ঢাকা, ২৭ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪ || ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৮০

বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়কদের ৯ শতাংশ শিক্ষক, ৫৬ শতাংশ সহপাঠী

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১১:২৯ ১৭ মার্চ ২০২৪  

দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিস্থিতি  উঠে এসেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের গবেষণায়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল আলীম উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি নিয়ে একটি গবেষণায় দেখতে পান বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়কদের মধ্যে ৯ শতাংশই শিক্ষক। তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০ ছাত্রীর ওপর ২০২২ সালের অক্টোর থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ওই গবেষণাটি পরিচালনা করেন।

 

গবেষণার শিরোনাম ‘স্ট্র্যাটেজিস ফর প্রিভেন্টিং মাসকুলিনিটি অ্যান্ড জেন্ডার বেজ্ড ভায়োলেন্স ইন হায়ার এডুকেশনাল ইনস্টিটিউশন ইন বাংলাদেশ: আ স্টাডি অব রাজশাহী ইউনিভার্সিটি’। গবেষণায় অংশ নেওয়াদের দেওয়া তথ্য মতে, ৫৬ শতাংশ যৌন নিপীড়কই ছাত্রীদের সহপাঠী। ২৪ শতাংশ তাদের চেয়ে ছোট বা বড়। ১১ শতাংশ বহিরাগত ও ৯ শতাংশ শিক্ষক।

 

১০ শতাংশ ছাত্রী জানান, নির্যাতনের ৩০ শতাংশ বাজে মন্তব্য ও ৬০ শতাংশ সাইবার হয়রানি। নিপীড়নের ঘটনায় মাত্র ১০ শতাংশ ছাত্রী অভিযোগ করেছেন। এর মধ্যে পাঁচ শতাংশ বিভাগের শিক্ষকদের কাছে এবং বাকি পাঁচ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযোগ সেলে। ৯০ শতাংশ জানান, ন্যায়বিচার না পাওয়া ও চরিত্র হননের ভয়ে তারা সেলে অভিযোগ করেননি।


‘যারা যৌন নিপীড়ক তারা রাজনৈতিক বা অন্য কোনোভাবে প্রভাবশালী। তাদের রক্ষার জন্য রাজনৈতিক এবং প্রভাবশালীদের চাপ থাকে। ফলে অনেক ঘটনাই ধামাচাপা দেয়া হয়। অনেক ঘটনার বিচার হয় না।’

 

বাংলাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানির ওপর এর বাইরে আলাদা কোনো জরিপ নেই। তবে ২০২১ সালে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের ‘চ্যালেঞ্জিং ফিয়ার অব ভায়োলেন্স' শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয় জনসমাগমস্থলে ৮১ ভাগ নারী যৌন হয়রানির শিকার হন। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সিনিয়র সহপাঠী ও শিক্ষকদের মাধ্যমে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন, হয়রানি ও ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের শিকার হচ্ছেন ৭৪ শতাংশ। ২০২২ সালে ডাটা ফর ইমপ্যাক্ট-এর এক জরিপে বলা হয় বাংলাদেশে অবিবাহিত মেয়েদের প্রতি তিনজনে একজন ১২ মাসে (এক বছর) কমপক্ষে একবার যৌন হয়রানির শিকার হন।

 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থী আত্মহত্যার পর তাই সুইসাড নোটে স্পষ্ট হয়েছে যে তিনি যৌন হয়রানিমূলক মন্তব্য ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন দিনের পর দিন। ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রোক্টর দ্বীন ইসলামকে বরখাস্ত এবং ছাত্র সিদ্দিক আম্মানকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তাদের আটকও করা হয়েছে।

 

যৌন হয়রানির অভিযোগে ময়মনসিংহের কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহাকে বরখাস্ত এবং বিভাগীয় প্রধান রেজোয়ান আহমেদ শুভ্রকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্ট্যাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ শাইখ ইমতিয়াজ বলেন, ‘প্রথমত যখন কোনো ঘটনা ঘটে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। আরেকটি হলো এটা যাতে না ঘটে তার ব্যবস্থা নেওয়া। এর কোনোটিই আমরা দেখি না।’

অপরাধ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর