সাংবাদিক সিয়ামের সঙ্গে সেদিন যা ঘটেছিল
লাইফ টিভি 24
প্রকাশিত: ০০:৩৫ ২৭ এপ্রিল ২০২১

গত ২২ এপ্রিল সকালে ঢাকার পশ্চিম নাখালপাড়ায় বড় বোনের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন সাংবাদিক সিয়াম সারোয়ার জামিল। পরদিন সন্ধ্যায় আশুলিয়ার নিরিবিলি আনসার ক্যাম্পের পেছনের খোলা মাঠ থেকে হাত পা বাঁধা অবস্থায় তাকে উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
উদ্ধারকারীদের বক্তব্য, সন্ধ্যায় মাঠের ভেতর পড়ে থাকতে দেখে সিয়ামকে উদ্ধার করে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন তারা। এসময় তার হাত-পায়ে ব্লেডের দাগ ছিলো।
টানা তিনদিন চিকিৎসা শেষে গত সোমবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন সাংবাদিক সিয়াম। এরপর তিনি তার ফেসবুক পেজে সেদিনের ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করে একটি পোস্ট দেন। তা হুবহু তুলে ধরা হলো-
টানা তিনদিন চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলাম। অনেকটা সুস্থ। তবে পুরোপুরি নয়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে এখনও ব্যাথা বিদ্যমান। কাটাস্থানগুলো এখনও শুকোয়নি। পুরোপুরি সেরে উঠতে হয়তো আরও সপ্তাহখানেক লাগবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করছি। আপাতত বাসায় অবস্থান করছি।
নিখোঁজ হবার পূর্বে আমার ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন যে, আমার পরিবারে পারিবারিক কলহ চলছিল। বাস্তবে এমনটা হয়নি। তবে ওইদিন রাতে চার্জে দিতে ভুলে যাওয়ায় ফোনও বন্ধ ছিল। বড় আপার বাসায় কিছু ডকুমেন্ট নিতে এসেছিলাম। সেই সময় কিছুক্ষণ চার্জের জন্য কেবলও লাগিয়েছিলাম, কিন্তু পাওয়ার বাটন চাপা হয়নি। দিনভর ওভাবেই ফোনটা চালিয়েছি।
কাঠমুন্ডু ট্রিবিউন থেকে ওইদিন ঢাকার লকডাউন কাভারের এসাইনমেন্ট ছিল। বিধায় গাবতলী এলাকায় গিয়েছিলাম। ফ্লাইট মোডে এলাকায় ঘোরাফোরা ছবি তোলার পর ফোনের চার্জ একেবারেই শেষ হয়ে যায়। রাত হয়ে যাচ্ছিল। তবে বিষয়টি তখনও আমার মাথায় আসেনি। আমিনবাজার ব্রিজটা পার হয়ে ঠান্ডা ল্যু হাওয়া পেয়ে একটু হাটছিলাম। ভালো লাগছিল। হাতে ছিল মোবাইল ফোন।
এমন সময় হুট করেই পেছন থেকে এক তরুণ আমার ফোনটা ছো মেরে টান দিয়ে দৌড় দেয়। তার পিছু নিয়ে লাথি দিলে লোকটা পড়ে যায়। ঠিক তখনই পেছন থেকে আরও দুজন আমাকে জাপটে ধরেন। চতুর্থ একজন ব্যক্তি গামছা বা লুঙ্গি জাতীয় কাপড় দিয়ে আমার মুখমণ্ডলটা বেধে ফেলেন। তাৎক্ষণিক ধস্তাধস্তি করলেও চারজনের সঙ্গে আমি পারিনি। জায়গাটা ছিল বেশ নির্জন।
একটা গাড়ি পাশে থামার শব্দ হয়। গাড়িটা ট্রাক নাকি ছোট লরি, তা চোখ বাধা থাকায় দেখতে পাইনি। এরপর সেই গাড়িতে উঠিয়ে দুর্বৃত্তরা আমাকে এলোপাথাড়ি মারধোর করে। বিশেষ করে ভোতা কিছু দিয়ে পায়ের তলায় মারে। এরপর কোনো গ্রামের রাস্তার দিকে নিয়ে যায়-এটা বুঝতে পারি গাড়ির ঝুকিনি অনুধাবন করে। নির্জন এলাকায় উঠে বসিয়ে তাদের একজন আমাকে অনেকটা ফেনী-নোয়াখালী-চাটগাঁইয়া উচ্চারণে জিজ্ঞেস করে আমি সাংবাদিকতা করি কিনা, কেন করি, এসব কেন ছেড়ে দিইনা।
আমি প্রত্যেকটা প্রশ্নের যাই উত্তর দিই না কেন, তিনি হাহা করে হাসি দেন। এবং হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র আমার হাত, ঘাড়, গলা, বুক পায়ে পোঁচ দিতে থাকেন। তবে তিনি আমাকে খুন করতে চেয়েছেন এমনটা মনে হয়নি। প্রত্যেকটা পোচ হালকা ছিল। হাফ ইঞ্চির বেশি না। রাতভর নির্যাতনে তিনি আমার শরীরে শতাধিক ব্লেড বা এন্টিকাটারের দিয়ে কাটাকুটি করেন। আমার চিৎকার করার সুযোগ ছিল না। গোঙানি ছিল। কারণ মুখে তুলো দেয়া ছিল আর টেপ বাধা।
