ঢাকা, ১৯ মার্চ মঙ্গলবার, ২০২৪ || ৫ চৈত্র ১৪৩০
good-food
২৫৬০

বগুড়ায় মহাস্থানগড়ে খননে মিলল প্রাচীন নিদর্শন

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:০৪ ৫ ডিসেম্বর ২০১৯  

বাংলাদেশ ও ফান্সের যৌথ খননে পাওয়া নকশা করা সুন্দর গাধুনি দিয়ে তৈরী ইটের কূপ। ছবি- লাইভটিভি২৪.কম

বাংলাদেশ ও ফান্সের যৌথ খননে পাওয়া নকশা করা সুন্দর গাধুনি দিয়ে তৈরী ইটের কূপ। ছবি- লাইভটিভি২৪.কম

রিপন দাস, বগুড়া : দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সাইট বগুড়ার মহাস্থানগড়ে প্রত্নতাত্তিক খননে আবারও পাওয়া গেছে মৌর্য,  শুংগ, গুপ্ত, পালসহ অন্যান্য আমলে ইটের অবকাঠামোর পাশাপাশি নানা ধরণের প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশন।
গত ৯ নভেম্বর বাংলাদেশ-ফ্রান্সের ১১ সদস্যের একটি যৌথ খনন দল মহাস্থানগড়ে বৈরাগী ভিটার দক্ষিণ পূর্ব এলাকায় খনন শুরুর কয়েকদিনের মধ্যেই মাটির নিচে পাওয়া যায় যীশু খ্রিস্টের জন্মেরও অন্তত তিনশ বছর আগে ইটের তৈরি অবকাঠামো। একই সঙ্গে খননে মিলেছে শুংগ আমলে তৈরি বেশ কিছু ইটের অবকাঠামো।
মহাস্থান জাদুঘরের কাষ্টোডিয়ান ও বাংলাদেশ খনন দলের সদস্য রাজিয়া সুলতানা জানান, এবারের খননেন বহু প্রাচীন সব অবকাঠামোর বিভিন্ন ধরণের ইট ও নানা ধরণের কূপ পাওয়া গেছে। তিনি আরো বলেন, পোড়ামাটির গুটিকা, মৃৎপাত্র, নকশা করা ইটসহ আরো অন্যান্য নিদর্শন। 
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক ও বাংলাদেশ খনন দলের অন্যতম সদস্য মজিবুর রহমান জানান, খননে মৌর্য আমল অর্থাৎ ২ হাজার ৩০০ বছর আগের তৈরি ইটের কিছু অবকাঠামো পাওয়া গেছে। একই সাথে শুংগ আমলে তৈরি কিছু টাইলসও পাওয়া গেছে ওই এলাকায় যৌথ খননে।
বাংলাদেশ খনন দলের আরেক সদস্য মোঃ জাহেদ জানান, এবারের খননে পাওয়া কূপগুলোর মধ্যে ইটের তৈরি একটি কূপও রয়েছে। সুন্দর গাথুনি দিয়ে তৈরি করা এই কূপটি কোন আমলে তৈরি তা এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। তবে মহাস্থানগড়ে খননে এর আগে কখনো ইটের তৈরি কূপ পাওয়া না পাওয়া গেলেও পাত কূপ পাওয়া গেছে। এবারো বেশ কয়েকেটি পাত কূয়া খননে পাওয়া গেছে। বিশেষ ধরণের এসব ইট শুধুমাত্র কূপের জন্য মূলত অপূর্ব নকশায় তৈরি করা হয়েছে, বললেন মোঃ জাহেদ।
ফ্রান্স দলের ফিন্ড ডিরেক্টর কলিন লিফফ্রাঙ্ক (Coline Lefrancq) জানান, আমরা এখানে প্রাচীন বিভিন্ন নিদর্শন পেয়েছি। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে খ্রিষ্টপূর্ব ৪৩০ সালের মৌর্যপূর্ব মৌর্য,  শুঙ্গ ও পাল আমনের নিদর্শন। এছাড়াও রয়েছে ইটের কূপ ও পোড়ামাটির নানা কারুকাজ করা টালী। তিনি আরো বলেন, ‘গুপ্ত আর শুঙ্গ আমলে নিদর্শনের পাশাপাশি পাওয়া গেছে দুই তিনটি তামার মুদ্রা। এসব মুদ্রা ছাপাঙ্কিত।’
প্রত্নতত্ত অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক (রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ) ড. নাহিদ সুলতানা বলেন, এই খনন চলবে আরও কিছুদিন। মহাস্থানগড়ে প্রথম বৈরাগী ভিটা এলাকায় খনন হয় ১৯২৮ সালে। ভারতীয় প্রত্নতাত্তিক কে এন দিক্ষিত সে সময় খনন পরিচালনা করেন। খননে তখনো পাওয়া যায় প্রাচীন অবকাঠামোসহ নানা ধরনের প্রত্নতাত্তিক নিদর্শন।
তবে যৌথ এ খনন কাজ ফ্রান্স দল শেষ করবে আগামী ১৪ই ডিসেম্বর আর এ মাসের শেষ নাগাদ খনন চালিয়ে যাবে বাংলাদেশ খনন দল।

ইতিহাসের পাতায় বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর