লকডাউনের নিরাপদ প্রত্যাহার
লাইফ টিভি 24
প্রকাশিত: ০৯:১৪ ২৪ মে ২০২০
ড. মো. হাসিবুর রহমান : নোভেল করোনা কভিড-১৯ আতঙ্কে অনির্দিষ্টকালের জন্য জীবন-জীবিকা, অর্থনীতি, বেঁচে থাকার স্বপ্ন, সব কিছু লকডাউনের শিকলে বন্দি থাকাটা কোনো সমাধান নয়। আমরা প্রত্যেকেই কখনো না কখনো করোনা কভিড-১৯ আক্রান্ত হবো, ঠিক যেমনটি আমরা প্রত্যেকেই কখনো না কখনো সাধারণ সর্দি-কাশিতে (কমন-কোল্ড) আক্রান্ত হয়েছি। একইভাবে, জীবনকালে কখনো না কখনো আমরা চিকেনপক্সে আক্রান্ত হই। যেকোনো মেয়াদের লকডাউন কি আমাদের উল্লিখিত সংক্রমণগুলো থেকে মুক্তি দিতে পারে? উত্তর হলো, না। কেননা জীবাণুটি যখন ভাইরাস, আর এর বিস্তার যখন হাঁচি বা কাশি অথবা বায়ু বাহিত, তখন সংক্রমণ এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই, ভ্যাকসিনের ব্যবহার ছাড়া। আমরা যে সাধারণ সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হই সেটাও কিন্তু একটি করোনাভাইরাসের কারণেই। কিন্তু কভিড-১৯ একটা নতুন ধরনের করোনাভাইরাস বিধায় আমাদের শরীরে এর বিরুদ্ধে কোনো প্রতিরোধ (অ্যান্টিবডি) আগে থেকে তৈরি নেই। এ জন্য আমরা সহজেই সংক্রমিত হচ্ছি। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই সংক্রমণ উপসর্গহীন, নিজের অজান্তেই রোগী আক্রান্ত হন এবং নিরাময় লাভ করেন। বড় জোর সাধারণ সর্দি-কাশিতে ভুগে থাকেন কেউ কেউ। গুরুতর অসুস্থ হচ্ছেন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অত্যন্ত বয়স্ক এবং যাঁরা অ্যাজমা, ডায়াবেটিস, কিডনি বা হৃদরোগে ভুগছেন। বয়োবৃদ্ধরা কিন্তু ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস ঘটিত নিউমোনিয়ায়ও আক্রান্ত হন, মারাও যান। কিন্তু কভিড-১৯-এর ক্ষেত্রে প্রকোপ (ভিরুলেন্স) অত্যন্ত বেশি, কারণ আগেই বললাম, এটি নতুন প্রকৃতির।
এক-দুই বছর পর আমাদের দেশে এই ভাইরাসটির সংক্রমণ ক্ষমতা এবং প্রকোপ (ভিরুলেন্স) ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সমতুল্য পর্যায়ে নেমে আসার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। বলা যেতে পারে ভাইরাসের সঙ্গে বসবাস এবং সংক্রমণেই মুক্তি (হার্ড ইম্যুনিটি)। আমেরিকা-ইউরোপের দিকে তাকিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ দেখি না। ওদের এথনিক গ্রুপ আলাদা, আবহাওয়া ভিন্ন। তাঁদের ভ্যাকসিন না দিলে, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস দিয়েও সব বয়সের ক্ষেত্রেই নিউমোনিয়ায় প্রাণহানি ঘটে, আমাদের ক্ষেত্রে কিন্তু তা হয় না। কভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে প্রাণহানির পরিসংখ্যান বাংলাদেশে ইউরোপ, আমেরিকার তুলনায় যে অনেক কম (আলহামদুলিল্লাহ) এর পেছনে সম্ভবত এথনিসিটি এবং জলবায়ুর বিভিন্ন নিয়ামকের ভিন্নতাই দায়ী। কোনো র্যাপিড ডিটেকশন কিট ব্যবহার করে মাত্রাতিরিক্ত জনঘনত্বের এই দেশের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষকে টেস্টের আওতায় আনতে পারলে প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যাটি হয়তো অনেক বড় দেখাত এবং প্রমাণিত হতো বাংলাদেশে কভিড-১৯ সংক্রমণে মৃত্যুহার বর্তমানে অনুমিত মৃত্যুহার অপেক্ষা আরো অনেক কম এবং আমেরিকা ও ইউরোপের তুলনায় নগণ্য। এখন দেশ লকডাউনে আছে। দেশের একটি বৃহৎ শ্রমজীবী জনগোষ্ঠী কর্মহীন হয়ে পড়ায় মৌলিক চাহিদা মেটাতে তাঁরা হিমশিম খাচ্ছেন, মানবেতর জীবনযাপন করছেন। দারিদ্র্যের সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ও চিকিত্সা ব্যয় নির্বাহের ক্ষমতার সম্পর্ক বিপরীতমুখী। দৈনিক উপার্জন না থাকায় ক্ষুদে ব্যবসায়ীরা এখন সচ্ছল অবস্থা থেকে দরিদ্র জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছেন। এই