ঢাকা, ১৬ এপ্রিল মঙ্গলবার, ২০২৪ || ৩ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৩৩৭

মাত্রাতিরিক্ত দূষণের পরও গঙ্গার পানি পরিশুদ্ধ হয় কেন? রহস্য কী?

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০২:০২ ১৪ জানুয়ারি ২০২৩  

ভারতে সর্বোচ্চ দূষণের শিকার অন্যতম নদী গঙ্গা। শিল্প-কারখানা থেকে শুরু করে মনুষ্য বর্জে্য মাত্রাতিরিক্ত দূষিত হয় এটি। তবে এর পরিশোধন ক্ষমতাও বেশি। সেসব বর্জে্যর বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো উপাদান রয়েছে নদীটিতেই।


এক শতাব্দী ধরে তা দেখে আসছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, গঙ্গার পানিতে প্রচুর ব্যাকটেরিওফাজ আছে। ফলে পানি পরিশুদ্ধ হয়ে যায়।

 

সাধারণত, ব্যাকটেরিওফাজ এক প্রকার ভাইরাস। ব্যাকটেরিয়াকে যা ধ্বংস করতে সক্ষম। সব নদীতেই কমবেশি তা থাকে। তবে গঙ্গার পানিতে ব্যাকটেরিওফাজ বেশি। 

 

গঙ্গার তীরে ব্যাপক পূজা-পার্বণ, আচার-অনুষ্ঠান হয়। এতে নদীটিতে প্রচুর ব্যাকটেরিয়ার সমাগম ঘটে। তবে সেখানে বিদ্যমান ব্যাকটেরিওফাজ তা ধ্বংস করে দেয়। ফলে ভারসাম্য তৈরি হয়।

 

গঙ্গায় ব্যাকটেরিওফাজ বেশি থাকার কারণ অনুসন্ধান করেছেন ভারতের ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইন্সটিটিউট (এনইইআরআই)। প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী কৃষ্ণা খাইরনার ডেকান হেরাল্ডকে বলেন, গঙ্গায় দীর্ঘকাল ধরে ব্যাকটেরিওফাজের অস্তিত্ব আছে। অন্যান্য নদীর তুলনায় যা অধিক কার্যকরী। তবে এর কারণ জানা যায়নি। সেই রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে। এজন্য নদীটির পলিমাটি নিয়ে গবেষণা করছি আমরা।

 

তিনি বলেন, গঙ্গার পলিমাটি হয়তো কোনো কিছু সরবরাহ করে। যাতে ব্যাকটেরিওফাজ বছরের পর বছর নদীতে নিরাপদ থাকে। এটি উত্তর কাশী থেকে বারাণসী হয়ে পাটনায় মতো ভিন্ন অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হয়। তাই ভৌগোলিকভাবে আলাদা এসব অঞ্চলের পলিমাটিতে বিশেষ কোনো বৈশিষ্ট্য থাকতে পারে।

 

করোনা মহামারি শুরুর আগে বিজ্ঞানী খাইরনার ও তার সহযোগী গবেষকরা গঙ্গার প্রায় ৩৮টি ভিন্ন জায়গা থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করেন। 'ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা' প্রকল্পের অংশ হিসেবে তা নেয়া হয়। পরে যমুনা ও নর্মদার পানির সঙ্গে নমুনাগুলোর তুলনা করা হয়। 

 

এতে দেখা যায়, গঙ্গার পানিতে প্রায় ১৪৩ ধরনের ব্যাকটেরিওফাজ আছে। যমুনা ও নর্মদার চেয়ে যা অনেক বেশি। দেড় শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে ব্যাকটেরিওফাজ গঙ্গায় প্রতিনিয়ত ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

 

বিজ্ঞানী খাইরনার বলেন, গঙ্গার পলিমাটি ব্যাকটেরিওফাজকে প্রায় তিন বছর রুম টেম্পারেচারে রাখে। ফলে ভাইরাসটি দীর্ঘদিন টিকে থাকে। সেই সঙ্গে ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে অনেক কার্যকরী ভূমিকা রাখে। নদীর পলিমাটিগুলোর রাসায়নিক ধরন সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করে শিগগিরই এই রহস্য উদঘাটন করা যাবে বলে মনে করেন তিনি।

ফিচার বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর