ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ১১ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
১৩১০

পুলিশের হাতে কামড় ধর্ষক মজনুর, রুদ্ধদ্বার রায়

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:২১ ১৯ নভেম্বর ২০২০  

রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলায় একমাত্র আসামি মজনুর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর)  ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোসা. কামরুন্নাহার এ রায় ঘোষণা করেন।

 

রায়ে কারাদণ্ডের পাশাপাশি  ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে ৬ মাসের জেলের কথা বলা হয়েছে। তবে রায়ের এই দিনে মজনু আদালতে বেপরোয়া আচরণ করেন। পুলিশকে, মিডিয়া কর্মীদের আঙুল উচিয়ে শাসান। আত্মহত্যারও হুমকি দেন। 

 

মজনুর বেপরোয়া আচরণ এমন অবস্থায় পৌঁছায় যে বিচারক আদালত কক্ষকে রুদ্ধদ্বার করে রায় দিতে বাধ্য হন।  এদিন সকাল সোয়া ৮টায় গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে আনা হয় মজনুকে। এরপর রাখা হয় আদালতের হাজতখানায়।

 

আদালতে আনার পর থেকেই মজনুকে বেপরোয়া আচরণ করতে দেখা যায়। পুলিশ তাকে দুই দিক থেকে দুই হাত চেপে ধরে নেওয়ার সময় হাত ছাড়িয়ে আঙুল তুলে শাসাতে থাকেন। কালো টি-শার্ট গায়ে থাকলেও একটি আকাশি রঙা শার্ট তার কাঁধের উপরে রাখা ছিল। সেটি নামাতে বললেও পুলিশের সঙ্গে ঔদ্ধত্তপূর্ণ আচরণ করেন তিনি। 

 

পরে রায়ের জন্য মজনুকে আদালত কক্ষে নেয়া হয়। তুমুল হট্টগোল শুরু করেন। সেখানেও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। অকথ্য ভাষা ব্যবহার করেন। তার হুমকি ধমকির শিকার হন সংবাদ কর্মীরাও। তাদেরও উদ্দেশ্যে বিদ্রুপাত্মক শব্দও ব্যবহার করেন তিনি।

 

একপর্যায়ে হাঁটু গেঁড়ে বসে যান মজনু। বিচার মেনে নেবেন না বলে চিৎকার করতে থাকেন। এতে রায় পড়তে সমস্যা হয় বিচারকের।  আদালত কক্ষে তার তুমুল হট্টগোল ও অশোভন আচরণ করায় বিচারক রুদ্ধদ্বার কক্ষে রায় ঘোষণা করতে বাধ্য হন। যা দেশের বিচার ইতাহাসে বিরল ঘটনা।

 

মজনু এসময় অশালীন ভাষায় গালাগালি করতে থাকেন। এসময় পুলিশ কর্মী চুপ করতে বললে পুলিশকে মারতে যাওয়ার চেষ্টাও করেন। ওই সময় তিনি কাঠগড়ায় বসে বলতে থাকেন, আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। আমার শরীর খুব দূর্বল। আমাকে ওরা ১ বছর ধরে অত্যাচার করছে। আমি মারামারি করি না, নেশা পানি করি না। আমি প্রয়োজনে রিক্সা চালিয়ে খাবো। 

 

তিনি বলেন, আমার মা খুব অসুস্থ, আমার মায়ের কাছে কেউ নেই। আমাকে ওরা অনেক অত্যাচার করছে। কারাগারে মানুষ বেচাকেনা করা হয়। আমার পক্ষে কেউ নেই। আমি এতিম। আমারে ছাইড়া দেন। আমি বিল্ডিং থেকে লাফ দিয়ে মইরা যামু। আমারে ছাইড়া দেন। 

 

রায় ঘোষণা শেষে পুলিশের কাছ থেকে পালানোর জন্যও চেষ্টা করেন মজনু। এমনকি একজন পুলিশ সদস্যের হাতে কামড়ে দেন। তার মুখ থেকে রক্তে বের হতে দেখা গেছে। এসময় তিনি সাংবাদিকের সামনে চারজনের নাম বলেন। তার মতে এরা ধর্ষণের সাথে জড়িত। নামগুলো হচ্ছে- মিলন,  ইয়াসিন, দুলাল ও আলামিন।