ঢাকা, ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ১৪ চৈত্র ১৪৩০
good-food
৪৫৬

পদ্মাসেতুর ওপর দিয়ে যাওয়ার আগে ক্ষমা চান

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২০:৫৬ ১৫ ডিসেম্বর ২০২০  

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, পদ্মাসেতু রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি এবং বিএনপি’র উচিত এর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জন্য ক্ষমা চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানানো।

 

মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জ্যঁ মারিন শুহ’র সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, তথ্যসচিব খাজা মিয়া, ফরাসি দূতাবাসের ইকোনোমিক কাউন্সিলর পিয়েরে-হেনরি লেফোঁ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের মন্তব্য ‘মনে হয় পদ্মাসেতু তাদের পৈতৃক সম্পত্তি’ এর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, পদ্মাসেতু অবশ্যই একটি রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দূরদর্শী নেতৃত্ব ও সময়োচিত পদক্ষেপ গ্রহণ করে নিজস্ব অর্থায়নে এটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়ে এই সম্পত্তি রাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত করেছেন। আজকে সেতু দৃশ্যমান,েএর মাধ্যমে পদ্মার দুই কূল-দুই পার সংযুক্ত হয়েছে। অর্থাৎ পদ্মাসেতুর কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে।

 

কিন্তু এটি যাতে না হয়, সেজন্য বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে এবং সেই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে বিএনপিও যুক্ত ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেবের দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ পদ্মাসেতু করতে পারবে না, পারবে না, পারবে না। অর্থাৎ খুব জোর দিয়ে বলেছিলেন। এটাও বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ যদি জোড়াতালি দিয়ে কোনো সেতু বানায়ও সেটার ওপর দিয়ে কেউ যাবে না। সেজন্যই প্রশ্ন রেখেছিলাম, বিএনপি কি সেতুর ওপর দিয়ে যাবে না নিচে দিয়ে।

 

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ফখরুল সাহেবের কথায় মনে হচ্ছে তারা ওপর দিয়েই যাবে। এটি ভালো, তবে ওপর দিয়ে যাওয়ার আগে তাদের ষড়যন্ত্রের জন্য ক্ষমা চেয়ে সরকারকে একটা ধন্যবাদ দেয়া প্রয়োজন। কারণ, তাদের সমস্ত ষড়যন্ত্র, নেতিবাচক প্রচারণা সত্ত্বেও আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব, পদক্ষেপ এবং সবচেয়ে বড় কথা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু প্রায় নির্মিত হয়ে গেছে।

 

জিয়ার আমল থেকেই পদ্মাসেতু নির্মাণ শুরু হয়েছে এ ধরনের মন্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, মোঘল আমল-সুলতানী আমল থেকেই দেশে সেতু নির্মাণ শুরু হয়েছে। আর জিয়াউর রহমানের আমলে কিছু রাজনৈতিক নেতাদের কেনাবেচা হয়েছে। সেই সময় একটি ধনী শ্রেণি ও ব্যাংক লুটেরা তৈরি করে দলীয় সমর্থিত ব্যবসায়ী-বিএনপি নেতাদের ব্যাংক থেকে লোন দেয়া শুরু হয়, যে লোন শোধ করা হয় নাই। অর্থাৎ লুটপাটটা শুরু হয়েছিল জিয়ার আমলে আর তার ষোলকলা পূর্ণ হয়েছে খালেদা জিয়ার আমলে।

 

এসময় ভাস্কর্য নিয়ে অন্যান্যদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচনায় বসার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, রাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তিনি যে কারো সঙ্গেই বসতে পারেন। যারা নিজের জন্মের তারিখ বদলে দিয়ে ১৫ আগস্ট কেক কাটে, তাদের সঙ্গেও সরকার বসেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বসেছেন। যারা সরকারকে প্রতিদিন টেনে নামিয়ে ফেলার হুমকি দেয়, তাদের সঙ্গেও আমরা বসেছি।

 

এখানে বিভ্রান্তির কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার বিভিন্ন মতের মানুষের সঙ্গে বসতেই পারে। এটি গণতান্ত্রিক দেশ। সুতরাং যারা ভাস্কর্য ইস্যুতে বিরূপ মন্তব্য করছেন, তাদের সঙ্গে সরকার বসতেই পারে। কিন্তু বিভিন্ন  মতের সঙ্গে বসা মানে এই নয় যে আমরা আমাদের অবস্থান থেকে বিচ্যূত হয়েছি।  

 

মন্ত্রী বলেন, আমাদের অবস্থান অপরিবর্তিত এবং সমস্ত মৌলবাদী অপশক্তি, যারা এই দেশটাকে পিছিয়ে দিতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি-ঐক্য-সংহতি নিয়ে দেশ এগিয়ে যাবে। সকল ইসলামী দেশসহ সারাবিশ্বের মতো এখানে এই দেশে শত শত বছর ধরে ভাস্কর্য ছিল, আছে ও থাকবে। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যও নির্মিত হবে।

 

ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা দু’দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক, একইসঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নিয়ে এবং বাংলাদেশে ফরাসি বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা করেছি। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং আইপিটিভিসহ নানা ইন্টারনেটভিত্তিক প্রচার মাধ্যমের কারণে ইউরোপেও যে নানাভাবে অনেক সময় গুজব, বিশৃঙ্খলা ও সামাজিক অস্থিরতা তৈরি হয়, যেগুলো আমাদের দেশেও ঘটে, তার প্রতিকারে ইউরোপীয় ইউনিয়নে কি ধরনের আইন-নীতিমালা আছে বা প্রণয়ন চলছে, সেগুলো নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি।