে  ঘটনাস্থলেই ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। তবে কন্ডাকটর পালিয়ে যান।

মর্মান্তিক দুর্ঘটার পর সেদিনই সুপ্রভাত পরিবহনের ওই বাসের রুট পারমিট বাতিল করে বিআরটিএ। পরে ঢাকা মহানগরীতে সুপ্রভাতের সব বাস ও মিনিবাস চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

মো. আব্দুল বাতেন বলেন, সিরাজুলকে ধরা হয়েছিল শাহজাদপুরের দুর্ঘটনার পর। নর্দ্দায় আবরারের দুর্ঘটনার কথা সে জানত না। ফলে তার বক্তব্য মিলছিল না। ইয়াসিন ও ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তারের পর বিষয়টি স্পষ্ট হয়।

জবানবন্দি দেয়ার জন্য ইয়াসিন ও ইব্রাহিমকে বুধবার আদালতে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।

এ মামলার অপর আসামি ননী গোপালকে গ্রেপ্তার করা হবে কি? অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, গ্রেপ্তার দুজনের জবানবন্দি নেয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় মামলা হয়েছে। মুক্তার আহত হওয়ার ঘটনাতেও মামলা হবে। এক মাসের মধ্যে আমরা তদন্ত প্রতিবেদন দেব।