ঢাকা, ২৪ এপ্রিল বুধবার, ২০২৪ || ১০ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৬৫৯

পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে: প্রধানমন্ত্রী

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:২৬ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুলিশ বাহিনীকে জনবান্ধব প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে তার সরকারের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেছেন, বিদ্যমান চাহিদার নিরিখে প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকবে।
২০০৯ সালে পুলিশ জনসংখ্যার অনুপাত ছিল :১৩৫৫। কিন্তু তার সরকারের আমলে অনুপাত :৮০১ বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী দিনের চাহিদা পূরণ এবং পুলিশ জনসংখ্যার অনুপাত উন্নয়নে পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকবে।
তিনি সোমবার রাজারবাগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনসে পুলিশ সপ্তাহ-২০১৯ উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাহিনীর প্রয়োজনীয় আধুনিক যানবাহন-সরঞ্জামাদি অস্ত্র সরবরাহ, ভূমি সংস্থান, অবকাঠামো নির্মাণ, প্রশিক্ষণ সার্বিক সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ পুলিশ সদস্যদের কল্যাণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে জনবান্ধব পুলিশ গঠনের ওপর গুরুত্বারোপের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইন-শৃঙ্খলা খাতে বরাদ্দকৃত অর্থকে আমরা ব্যয় নয়। বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করি। আমাদের সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের ফলে পুলিশ বাহিনীতে দৃশ্যমান পরিবর্তন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বর্তমান মেয়াদেও বাংলাদেশ পুলিশের উন্নয়নে আমাদের প্রয়াস অব্যাহত থাকবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল, মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) জাভেদ পাটোয়ারী এবং সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা, বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতা এবং সুশীল সমাজের সদস্য অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী পেশাগত দক্ষতার স্বীকৃতি হিসেবে ৩৪৯ পুলিশ সদস্যকে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) এবং রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদকে (পিপিএম) ভূষিত করেন। এর মধ্যে ১০৪ জন বিপিএম (সেবা) ৪০ জন বিপিএম (সাহসিকতা) এবং ১৪৩ জন পিপিএম (সেবা) ৬২ জন পিপিএম (সাহসিকতা) পদক অর্জন করেন।
প্রধানমন্ত্রী পুলিশকে আরো বেশি করে সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালনে আহ্বান জানিয়ে আশা প্রকাশ করেন, পদকপ্রাপ্তি তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে আরো বেশি উদ্দীপনা প্রেরনা যোগাবে।
পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে সকালে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনে বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়। শেখ হাসিনা কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ প্যারেড পরিদর্শন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের সমস্যাকে দেখতে হবে একান্ত আন্তরিক মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে। জনগণের মনে পুলিশ সম্পর্কে যেন অমূলক ভীতি না থাকে সেজন্য তাদের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, পুলিশকে আমরা সবসময় আইনের রক্ষকের ভূমিকায়জনবান্ধব পুলিশহিসেবে দেখতে চাই। এজন্য পুলিশ সদস্যদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় জনগণের মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার আইনের শাসনকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে।
তিনি বলেন, শান্তি, নিরাপত্তা শৃঙ্খলার প্রতীক বাংলাদেশ পুলিশ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ বাংলাদেশ পুলিশ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ দেশমাতৃকার সেবায় সর্বদা পেশাদারিত্ব সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, সম্প্রতি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রেখে পুলিশ সদস্যগণ পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। এজন্য বাংলাদেশ পুলিশের সব সদস্যকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, বিগত ২০১৩, ২০১৪ ২০১৫ সালে গণতন্ত্র বিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী, জনবিচ্ছিন্ন সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী বিএনপি-জামায়াত তাদের দোসররা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার অপপ্রয়াস চালায়। সেই অশুভ শক্তি সারাদেশে হরতাল, অবরোধ, সহিংসতা, নাশকতা, জ্বালাও-পোড়াও, আগুন সন্ত্রাস, নিরীহ মানুষ হত্যা রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংসের অপচেষ্টা চালিয়েছিল। সেদিন পুলিশ সদস্যগণ পেশাদারিত্ব সাহসিকতার সঙ্গে তাদের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড রুখে দিয়েছিল।
সরকার প্রধান বলেন, ২০১৬ সালে হোলি আর্টিজানে এবং শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলা হয়। পুলিশ বাহিনী সুদৃঢ় মনোবল, অসীম সাহসিকতা দক্ষতার সাথে কাজ করে জঙ্গি সংগঠনগুলোর সাংগঠনিক ভিত্তি ভেঙ্গে দিতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি তার ওপর কয়েকবার সন্ত্রাসী হামলার কথা উল্লেখ করে বলেন, সন্ত্রাস সহিংস জঙ্গিবাদ শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়নের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। সন্ত্রাসীর কোন ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নেই।
প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন, এখন থেকে দায়িত্ব পালনকালে কোনো পুলিশ সদস্য নিহত হলে তার পরিবার লাখ টাকা পাবেন।