ঢাকা, ১৯ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪ || ৬ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৬৭৩

দুধপানে মৃত্যু হলো মা ও ছেলের!

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০০:০০ ৩১ আগস্ট ২০১৯  

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে গাভীর দুধপানের পর মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে। 
এ ঘটনায় আরো একজন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। শিবগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের ছোট হাদিনগর গ্রামের মো. সাকিম আলীর স্ত্রী হাসনারা বেগম (৩০) ও তার ৯ বছরের শিশু সন্তান হাসিব রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়। বৃহস্পতিবার রাতে শিশু হাসিব ও শুক্রবার সকালে তার মা হাসনারা বেগম মারা যান। একই দুধ খেয়ে অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন নিহত শিশুর চাচি চাম্পা বেগম।

এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে প্রথমে শিশু হাসিবকে একই গ্রামের মফিজুলের গাভীর দুধ পান করতে দেন তার মা। দুধ খাবার কিছুক্ষণ পর শিশুটির বুক জ্বালাপোড়া করছে ও চোখে কম দেখছে বলে তার মাকে জানায়। শিশুটি তার মাকে আরো জানিয়েছে দুধ ক্ষেতে কেমন জানি টক টক লাগছিল।

এরপর তার মা হাসনারা বেগম ও চাচি চাম্পা বেগম একই দুধ পান করে। দুধ পানের পর সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাত ৯টার দিকে প্রথমে শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এরপর ১০টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও এরপর রাত ১২টার দিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তিনজনকে। বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে প্রথমে শিশু হাসিব ও শুক্রবার সকালে তার মা হাসনারা বেগম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

এ ঘটনায় পরিবারের অন্য সদস্যদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। শুক্রবার বিকেলে নিহত মা ও ছেলের নামাজে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এ বিষয়ে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস মোহা. খাইরুল আতাতুর্ক দুধ খেয়ে বিষক্রিয়ায় মা-ছেলের মৃত্যু, না অন্য কোনো খাদ্যে বিষক্রিয়া হয়েছিল কিনা সেটি তিনি নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি, সন্ধ্যায় তিনি আবারো জানান আননোন পয়জনিক কারণে তাদের মৃত্যু বলে ছাড়পত্রে উল্লেখ রয়েছে।

শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার (টিএইচএ) ডা. আখতার হোসেন জানান, এ্যানথ্রাক্সের কারণেও মৃত্যু হতে পারে, তবে কি কারণে মৃত্যু তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি তিনি।

গাভীর মালিক মফিজুল জানান, সকালে গোয়ালা আমার এই গাভীটি থেকে প্রায় আড়াই কেজি দুধ সংগ্রহ করে প্রতিদিন নিয়ে যায়, প্রতিদিন বিকেলে আবারো দ্বিতীয় দফায় আমি নিজেই সোয়া কেজির মতো দুধ সংগ্রহ করি, বিকেলের সংগৃহীত দুধ ১৭ দিন থেকে ভাতিজা সাকিমের বাড়িতে একপোয়া করে দুধ দিয়ে আসছি। বৃহস্পতিবার বিকেলে একই গ্রামের আলাউদ্দিনসহ আরো দুই পরিবারকে একই সময়ে দোহা (গাভীর দুধ সংগ্রহ) দুধ দিই, অন্য তিন পরিবারের সদস্যরা একই দুধ খেলেও কেউ অসুস্থ হয়নি।

আলাউদ্দিন জানান, আমাদের কোনো ক্ষতি হয়নি। নিহত হাসনারা স্বামী ও হাসিবের বাবা সাকিম জানান, আমি ও আমার ১১ বছরের মেয়ে আঁখি আগেই ঘুমিয়ে পড়ায় দুধ খাওয়া হয়নি, ভাগ করে এক পোয়া দুধ ছেলে-মেয়েকেই খাওয়ানো হতো। আমার ছেলে দুধ খাবার পর আমার পাশে বিছানায় এসে ঢলে পড়ে বমি করতে থাকে, কিছুক্ষণ পর আমার স্ত্রী হাসনারা ও ভাইবো চাম্পার একই অবস্থা হয়। 

সাবেক ইউপি সদস্য পিয়ারা বেগম জানান, শুনেছি মৃত্যুর প্রায় ১/২ ঘণ্টা আগে দুজনেরই পাতলা পায়খানা ও বমি হচ্ছিল। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা চাম্পা বেগমের ভাই আলামিন শুক্রবার সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে মোবাইলে জানান, চাম্পা বেগম শঙ্কামুক্ত নন। নিহত হাসিবের মরদেহ গোসলদাতা আতিকুল ইসলাম জানান, হাসিবের মরদেহতে কোনো দাগ, ক্ষত বা ফোসকার মতো কিছু দেখা যায়নি।