ফাইজারের ভ্যাকসিন কী ক্ষতিকর?

করোনাভাইরাসের জিন কী মানুষের ডিএনএকে প্রভাবিত করতে পারে? যদি করে তাহলে এমআরএনএ বেইজড ভ্যাকসিন (মডার্না ও ফাইজার) মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। গত কয়েক মাস ধরে চলা এ বিতর্কিত বিষয়কে শেষ পর্যন্ত গবেষণাগারে প্রমাণ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের এমআইটির একদল গবেষক।

বিখ্যাত বিজ্ঞান সাময়িকী PNAS এ তিনদিন আগে `Reverse-transcribed SARS-CoV-2 RNA can integrate into the genome of cultured human cells and can be expressed in patient-derived tissues' শিরোনামে প্রকাশিত গবেষণাটি দাবি করছে, SARS-CoV-2 ভাইরাসের আরএনএ রিভার্স-ট্রান্সক্রাইবড হয়ে মানুষের কোষের ডিএনএকে সরাসরি প্রভাবিত করছে, যা ডিএনএ সিকুয়েন্সে ধরা পড়েছে।

বলা হচ্ছে, কোভিডে আক্রান্ত অনেক রোগী ক্লিনিক্যালি সেরে উঠলেও কিছু সময় পর তাদের শরীরে ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। উপসর্গ না থাকার পরও তারা কোভিড পজিটিভ হচ্ছেন। বিষয়টি সহজভাবে বললে, যেহেতু ভাইরাসটি আরএনএ বেইজড, সেটি আক্রান্ত কোষে আণবিক (রিভার্স ট্রান্সক্রিপটেজ) প্রক্রিয়ায় ডিএনএ চরিত্র ধার করে। 

পরবর্তীতে এই সার্স-কভ-২ ডিএনএ সিকুয়েন্স দেখা যাচ্ছে মানুষের ক্রোমোসোমে। গবেষণার মান নিয়ে বিন্দু পরিমাণ সন্দেহ নেই। তবে গবেষণাটি ইতিমধ্যে সায়েন্টিফিক কমিউনিটিতে ব্যাপক ঝড় তুলেছে। জানি না, এ ঝড় কোথায় গিয়ে ঠেকবে। আর যেকোনও মৌলিক গবেষণা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, বির্তকের মধ্য দিয়ে। 

বিষয়টি আমাদের জন্য সত্যি উদ্বেগের। গবেষণার ডেটা আমাদের বিশ্বাস করাতে বাধ্য করাচ্ছে। যদিও তাদের ডেটা বড় নয় এবং আরো কাজের প্রয়োজন। তবে এটি এ ডেটা বড় একটি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, করোনা আমাদের কাছ থেকে সহজে বিদায় নিচ্ছে না। এখন পর্যন্ত শক্তিশালী ভ্যাকসিনগুলো হচ্ছে এমআরএন ভিত্তিক। 

এ এমআরএন যদি মানুষের দেহে থাকা এনজাইম রির্ভাস করে ডিএনএতে ফিরে দেয়, তাহলে এমআরএন ভিত্তিক ভ্যাকসিন যেমন ফাইজার করোনার টিকা ভবিষ্যত মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর বার্তা দিতে পারে। যেহেতু বিষয়টি আমাদের সামনে আনা হয়েছে, এ নিয়ে আরো গবেষণা চলছে, চলবে। তবে প্রতিষ্ঠিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন প্রযুক্তি, আপাতত আশার আলো।
 

লেখক: নাদিম মাহমুদ

পোস্টডক্টোরাল রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট, ওসাকা ইউনিভার্সিটি