ঢাকা, ২০ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪ || ৭ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৯৪২

নতুন টোঙ্গা দ্বীপে প্রাণের স্পন্দন

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০৯:৩৩ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

সমুদ্রের মাঝে বছর চারেক আগে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে জেগে ওঠা বিস্ময়কর নতুন দ্বীপটিতে প্রাণের চিহ্ন খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
দ্বীপটি আপাতত হুঙ্গা টোঙ্গা-হুঙ্গা হা’আপেই নামে পরিচিতি পেয়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরের টোঙ্গার কাছে জেগে ওঠা এ দ্বীপে এখন ফুলের সমারোহ আর পাখির কলকাকলী।

‘সি এডুকেশন এসোসিয়েসন’ এবং নাসা’র বিজ্ঞানীরা গত অক্টোবরে দ্বীপটি দেখতে যান। এর আগে স্যাটেলাইট তোলা ছবি দিয়েই এ দ্বীপ পর্যবেক্ষণ করছিলেন তারা।

কিভাবে জেগে উঠেছিল এ দ্বীপ?

 
অস্ট্রেলিয়ার পূর্বে প্রশান্ত মহাসাগরের ১৭০ টির বেশি দ্বীপ নিয়ে গঠিত টোঙ্গার রাজধানী থেকে ৪৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে নতুন এ দ্বীপটি জেগে ওঠে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে।

ওই সময় ফুঁসে উঠেছিল সাগরতলের হুঙ্গা টোঙ্গা আগ্নেয়গিরি। এর অগ্নুৎপাত থেকে উদগীরণ হওয়া ছাই, লাভাই পরে থিতু হয়ে পানির ওপরে জমে শক্ত হয়ে ৫শ’ মিটার লম্বা ও আড়াইশ’ মিটার উঁচু এ দ্বীপ সৃষ্টি হয়। কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে তোলা ছবি পর্যালোচনা করে এমনটিই জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা।

হুঙ্গা টোঙ্গা ও হুঙ্গা হা’আপেই নামের দু’টি পুরনো দ্বীপের মাঝখানে নতুন  দ্বীপটি জেগে ওঠায় এর নাম হয়েছে ‘হুঙ্গা টোঙ্গা-হুঙ্গা হা’আপেই’।

সমুদ্রের নিচে আগ্নেয়গিরি ফুঁসে উঠে দ্বীপ তৈরি হওয়া নতুন কিছু নয়। কিন্তু এই হুঙ্গা টোঙ্গা দ্বীপটি এক আশ্চর্য দ্বীপ বলেই অভিমত বিজ্ঞানীদের। কারণ, সাধারণত এমন দ্বীপগুলো কয়েক মাস জেগে থাকে, তারপর তলিয়ে যায় সমুদ্রে। অথচ এ দ্বীপটি টিকে আছে চার বছর ধরে। গত দেড়’শ বছরের ইতিহাসে এত বেশিদিন কোনো দ্বীপ টিকে থাকেনি।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এক্ষেত্রে খুব সম্ভবত আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের সঙ্গে সমুদ্রের পানির রাসায়নিক বিক্রিয়া হয়ে এটি টিকে থাকার মত বেশি মজবুত হয়েছে। অনেকটা আইসল্যান্ডে ১৯৬০ এর দশকে একইভাবে জেগে ওঠা একটি দ্বীপের মতো।

নাসার গবেষক ড্যান স্লেব্যাক সহ আরো কয়েকজন বিজ্ঞানী অক্টোবরে দ্বীপটিতে ঘুরতে গিয়ে সেখানে গোলাপি রঙের ফুল ফোটা গাছ, টার্ন পাখি এমনকি পেঁচাও দেখেছেন।

আশেপাশের দ্বীপ থেকে পাখি ওই দ্বীপে এসেছে এবং তাদের আনা বীজ থেকেই গাছপালা সেখানে জন্মেছে বলে ধারণা তাদের।

দ্বীপটির মাটি হালকা রঙের, চটচটে কাদামাটির মতো। আর এ মাটি বেশ উর্বর বলেও মত বিজ্ঞানীদের।

কতদিন টিকবে এ দ্বীপ?
 
নাসা ২০১৭ সালে ধারণা প্রকাশ করে বলেছিল, দ্বীপটি ৬ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত টিকতে পারে। কিন্তু দ্বীপটি ঘুরে দেখার পর আর এতটা আশাবাদী নন বিজ্ঞানীরা।

নাসার গবেষক স্লেব্যাক বলেছেন, যতটা ধারণা করা হয়েছিল তার চেয়েও বেশি দ্রুত ক্ষয়ে যাচ্ছে দ্বীপটি। হুঙ্গা টোঙ্গা-হুঙ্গা হা’আপেই হয়ত আর বেশিদিন টিকবে না।

তিনি বলেন, “বৃষ্টির কারণে দ্বীপটির মাটি ক্ষয়ে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। সুতরাং, ক্রমাগত প্রবল বৃষ্টিপাত হতে থাকলে দ্বীপটি হয়ত আর মাত্র এক দশক টিকতে পারে। কিংবা তাও থাকবে কিনা সেটি বলা মুশকিল। ভাগ্য ভাল হলে দ্বীপটি আরো বেশিদিনও টিকতে পারে।”

যাই হোক, দ্বীপটি যে এতদিন ধরে টিকে আছে এটিও ‘কম কিছু নয়’ বলেই মন্তব্য করেছেন স্লেব্যাক।