যে চারজন আমাকে নির্যাতন করেছেন এদের অন্তত একজন আমাকে চেনেন। এটা আমি বুঝতে পারলাম, যখন তাদের অন্য সহযোগী আমার ম্যানিব্যাগ চেক করে বলছিলেন,
'ব্যাডা সাম্বাদিক যে, আগে জানতেন না?' উনি জবাব দিলেন, 'ওরে ওই শিক্ষাই তো দিতে নিয়ে আসছি।'
ভোর রাতের দিকে যখন আজান হচ্ছিল, তখন তিনি বারবার বলছিলেন, ওরে ছেড়ে দেন ভাই। রাস্তাই ফেলাইয়া দিয়া আসি। সকাল হইলে কিছু করা যাইব না। চাঁটাগাঁইয়া উচ্চারণের লোকটা বারবার বলছিল, খাড়া, আরেকটু মজা নিয়া নিই। ভোর হয়ে গেলে, একজন আমাকে পানির সঙ্গে দুইটা ট্যাবলেট খাওয়াইয়া দেয়। পাটের শাক আর ভাত খাইতে দেয়। এরপর গাড়ির মালামাল চাপা দিয়ে ওই এলাকায় গাড়িটা রেখে চলে যান তারা।
সন্ধ্যা বেলা আমাকে হাত-পা বাধা অবস্থায় নয়ারহাটের নিরিবিলি এলাকায় নিয়ে আসেন দুর্বৃত্তদের দুজন। তাদের একজনের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। আমার হাতটা সামনের দিকে এমনভাবে বেঁধে রেখেছিল এবং তার ওপরে যেভাবে শার্টের হাত আটকে রাখা হয়েছিল, বাইরে থেকে দেখে স্বাভাবিক বলে মনে হবে। তারা আমাকে একটা নির্জন তালগাছের নিচে শুয়ে পড়তে বলেন।
আগ্নেয়াস্ত্রধারী আমাকে জানান, এখানে দশ মিনিট শুয়ে থাকবি। আমরা না যাওয়া পর্যন্ত নড়বি না। আরেকটা কথা, সাংবাদিকতা ছেড়ে দিবি। তোর দেশে থাকার দরকার নাই। বস, এবারের মতো তোর মতো চুটকা-পুটকারে ছাইড়া দিলো। এরপরে কিন্তু আর ছাড়বো না। সাবধান। পুরা জানে খাইয়ালাইবো।
দশ মিনিট পর তারা চলে গেলে আমি উঠে অন্ধকারে হাটতে থাকি আরিচা মহাসড়কের দিকে। এ সময় এক তরূণ পথচারীকে দেখতে পাই। তাকে গিয়ে হাত পায়ের বাঁধন খুলে দিতে বলি। তিনি দ্রুত আশপাশের লোকজোনকে ডাকা শুরু করেন। আমার বাঁধন খুলে দেন। পুরো এলাকাটাও চক্কর দেন। কিন্তু অপহরণকারীদের আর দেখে মেলেনি।
পরে আমাকে তারা হাইওয়ের পাশে এক গ্যারেজে নিয়ে যান। সেখানে তারা আমার পরিচয় জানতে পেরে স্থানীয় সাংবাদিকদের ফোন দেন। আমার স্ত্রীকে জানানো হয়। এ সময় স্থানীয় ভাইড়া ছাড়াও ঢাকা থেকেও আমার বড় ভাইরা ছুটে আসেন। আমাকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
আমাকে যেহেতু চেতনা নাশক ঔষধ খাওয়ানো হয়েছিল, ফলে ওইদিনের অনেক ঘটনাই আমার মনে নাই। সেখান থেকে কীভাবে ঢাকায় এলাম। তাও মনে নেই। পরদিন আমি নিজেকে পান্থপন্থের একটি বেসরকারি হাসপাতালে বেডে আবিস্কার করলাম।
যারা আমাকে উদ্ধার করেছেন। চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। সাহায্য করেছেন। প্রতিমুহূর্ত পাশে থেকেছেন। তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। একইসঙ্গে এই ধরনের ঘটনার শিকার অন্য কেউ যাতে না হন, সেই কামনাও করছি।
তবে অপহরণে কিছু বিষয় অদ্ভুত, তারা আমার মুক্তিপণ চায়নি। আমার ফোন মানিব্যাগে তাদের ইন্টারেস্ট ছিল না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিয়েছে এবং অপহরণকারীদের অন্তত একজন আমাকে চেনে।
- শেখ হাসিনা ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ বলায় শিক্ষার্থীরা অপমান বোধ করেন
- জুলাই শহীদ বা যোদ্ধা আসলে কারা, তালিকা নিয়ে বিতর্ক উঠেছে কেন?