মানুষগুলো কারো কাছে হাত পাততে পারেন না। ত্রাণের সারিতে দাঁড়াতে তাঁরা অভ্যস্ত নন। এক সময় যে মানুষটি দৈনিক তিন হাজার টাকা মুনাফা করে ৫০০ টাকা ব্যয় করতেন নিজের ও পরিবারের ওষুধ খরচের পেছনে, তাঁর এখন কোনো আয় নেই। করোনার ছোবলে দারিদ্র্যজনিত চিকিত্সা সংকট এবং মানবিক বিপর্যয়ের কথাও আমাদের ভাবতে হবে। করোনাই একমাত্র প্রাণঘাতি রোগ নয়। WHO এবং ICDDR,B এর হিসাব মতে এই দেশে ২০১৮-১৯ সালে বছরে গড়ে যক্ষ্মা, শিশু-নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়াজনিত রোগে যথাক্রমে ৪৭ হাজার, ১২ হাজার এবং ১৯ হাজার মানুষ মারা গেছেন। নিশ্চয় উল্লিখিত রোগগুলোতে আক্রান্ত হয়ে বিপুলসংখ্যক মানুষ ওই বছর চিকিত্সা নিয়ে সুস্থও হয়েছেন। লকডাউন যদি মানুষকে বুভুক্ষু রাখে, আর্থিক সামর্থ্যকে বিকলাঙ্গ করে দেয়, তাহলে উল্লিখিত রোগগুলোতে প্রাণহানির সংখ্যাও বাড়বে। কিন্তু এত ত্যাগের পরেও কভিড-১৯-এর আখ্যান শেষ হবে না। আমরা অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত লকডাউনে থেকে যেমন সাধারণ সর্দি-কাশি, চিকেনপক্স ও ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস নির্মুল করতে পারব না, ঠিক তেমনি কভিড-১৯-এর জন্যও লকডাউন কোনো সমাধান বয়ে আনবে না। তাহলে কি লকডাউনের কোনোই কার্যকারিতা নেই? অবশ্যই আছে, লকডাউনের কারণে হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ সামলানো গেছে, চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা ঘুরে দাঁড়ানোর সময় পেয়েছে এবং কভিড-১৯ শনাক্তকরণ কেন্দ্র মাত্র একটি থেকে ৪২টিতে সম্প্রসারিত হয়েছে। এবার সময় এসেছে এই লকডাউনের কবল থেকে জাতিকে পরিকল্পনা মাফিক নিরাপদে, পর্যায়ক্রমে বের করে আনা এবং বহুল উচ্চারিত হার্ড-ইম্যুনিটির দিকে জনগোষ্ঠীকে নিয়ে যাওয়া। এ ক্ষেত্রে সরকারকে মহামারি বিশেষজ্ঞ, অর্থনীতিবিদ, ও চিকিৎসা-ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে আলোচনা করে লকডাউন-মুক্তির কর্মপরিকল্পনা করতে হবে। লকডাউন থেকে বেরিয়ে আসার ক্ষেত্রে কাজে আসতে পারে কোনো একটি অ্যান্টিবডিভিত্তিক র্যাপিড-ডিটেকশন কিট। এই কিটের মাধ্যমে অঞ্চলভেদে জনগোষ্ঠীর প্রতিরোধ ক্ষমতা যাচাই করে ক্রমে ক্রমে প্রথমে তরুণ ও যুবসম্প্রদায়কে ঘর থেকে বের করে আনতে হবে। এ ছাড়া ইমিউন-নন এমন তরুণ/যুব সম্প্রদায়ও যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন তাহলে পরিবেশের মাত্রা স্বল্প জীবিত (Sub-infection dose)ও মৃত, উভয় প্রকারের ভাইরাস দিয়ে সংক্রমিত হবেন এবং উপসর্গবিহীন বা অল্প সর্দি- কাশিতে ভুগে দেহে প্রতিরোধ তৈরি করবেন। প্রথমে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া যেতে পারে। পর্যায়ক্রমে স্কুল ও বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিকদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ সময়ে সর্বাত্মক প্রচারণার মাধ্যমে বয়োজ্যেষ্ঠ এবং অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ নাগরিকদের (ডায়াবেটিস/অ্যাজমা/কিডনি/হৃদরোগী) সর্বোচ্চ সতর্কতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে।
একইভাবে র্যাপিড-ডিটেকশন কিটের মাধ্যমে প্রতিরোধ ক্ষমতা যাচাই-জরিপ করে ক্রমে ক্রমে অন্ত ও আন্ত জেলা যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করতে হবে। এইভাবে আমাদের জনসমষ্টি ধীরে ধীরে কভিড-১৯ সহিষ্ণু জনসমষ্টিতে পরিণত হবে। যেমনটি হয়েছে সাধারণ সর্দি-কাশি, চিকেনপক্স বা ইনফ্লুয়েঞ্জার ক্ষেত্রে। আমাদের মনে রাখতে হবে, কভিড-১৯ ভাইরাসের সঙ্গে বসবাস ও সংক্রমণেই মুক্তি, অন্তত বাংলাদেশে যতদিন কোনো ভ্যাকসিন না আসছে। এ ক্ষেত্রে ‘নোভেল করোনা কভিড-১৯-এর সঙ্গে বেঁচে থাকাটাই আমাদের রপ্ত করতে হবে’—বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই যথার্থ পরামর্শটি প্রনিধানযোগ্য।
