ঢাকা, ২০ এপ্রিল শনিবার, ২০২৪ || ৭ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৩৮১

আসছে ঘূর্ণিঝড় অশনি, যা করবেন, যা করবেন না

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৪:০৩ ৯ মে ২০২২  

ঘূর্ণিঝড় বা ঘূর্ণিবার্তা হলো ক্রান্তীয় অঞ্চলের সমুদ্রে সৃষ্ট বৃষ্টি। বজ্র ও প্রচণ্ড ঘূর্ণি বাতাস সংবলিত আবহাওয়ার একটি নিম্নচাপ প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া নিরক্ষীয় অঞ্চলে উৎপন্ন তাপ মেরু অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত করে। এ ধরনের ঝড়ে বাতাস প্রবল বেগে ঘুরতে ঘুরতে ছুটে চলে বলে এর নামকরণ করা হয়েছে ঘূর্ণিঝড়।
 

সবশেষ আবহাওয়া অধিদফতরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি মে মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। তাই এমন পরিস্থিতিতে কী করবেন আর কী করবেন না–আসুন জেনে নিই আজকের আয়োজনে।

 

ঘূর্ণিঝড়ের আগে করণীয়

১. ঘূর্ণিঝড়ের আগে দেখে নিন বাড়ির কোনো টাইলস, দরজা বা জানালায় ত্রুটি রয়েছে কি না। ত্রুটি থাকলে তা দ্রুত মেরামত করে নিন। তা নাহলে প্রবল ঝড়ে এগুলো ভেঙে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।


২. অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়াতে বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখুন। মরা বড় গাছ সরিয়ে ফেলুন। বাড়ির নর্দমা পরিষ্কার রাখুন। খোলা ইট, পাথর বাড়ির আশপাশ থেকে সরিয়ে ফেলুন।
 

৩. ঘূর্ণিঝড়ের সময় বিদ্যুৎবিভ্রাট ঘটতে পারে। তাই আগে থেকে হারিকেন বা চিমনিতে কেরোসিন ভরে রাখুন। হাতের কাছাকাছি রাখুন দিয়াশলাই। এছাড়াও হাতের কাছে রাখুন টর্চ ছাড়াও অন্য কেনো আলোর ব্যবস্থা।
 

৪. মোবাইল ফোনে চার্জ দিয়ে রাখতে ভুলবেন না। মোবাইলে চার্জ থাকলে প্রয়োজনের সময় আপনি অন্যের সঙ্গে সহজেই যোগাযোগ করতে পারবেন।
 

৫. আপডেট খবর সম্পর্কে অবগত থাকুন। এ সময় রেডিও শোনার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। আবহাওয়া দফতরের নতুন তথ্য জানুন। পাশাপাশি মেনে চলুন আবহাওয়াবিদদের পরামর্শ।
 

৬. ঘূর্ণিঝড়ের সময় বাড়ির বাইরে থাকা একেবারেই নিরাপদ নয়। তাই  প্রয়োজনীয় সব কাজ শেষ করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করুন। হাতের কাছে রাখুন প্রয়োজনীয় ওষুধ ও প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জাম।
 

৭. গৃহপালিত পশুদের বাড়ির ভেতর নিরাপদে বা আশ্রয়কেন্দ্রে রাখার চেষ্টা করুন।
 

৮. যদি আপনার বাড়ি নদীর আশপাশে হয় এবং বাড়ির অবস্থা খুব ভালো না থাকে, তাহলে কাছের কোনো স্কুল, বাড়ি বা আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করুন। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
 

৯. ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে বা অন্য আশ্রয়ে যাওয়ার সময় কী কী জরুরি জিনিস সঙ্গে নেওয়া যাবে, সেই অনুসারে প্রস্তুতি নিন।
 

১০. আর্থিক সামর্থ্য থাকলে ঘরের মধ্যে একটি পাকা গর্ত তৈরি করে নিন। জলোচ্ছ্বাসের আগে এই পাকা গর্তের মধ্যে অতি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রেখে সিমেন্ট দিয়ে তা বন্ধ করে দিন। যাতে ঘূর্ণিঝড়ের সময় এসব অক্ষত থাকে।
 

১১. বিশুদ্ধ পানির অভাবে এ সময় পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। তাই সঙ্গে রাখুন খাবার স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও ফিটকারি।
 

১২. বাড়িতে পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি মজুত করে রাখুন। অত্যধিক পরিমাণে রান্না করা খাবার রাখবেন না। কারণ, এসব খাবার দ্রুত পচে যাবে।
 

১৩. যদি ঘূর্ণিঝড়ের সময় বাড়িতে ফিরতে না পারেন, তাহলে রাস্তায় অবস্থান করা একেবারেই নিরাপদ নয়। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যান।
 

১৪. বাড়ির আশপাশে টিউবওয়েল বা পানির কল থাকলে এর মুখ পলিথিন দিয়ে ভালো করে বেঁধে রাখুন, যেন ময়লা বা দূষিত পানি পানির উৎসে প্রবেশ করতে না পারে।


ঘূর্ণিঝড়ের সময় যা মোটেও করা যাবে না

১. ঘূর্ণিঝড়ের সময় নিরাপদ থাকতে কখনোই গুজবে কান দেবেন না।
 

২. বাড়ির বাইরে থাকবেন না। বাড়ির কোনো সদস্যকে না জানিয়ে বাড়ি থেকে বের হবেন না।
 

৩. কোথাও কোনো খোলা তার ঝুলতে দেখলে তাতে হাত দেবেন না। যত দ্রুত সম্ভব স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
 

৪. ঝড় একটু কমলেই ঘর থেকে বের হবেন না। কেননা, পুনরায় আরও প্রবল বেগে অন্যদিক থেকে ঝড় আসার আশঙ্কা থাকতে পারে। তাই নিশ্চিত হতে এবং সঠিক তথ্য পেতে অপেক্ষা করুন।