- চট্টগ্রামে ‘মহড়ায় অংশ নিতে’ এসেছে মার্কিন সামরিক বিমান
- জাতিসংঘ অধিবেশনে ড. ইউনূসের সফরসঙ্গী হচ্ছেন তিন দলের ৪ নেতা
- রক্ত দিয়ে মোদির মঙ্গল কামনা কঙ্গনার
- লংকান-আফগান মহারণে তাকিয়ে বাংলাদেশ
- ডেঙ্গু নাকি চিকুনগুনিয়া: বুঝবেন যেভাবে
- ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই হবে জাতীয় নির্বাচন: শফিকুল আলম
- ৫০ টাকার নিচে সবজি নেই বাজারে
- নেপালে জেন-জি বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫১
- জাকসু নির্বাচনের দায়িত্ব পালনকালে শিক্ষিকার মৃত্যু
- ‘শ্রীলংকাকে হারালেই এশিয়া কাপের সুপার ফোরে বাংলাদেশ’
- পপির দুঃখ প্রকাশ
- কেউ আত্মহত্যার কথা ভাবছে কিনা বুঝবেন যেভাবে, যা করবেন
- লিটন-হৃদয়ের ব্যাটিং দৃঢ়তায় দাপুটে জয়ে এশিয়া কাপ শুরু বাংলাদেশের
- ফের ইউএনডিপির শুভেচ্ছাদূত জয়া
- সকালে ভেজানো ছোলা খাওয়ার যত উপকারিতা
- ছাত্রদলের পর জাকসু নির্বাচন বর্জন করলো আরো চার প্যানেল
- পুলিশের স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত
- নেপাল থেকে নিরাপদে দেশে ফিরলেন ফুটবলাররা
- আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন প্রবাসীরা
- ৪৮তম বিসিএসের ফল প্রকাশ: নিয়োগ পাচ্ছেন ৩ হাজার ১২০ চিকিৎসক
- নেপালে বাংলাদেশিরা নিরাপদে, পরিস্থিতির উন্নতি হলেই ফিরতে পারবেন
- মাহির সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন, যা জানালেন জায়েদ
- স্ত্রীর কথা মনোযোগ দিয়ে শোনার যত উপকারিতা
- এবারের জাতীয় নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র ৪২৬১৮
- নেপালের শীর্ষ নেতারা গোপনে, তবু দেশ পরিচালনা তাদের হাতেই
- আ. লীগের সঙ্গে আঁতাত করে ডাকসু নির্বাচনে জিতেছে শিবির
- এশিয়া কাপে নামার আগে সুখবর পেলেন লিটন-মুস্তাফিজরা
- নেপালের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর সন্ধান মিলেছে
- ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই হবে জাতীয় নির্বাচন: শফিকুল আলম
- স্ত্রীর কথা মনোযোগ দিয়ে শোনার যত উপকারিতা
- ৫০ টাকার নিচে সবজি নেই বাজারে
- পপির দুঃখ প্রকাশ
- ৪৮তম বিসিএসের ফল প্রকাশ: নিয়োগ পাচ্ছেন ৩ হাজার ১২০ চিকিৎসক
- মাহির সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন, যা জানালেন জায়েদ
- সকালে ভেজানো ছোলা খাওয়ার যত উপকারিতা
- নেপালের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীর সন্ধান মিলেছে
- ছাত্রদলের পর জাকসু নির্বাচন বর্জন করলো আরো চার প্যানেল
- কেউ আত্মহত্যার কথা ভাবছে কিনা বুঝবেন যেভাবে, যা করবেন
- নেপালের শীর্ষ নেতারা গোপনে, তবু দেশ পরিচালনা তাদের হাতেই
- আ. লীগের সঙ্গে আঁতাত করে ডাকসু নির্বাচনে জিতেছে শিবির
- নেপালে বাংলাদেশিরা নিরাপদে, পরিস্থিতির উন্নতি হলেই ফিরতে পারবেন
- ‘শ্রীলংকাকে হারালেই এশিয়া কাপের সুপার ফোরে বাংলাদেশ’
- এশিয়া কাপে নামার আগে সুখবর পেলেন লিটন-মুস্তাফিজরা
- লিটন-হৃদয়ের ব্যাটিং দৃঢ়তায় দাপুটে জয়ে এশিয়া কাপ শুরু বাংলাদেশের
- ফের ইউএনডিপির শুভেচ্ছাদূত জয়া
- জাকসু নির্বাচনের দায়িত্ব পালনকালে শিক্ষিকার মৃত্যু
- পুলিশের স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত
- এবারের জাতীয় নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র ৪২৬১৮