লেখক : অধ্যাপক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
- আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনসগুলো ইসরায়েলে ফ্লাইট স্থগিত করছে
- মিশা-ডিপজলকে মালা পরিয়ে বরণ করলেন নিপুন
- দেশে নিবন্ধিত নিউজ পোর্টালের সংখ্যা ২১৩টি : তথ্য প্রতিমন্ত্রী
- তীব্র তাপপ্রবাহ: সারাদেশে স্কুল-কলেজ সাত দিন বন্ধ
- লেবুপানি খাবেন যে কারণে
- রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ৩ যুবক নিহত
- গরিবদের জন্য চার চাকা আনলো পিয়াজ্জিয়ো
- ঢাকায় ভিসা কেন্দ্র খুললো চীন
- জলবায়ু পরিবর্তন: ভয়াবহ ঝুঁকির মুখে বাংলাদেশ
- ইরানে হামলা: নাগরিকদের ইসরায়েল ছাড়তে বললো অস্ট্রেলিয়া
- দেশব্যাপী ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট জারি
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের শূন্য পদ দ্রুত পূরণের নির্দেশ
- আইপিএল থেকে মুস্তাফিজকে ফেরাতে বিসিবির সঙ্গে একমত সুজন
- পরীমণিকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি
- খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ
- আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম, দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ
- নৌকায় চড়ে জরুরি কাজ সারছেন শারজাহবাসী
- প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে এইচএসসি পাসে ৬৩৮ পদে চাকরি
- বোতলজাত সয়াবিনের দাম বাড়লো ৪ টাকা, খোলা তেল কমেছে ২ টাকা
- প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যা করলে প্রেমিকা দায়ী নয়:দিল্লি হাইকোর্ট
- গুলশানে চুলোচুলি করা সেই ৩ নারী গ্রেপ্তার
- তীব্র গরমে সুস্থ থাকতে যে ৭ খাবার খাবেন
- সালমানকে মারবেন না, এখনও সংসার হয়নি, কান্নায় ভেঙে পড়লেন রাখি
- হরমুজ প্রণালী বন্ধের হুমকি ইরানের, উদ্বিগ্ন পুরো বিশ্ব
- মিয়ানমার বাহিনীর আরও ৪৬ সদস্য বাংলাদেশে ঢুকে পড়লো
- বার্সাকে কাঁদিয়ে সেমিতে পিএসজি
- ৬ টাকার ডিম নিলামে তুলে সোয়া দুই লাখ সংগ্রহ মসজিদের
- যেভাবে তাপকে পরাস্ত করে গ্রীষ্মেও ঠান্ডা থাকা যায়
- তীব্র গরম থেকে রক্ষা পাওয়ার ১০ উপায়
- এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু
- আমার কাছে বাংলা নববর্ষটা অন্য রকম: নুসরত জাহান
- ঈদে মন খারাপ নুসরাত ফারিয়ার
- গুলশানে চুলোচুলি করা সেই ৩ নারী গ্রেপ্তার
- ঈদে শাকিব খানের ‘সেঞ্চুরি’
- ডায়াবেটিস কাদের পরীক্ষা করানো উচিত, জানালেন চিকিৎসক
- পহেলা বৈশাখের সঙ্গে হালখাতার সম্পর্ক ছিল না
- রাজ্য হিসেবে জম্মু-কাশ্মীরের মর্যাদা ফিরিয়ে দেয়ার ঘোষণা মোদির
- ৬ টাকার ডিম নিলামে তুলে সোয়া দুই লাখ সংগ্রহ মসজিদের
- সর্বোচ্চ গোলদাতার লড়াই জমে গেছে
- পহেলা বৈশাখ:ঘোরাঘুরি ও খাবারদাবারে সতর্ক থাকুন
- লঞ্চ দুর্ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজে যা দেখা গেলো
- তীব্র গরম থেকে রক্ষা পাওয়ার ১০ উপায়
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের শূন্য পদ দ্রুত পূরণের নির্দেশ
- ভিডিও বার্তায় দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর
- ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে
- জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পেলো এমভি আব্দুল্লাহ ও ২৩ নাবিক
- বৈশাখের প্রথম দিন আবহাওয়া যেমন থাকবে
- যেভাবে এলো বাংলা ১২ মাসের নাম
- ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপের আট ভেন্যু চূড়ান্ত
- ইসরায়েলে ইরানের হামলা প্রতিহতের দাবি বাইডেনের