ঢাকা, ২৭ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪ || ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৫৫৩

পিপিই নিশ্চিত করতে সরকারকে আইনি নোটিশ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২২:৪৪ ৩০ মার্চ ২০২০  

চিকিৎসক এবং চিকিৎসাসেবার সঙ্গে যুক্ত সবার জন্য মানসম্মত পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) বা ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম নিশ্চিত করতে সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী।

ডাক যোগাযোগ বন্ধ থাকায় সোমবার (৩০ মার্চ) সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে ই-মেইলে জনস্বার্থে এ নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিংকন। তিনি নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।

নোটিশে আগামী সাত দিনের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, সরকারের করোনা প্রতিরোধ সেলকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় উচ্চ আদালতে আইনি প্রতিকার চেয়ে রিট আবেদন করে এর প্রতিকার চাওয়া হবে।

নোটিশে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করেছে। এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি জরুরি করোনাভাইরাস চিকিৎসার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা। কারণ এটি সংক্রামক ব্যধি। এ রোগের চিকিৎসার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের পর্যাপ্ত প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা না থাকলে সংক্রামক ব্যক্তি থেকে চিকিৎসকরা এতে সংক্রমিত হতে পারেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরিপ থেকে দেখা যায়, বিশ্বব্যাপী এ রোগে আক্রান্তদের মধ্যে ১০ ভাগই চিকিৎসাসেবার সঙ্গে যুক্ত। এ কারণে মানসম্মত পিপিই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

নোটিশে আরও বলা হয়, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর আসছে, ব্যাপক চাহিদার কারণে আমাদের দেশের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পিপিই তৈরি করছে, যা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। কিন্তু প্রশ্ন হলো, পিপিইতে সংক্রমণ প্রতিরোধের যেসব প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন সেটি নিশ্চিত করা হচ্ছে কিনা? কারণ আমরা ইতোমধ্যে লক্ষ্য করেছি পিপিই ব্যবস্থা নেয়ার পরও চিকিৎসকরা আক্রান্ত হচ্ছেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতর পিপিই ব্যবহারে একটি নীতিমালা তৈরি করেছে, যার ব্যাপক প্রচার জরুরি। এখন আমাদের সব থেকে বেশি জরুরি করোনা রোগীদের চিকিৎসায় যারা নিয়োজিত তাদের যেসব পিপিই সরবরাহ করা হচ্ছে সেগুলোর সঠিক মান নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে কি-না, তা নিশ্চিত করা। কারণ একজন চিকিৎসক যখন চিকিৎসা দেবেন তখন তিনি নিজেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ ভাববেন। কিন্তু সেই পিপিই যদি সংক্রমণ প্রতিরোধে সক্ষম না হয় তাহলে চিকিৎসাকর্মী সংক্রমিত হবেন। যা ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনতে পারে এবং করোনা নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করতে পারে।

তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পিপিই সরবরাহের আগে সেটি সঠিক মান নিয়ন্ত্রণ করে তৈরি হচ্ছে কি-না, বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার জন্য দেশের রফতানিমুখী ১২টি পোশাক কারখানায় পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) তৈরি হচ্ছে। তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর তত্ত্বাবধানে কারখানাগুলো কাজ করছে।

কারখানাগুলোর মধ্যে স্নোটেক্স আউটারওয়্যার প্রাথমিকভাবে বিনা মূল্যে বিতরণের জন্য ১৭ হাজার পিপিই বানানোর উদ্যোগ নিয়েছে। গত শনিবার থেকে প্রতিদিন দুই হাজার করে পিপিই উৎপাদন করছে প্রতিষ্ঠানটি। ৫ এপ্রিল কারখানা পুরোদমে খুললে তাদের পিপিই উৎপাদনক্ষমতা বেড়ে দাঁড়াবে প্রতিদিন ৫-১০ হাজার পিস।

জানা গেছে, আজমি ফ্যাশন, অ্যালায়েন্স অ্যাপারেলস, জেএম ফেব্রিকস, লাক্সমা ইনওয়্যার, উর্মি গার্মেন্টস, স্নোটেক্স আউটারওয়্যার, টিআরজেড গার্মেন্টস, ফোরএ ইয়ার্ন অ্যান্ড ডায়িং, ডেকো ডিজাইন লিমিটেড, ইসলাম গার্মেন্টস লিমিটেড, অ্যারিস্টোক্র্যাট গ্রুপ ও মোহাম্মদী শার্টেক্স লিমিটেড পিপিই তৈরি করছে। তবে অনেক পোশাক কারখানা কাপড় দিয়ে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।

বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক বলেন, ‘পিপিই বানাতে আমাদের পোশাকশিল্পের অনেক উদ্যোক্তাই স্বপ্রণোদিত হয়ে এগিয়ে এসেছেন। আশা করছি, আগামী ৩ এপ্রিল ১০ হাজার পিপিই প্রস্তুত হয়ে যাবে। সেটি আমরা সরকারের কাছে হস্তান্তর করব।’

তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা ৫০ হাজার পিপিই প্রস্তুত করব। তবে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা দেড় লাখ পিপিই পিস। দেখা যাক, কতটুকু করতে পারি।’

করোনা রোগীর চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উচ্চ মানের অর্থাৎ ৩ ও ৪ লেভেলের পিপিই প্রয়োজন হয়। বিজিএমইএর তত্ত্বাবধানে যেসব পিপিই হচ্ছে, সেগুলো লেভেল ১ মানের। এটি মূলত পানিরোধক ও প্রফেশনাল পিপিইর কাছাকাছি, এমনটাই জানিয়েছে বিজিএমইএ।

অপরাধ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর