ঢাকা, ০৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার, ২০২৫ || ২৫ ভাদ্র ১৪৩২
good-food
৩৬৭

চট্টগ্রাম টেস্ট: মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে এগিয়ে বাংলাদেশ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৯:১৩ ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

ব্যাট হাতে নিজের প্রথম সেঞ্চুরির পর বল হাতেও মেহেদী হাসান মিরাজের ভেলকিতে চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৫৯ রানে অলআউট করে টাইগার বোলাররা। ফলে প্রথম ইনিংস থেকে ১৭১ রানে লিড পায় তারা। তবে দিন শেষে ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ২১৮ রানে এগিয়ে স্বাগতিকরা। 

 

দ্বিতীয় ইনিংসে ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ৪৭ রান করেছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে মিরাজের ১০৩ রানের সুবাদে ৪৩০ রান করেছিলো তামিম বাহিনী। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে গতকাল দ্বিতীয় দিনের শেষ সেশনে নিজেদের প্রথম ইনিংস শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দিন শেষে ২৯ ওভারে ২ উইকেট ৭৫ রান করেছিলো সফরকারীরা। অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ৪৯ ও এনক্রুমার বোনার ১৭ রানে অপরাজিত থাকেন।

 

আজ দিনের প্রথম বলেই আগের দিন করা ১৭ রানেই বোনারকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান বাংলাদেশের স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তার বিদায়ের পর টেস্ট ক্যারিয়ারের ২০তম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন ব্র্যাথওয়েট। এরপর কাইল মায়ারসের সাথে দলের স্কোর বড় করতে থাকেন তিনি। উইকেটের সাথে মানিয়ে নিয়ে জুটিতে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন।

 

হাফসেঞ্চুরির পরই এই জুটিতে ভাঙঙ্ন ধরান স্বাগতিক অফস্পিনার নাইম হাসান। দারুণ এক ডেলিভারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলপতিকে বোল্ড করেন তিনি। ১১১ বলে ১২ চারে ৭৬ রান করেন ব্র্যাথওয়েট। চতুর্থ উইকেটে মায়ারসের সাথে ৬৮ বলে মূল্যবান ৫৫ রান যোগ করেন তিনি।

 

অধিনায়কের বিদায়ের পর আক্রমণাত্মক হয়ে বাংলাদেশ বোলারদের উপর চাপ সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন মায়ারস। দৃষ্টিনন্দন কিছু শটে ৭ বাউন্ডারিও তুলে নেন তিনি। এমন অবস্থায় তাকে থামান মিরাজ। তার বলে লেগ বিফোর হওয়ার আগে ৬৫ বলে ৪০ রান করেন মায়ারস।


২৪ রানের ব্যবধানে দুই সেট ব্যাটসম্যান ব্র্যাথওয়েট ও মায়ারসের আউটে চাপে পড়ে উইন্ডিজ। দলকে চাপ থেকে মুক্ত করতে সতর্কতার সাথে এগোতে থাকেন জার্মেই ব্ল্যাকউড ও উইকেটরক্ষক জসুয়া ডা সিলভা। প্রথম সেশনে এই দুই ব্যাটসম্যানকে আউট করতে না পারায় ব্লাকউড ৩৪ ও সিলভা ১২ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যান। বিরতি থেকে ফিরেও প্রতিপক্ষ বোলারদের বিপক্ষে নিজেদের সেরাটা দিচ্ছিলেন তারা। দলীয় ১৫৪ রানে জুটি বেঁধে দলের স্কোর আড়াইশ পার করেন।

 

এমন অবস্থায় সিলভাকে শিকার করে বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দেন নাইম। উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ৪২ রানে আউট হন সিলভা। তার ১৪১ বলের ইনিংসে ৩ চার ও ১ ছক্কা ছিলো। ম্যাচে এখন পর্যন্ত ১ ছক্কা এসেছে সিলভার ব্যাট থেকে। ষষ্ঠ উইকেটে ২৫৫ বলে ৯৯ রান দলের স্কোরবোর্ডে জমা করেন ব্ল্যাকউড ও সিলভা।

 

সতীর্থকে হারিয়ে খেই হারিয়ে ফেলেন দারুণ খেলতে থাকা ব্লাকউড। ৩ বল পরই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। বাংলাদেশের বোলারদের দারুণভাবে সামলাতে থাকা ব্ল্যাকউডকে ৬৮ রানে থামান মিরাজ। টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৪তম হাফসেঞ্চুরির করা ব্লাকউড ১৪৬ বল খেলে ৯ চার হাঁকান। দলীয় ২৫৩ রানে ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে সিলভার আউটের পর ধস নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে। এরপর ২৫৯ রানে অলআউট হয় তারা। অর্থাৎ শেষ ৬ রানে শেষ ৫ উইকেট হারায় ক্যারিবীয়রা।

 

আট নম্বরে নামা রাকিম কর্নওয়ালকে ২ এবং নয় নম্বরে নামা কেমার রোচকে খালি হাতে বিদায় দেন মিরাজ। আর ১০ নম্বরে নামা ওয়ারিকানকে ৪ রানে বোল্ড করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসের সমাপ্তি টানেন তাইজুল। বাংলাদেশের মিরাজ ২৬ ওভারে ৫৮ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন। টেস্ট ক্যারিয়ারে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো চার উইকেট নিলেন তিনি। এছাড়া মুস্তাফিজুর-নাইম-তাইজুল ২টি করে উইকেট শিকার করেন। 


বাম ঊরুর ইনজুরিতে পড়ায় এদিন বল করতে পারেননি সাকিব আল হাসান। গতকাল ৬ ওভারে ১৬ রান দিয়ে উইকেটশুন্য ছিলেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৫৯ রানে গুটিয়ে দিয়ে প্রথম ইনিংস থেকে ১৭১ রানের লিড পায় বাংলাদেশ। তাই ফুরফুরা মেজাজে শেষ সেশনে নিজেদের ইনিংস শুরু করে স্বাগতিকরা। তবে ব্যাট হাতে নেমে মহাবিপদে পড়ে তারা। ১ রানে ২ উইকেট হারায় টাইগাররা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ ও শেষ বলে বাংলাদেশের ওপেনার তামিম ইকবাল এবং তিন নম্বরে নামা নাজমুল হোসেন শান্তকে রানের খাতা খোলার আগেই প্যাভিলিয়নে পাঠান ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিনার কর্নওয়াল।

 

শুরুতেই ২ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে চিন্তামুক্ত করার চেষ্টা করেন আরেক ওপেনার সাদমান ইসলাম এবং অধিনায়ক মোমিনুল হক। উইকেট বাঁচিয়ে খেলতে শুরু করেন সাদমান। অন্যপ্রান্তে রানের চাকা সচল করেন মোমিনুল। ফলে ১৪ ওভার পর্যন্ত ৩২ রানের জুটি গড়ে ফেলেন তারা। যেখানে মাত্র ৫ রান অবদান ছিলো সাদমানের। আর মোমিনুলের ছিলো ৩৮ বলে ২৭ রান।
তবে ১৫তম ওভারের প্রথম বলে সাদমানের বিদায় নিশ্চিত করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার গাব্রিয়েল। ৪২ বলে ৫ রান করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি।

 

এরপর দিনের শেষ সময়ে আর কোনও উইকেট পতন হতে দেননি মোমিনুল ও মুশফিকুর রহিম। মোমিনুল ৩১ ও মুশফিক ১০ রানে অপরাজিত আছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কর্নওয়াল ২টি ও গ্যাব্রিয়েল ১টি উইকেট নেন।

খেলাধুলা বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর