ঢাকা, ০৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার, ২০২৫ || ২২ কার্তিক ১৪৩২
good-food
৬৮৩

কর্তৃপক্ষের গাফিলতি, যৌন হয়রানির শিকার মাদ্রাসা ছাত্রীরা!

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:২১ ২৯ জুলাই ২০১৯  

১১জন ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে নারায়ণগঞ্জে একটি মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। পুলিশের বিশেষ বাহিনী র্যাব শনিবার তাকে আটক করে।

এর আগে সেখানকার আরেকটি মাদ্রাসায় ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করা হয়। সম্প্রতি এসব ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে: কর্তৃপক্ষ এসব আবাসিক ও কওমী মাদ্রাসার ওপর কতটা নজর রাখছে?

নারায়ণগঞ্জে র্যারের কোম্পানি কমান্ডার মেজর তালুকদার নাজমুস সাকিব বলেন, দুজন ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকের অভিযোগের পর তারা ওই মাদ্রাসাটির ওপর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়ে দেন।

তিনি বলেন, এ মাদ্রাসার বড় হুজুরের বিরুদ্ধে আগেই ভাসা ভাসা এমন সব কথা শোনা গেছে। প্রাথমিক সত্যতার পর আমরা মাদ্রাসায় অভিযান চালাই। তাকে গ্রেফতার করি। প্রথমে তার চারজন শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের কথা শোনা গিয়েছিল। পরে সে-ই ১১জনকে যৌন নির্যাতনের কথা স্বীকার করে।

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ অধ্যক্ষ জানিয়েছেন মাদ্রাসাটি কওমী মাদ্রাসার অন্তর্ভুক্ত। কওমী মাদ্রাসার একটি পরীক্ষাকেন্দ্রও ছিল এটি।

১৯৭৮ সালের 'বাংলাদেশ মাদ্রাসা এডুকেশন অর্ডিন্যান্সে' বলা হয়, অন্তর্ভুক্ত বা তা নয় এমন সব মাদ্রাসার ব্যাপারে তদন্ত করা, নিয়ন্ত্রণ করা এবং প্রশাসনিক ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার সম্পূর্ণ ক্ষমতা রয়েছে বোর্ডের।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিষয়ক বিভাগের শিক্ষক খন্দকার ফারজানা রহমান মাদ্রাসায় যৌন নির্যাতনের বিষয়ে গবেষণা করছেন। তিনি বলছেন, এ বিষয়ে মাদ্রাসা বোর্ডগুলোর তত্ত্বাবধানের অভাব রয়েছে। সেটা একেবারে পরিষ্কার। এ ব্যবস্থার ওপর সঠিক পর্যবেক্ষণ নেই। যথেষ্ট জবাবদিহিতার অভাব রয়েছে।

তিনি বলেন, বোর্ড বলছে; মাদ্রাসাগুলো তাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। তাদের কিছু করার নেই। দায় এড়িয়ে চলার প্রবণতা রয়েছে। তারা আসলে কোনও দায়িত্ব নিতে চাচ্ছে না। এমনকি আইনে যা বলা হয়েছে, সেটাও তারা মানছে না।

সংবাদ মাধ্যমে মাদ্রাসায় এমন একাধিক ধর্ষণের ঘটনার খবর পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে কি ব্যবস্থা নিতে পারছে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড?

কওমী মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের (বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ' নামে পরিচিত) সহ-সভাপতি মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, মাদ্রাসার নামে অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। একটা তদন্ত কমিটি গঠন করে এদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছেন তারা।

তিনি বলেন, প্রথমত এরা কী করছে সেটা দেখার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। এ কমিটি দেখছে আসলে এরা কারা। সেখানে কোনও অনৈতিক ঘটনা হলে নিশ্চয়ই আমাদের কাছে সুপারিশ আসবে। সেই অনুযায়ী ইনশাআল্লাহ আমরা ব্যবস্থা নেব।

কওমী শিক্ষা বোর্ড বলছে, যে দুটি মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটেছে - সেগুলো তার অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মাদ্রাসা শিক্ষা আইন অনুযায়ী; কোনও শিক্ষা বোর্ডের এসব ঘটনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই।