ঢাকা, ২৬ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪ || ১২ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৯৩২

ধর্ষণ বন্ধে জরুরি পর্ণোগ্রাফি-অধপতনমূলক বিজ্ঞাপন বন্ধ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৩:২৫ ১০ জুলাই ২০১৯  

নারী-শিশু নির্যাতন-ধর্ষণ যে হারে বড়েছে, তাতে শংকিত মানুষ। ভয়ংকর মানুষরূপী দানবদের নৃশংসতা ও হীন লালসার শিকার হয়ে মৃত্যুকে বরন করতে হচ্ছে অনেক শিশু ও নারীকে। 

 

ভয়ংকর এ সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে মানুষ সোচ্চার হলেও এর মাত্রা কমছে না কিছুতেই। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে সচেতন মানুষ নানা প্রতিক্রিয়া ও মতামত দিচ্ছেন। 

 

সামাজিক অপরাধ ও ধর্ষণ প্রতিরোধে যৌক্তিক পদক্ষেপ নেয়ারও সুপারিশ আসছে বিশিষ্টজনদের কাছ থেকে। 

 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম - ফেসবুকের নিজস্ব পেজে আলোচিত এ বিষয়টি নিয়ে নিজস্ব প্রতিক্রিয়া ও মতামত  দিয়েছেন  পুলিশের ডিআইজি নজরুল ইসলাম। 

 

সুচিন্তিত লেখায় তিনি বলেন :  

 

ধর্ষণ বাড়ছে। আরও বাড়বে !

 

সমাজবিজ্ঞানী বার্কোভিচের ’পর্যবেক্ষণ শিক্ষন  তত্ত্ব বিশ্লেষণ করুন। বিশ্লেষণ করুন প্রফেসর ভ্লাদিমির ব্রাটিচের গবেষণা। মানুষ যা দেখে - সেটা তার আচরণে প্রভাব ফেলে।

 

মার্কিন গবেষণায় এটা প্রমানিত যে, পর্ণোগ্রাফিতে আসক্ত মানুষরা বিপরীত লিঙ্গের মানুষকে জৈবিক সম্পর্কের বাইরে ভাবতে পারে না। ওই আসক্তিতে মত্ত কোন ছেলের কাছে কেন প্রত্যাশা করি যে সে তার প্রেমিকাকে চন্ডিদাস, দেবদাস, মজনুর গভীর ও নিস্পাপ ভালোবাসার দৃষ্টিতে দেখবে!

 

এ যুগে কোন মেয়ে রজকিনী, পার্বতী, লাইলি এমনকি বনলতার মর্যাদাও পায় না।

 

একই কথা প্রযোজ্য পর্ণো আসক্ত মেয়েদের বেলায়।

 

এখন মানুষের নৈতিকতা নির্ধারণ করে দেয় বহুজাতিক কোম্পানী। কেউ আমাদেরকে পর্ণোগ্রাফিক নাশকতায় আসক্ত করে। ইন্টারনেট ভরে ফ্রি উপহার দেয় পর্ণোগ্রাফি।

 

অনেক পন্ডিতের (প্রফেসর এমিরটাস রবার্ট রাইনার প্রমূখের) দৃষ্টিতে এটা সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক নাশকতা। সেই নাশকতার অংশ হিসেবেই কেউ কেউ টুথপেস্টের বিজ্ঞাপন দিতে গিয়ে বলে- কাছে এসো, কাছে এসা না। কেউ শিক্ষা দেয় চার-ছক্কার যুগে টেষ্ট ইনিংশের ভালোবাসা অচল। কেউ ওষুধের বিজ্ঞাপন দিয়ে বলে- ভালোবাসায় ভিজিয়ে দাও, ভিজিয়ে দাও না। সেই ভিজিয়ে দেয়ার শিক্ষাটা দেয়ার পর আমরা কেন শুকনো ভালোবাসা প্রত্যাশা করছি?

 

প্রাত্যহিক সবকিছুতেই জৈবিক চিন্তা জুড়ে দেয়া কি অতীব জরুরী?

 

অবারিত পর্ণগ্রাফিক আসক্তির মুখে মানুষকে ঠেলে দিয়ে, তাদের মনন, চিন্তাশক্তিকে জৈবিক নেশার ঘোরে বিষাক্ত করছি। তারপর প্রত্যাশা করছি মানুষ সৎ হবে। অসৎ চিন্তায় হৃদয় মস্তিস্ক আচ্ছন্ন রেখে কতক্ষণ সৎ আচরণের অভিনয় করা যায়? কি দারুন আমাদের চাওয়া!

 

পর্ণোগ্রাফি দেখা, উৎপাদন, বিপনন তো বাংলাদেশের আইনে অপরাধ। তাহলে বাংলাদেশের ইন্টারনেটে অবারিত এবং উন্মুক্ত পর্নোগ্রাফি কেন? সেটা কি বন্ধ করা যায় না? অসৎ চিন্তা ও আচরণে সুড়সুড়ি দেয়া বিজ্ঞাপন কি বদলে দেয়া যায় না? খুব সহজেই সেটা সম্ভব। সাবমেরিন কেবলের গেটওয়েতে সেন্সরশীপ চালু হোক।  বন্ধ হোক নৈতিক অধপতনমূলক বিজ্ঞাপন। সেটা আজকেই নয় কেন?