ঢাকা, ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ১২ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৭৬৪

ভাঙ্গায় চালকসহ নিহত ২

বাসের ধাক্কা গাছে, ফেনীতে ঝরলো ৮ প্রাণ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৩:০৪ ১৫ আগস্ট ২০১৯  

কক্সবাজার যাওয়ার পথে ফেনীর লেমুয়ায় একটি পিকনিকের বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ৮ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২০ জন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় ৭ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ভোরে সদর উপজেলার লেমুয়া ইউনিয়নে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লেমুয়া ব্রিজের কাছে তিব্বতিয়া কলেজের সামনে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও আহতরা জানায়, বুধবার রাতে নারায়ণগঞ্জের আদমজি থেকে কক্সবাজারে ভ্রমণের উদ্দেশে প্রাইম প্লাস পরিবহনের একটি বাস (ঢাকা মেট্রো-ব ১৪-৭৫৭৮) যাত্রী নিয়ে ছেড়ে রাত আড়াইটার দিকে রাজধানীর মিরপুর যায়। সেখান থেকে আরও কয়েকজনকে নিয়ে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দেয়। বৃহস্পতিবার ভোর পৌনে ৬টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লেমুয়া এলাকায় পৌঁছলে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে বাসটির সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই ছয়জন নিহত হন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন এবং ঢাকায় নেয়ার পথে আরও একজন মারা যায়।

নিহতদের মধ্যে দু’জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলেন : ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার শাহাদ হোসেন (৩০) ও বিক্রমপুরের সুজন (২৮)। 

আহতদের মধ্যে ২৫০ শয্যার ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন - ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা আখতার (২২), অপু (২৫), ইকবাল (৩৮), দুলাল (২৭), সকিনা (৬৫), নারায়ণগঞ্জের আদমজী এলাকার আছমা (১৮), ফয়সাল (২৩), মুন্না (৫০), আজম (১৮), দুলাল (১৩), মাদারীপুরের আলী আছমতের ছেলে রিপন (৩০), টঙ্গীর আবদুল্লাহ শেখের ছেলে রিপন (৪০) । 

ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আবু তাহের পাটোয়ারী জানান, নিহতদের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। গুরুতর আহতদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বাকিদের এখানে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

ফেনীর মহিপাল হাইওয়ে থানার এসআই কাউছার রহমান সড়ক দুর্ঘটনায় ছয়জন নিহতের কথা নিশ্চিত করেছেন। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দু’জনের মৃত্যুর খবর জেনেছেন, কিন্তু নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি। দুর্ঘটনাকবলিত বাসটি উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানান এসআই কাউছার।

ঘটনার বর্ণনায় পিকনিকের আয়োজক মিরপুরের পাপ্পু জানান, ঈদের ছুটি উপলক্ষে মীরপুরের বাসিন্দারা স্থানীয়ভাবে কক্সবাজার ও বান্দরবান যাওয়ার আয়োজন করে। সে অনুযায়ী চাঁদা সংগ্রহ শেষে বুধবার রাত ২টার দিকে মিরপুর থেকে দুটি বাস কক্সবাজার রওনা হয়।
তার মধ্যে একটি বাস ফেনীতে দুর্ঘটনায় পড়ে; তবে অন্য বাসটি কক্সবাজারে পৌঁছায় বলে জানান তিনি।

আহতদের মধ্যে রুমা আক্তার নামে এক যাত্রী বলেন, ভোরে যাত্রা বিরতির সময় কোন একটি রেস্তোরাঁয় যাত্রীরা সবাই নাস্তা করে। পরে সবাই বাসে উঠে ঘুমিয়ে পড়ার পর বাসটি দুর্ঘটনায় পড়ে।

 

এদিকে, ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা উপজেলায় দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ দুজন নিহত ও কমপক্ষে ৫০ যাত্রী আহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন - বাসচালক রওশন মিয়া ও মীরাকুণ্ড নামে এক নারী।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ভাঙ্গার নওপাড়া নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

আহত ৫০ জনকে প্রথমে ভাঙ্গা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে গুরুতর আহত ২৫ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

আহতদের মধ্যে যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে - রাজবাড়ী জেলার কানাই, সদরপুর থানার মনির হোসেন, মাশরাফি ও নমিতা, নাটোর জেলার শাহ আলম, আলামিন, আরফিন ও পারভীন, মুকসুদপুর থানার তৌহিদ, আলম, সেন্টু, শ্রেয়া, লতিকা, নিত্য ও মিলন, ফরিদপুরের ভাঙ্গার আসমা, মামুন, লিমা, মমতাজ, লিয়াকত ও মৌসুমী, বরিশালের সিয়াম, মুন্নী, শাহীন, লিপু, সালমা ও আবদুল্লাহ, মাদারীপুরের ফারিহা, জুঁই ও রাজিয়া।

দুর্ঘটনার পর ঘণ্টাব্যাপী রাস্তার দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়লে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সহায়তায় ফের যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

ফরিদপুরের অ্যাডিশনাল এসপি সাইফুজ্জামান, ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুকতাদিরুল আহমেদ, এএসপি ভাঙ্গা সার্কেল রবিউল ইসলাম, ওসি হাইওয়ে আতাউর রহমান ও ওসি ভাঙ্গা সাইদুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ওসি আতাউর রহমান জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বরিশাল থেকে রাজশাহীগামী তুহিন পরিবহন ও ফরিদপুর থেকে টেকেরহাটগামী লোকাল বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। বাস দুটি সামনের অংশ সম্পূর্ণ দুমড়ে-মুচড়ে যায়।

খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধারকাজ শুরু করেন। আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

তুহিন পরিবহনের যাত্রী আহত লিমা আক্তার জানান, লোকাল বাসটি উল্টোপাশে এসে আমাদের গাড়িতে ধাক্কা মারে। তখনই চালক নিয়ন্ত্রণ হারায়।

একই বাসের অপর এক যাত্রী জানান, লোকাল বাসের বেপরোয়া চালানো এবং দুর্ঘটনাস্থলের পাশেই সরু কালভার্ট ব্রিজ হওয়ায় ওই বাসকে সাইড দিতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।