ঢাকা, ৩০ এপ্রিল মঙ্গলবার, ২০২৪ || ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৫৩

জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পেলো এমভি আব্দুল্লাহ ও ২৩ নাবিক

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৩:৩২ ১৪ এপ্রিল ২০২৪  

সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ এবং ২৩ নাবিক মুক্ত হয়েছেন। ৩১ দিন পর মুক্তি পেলেন তারা। নাবিকরা সুস্থ আছেন। শনিবার (১৩ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার সময় এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের মালিকপক্ষ শিল্পগ্রুপ কেএসআরএমের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

 

গত ৪ মার্চ আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। তবে পথেই ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবলে পড়ে জাহাজটি। জাহাজটিতে ৫৫ হাজার টন কয়লা রয়েছে। জাহাজে থাকা ২৩ নাবিকের সবাই বাংলাদেশি।

 

পরে দস্যুরা মুক্তিপণের জন্য জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ঈদের আগেই জাহাজটির মালিকপক্ষ নানা পর্যায়ে দর-কষাকষির পর দস্যুদের সঙ্গে আলোচনা করে সমঝোতার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছানোর আভাস দিয়েছিল। মুক্তি পেয়ে জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে রওনা হয়েছে বলে জানিয়েছে কেএসআরএম কর্তৃপক্ষ। 

 

শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘জলদস্যুদের কবল থেকে বাংলাদেশি জাহাজ ও জিম্মি নাবিকদের উদ্ধারের বিষয়টি চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌছেছে। যেকোনো সময় তাঁদের ফিরিয়ে আনা হবে। তবে কৌশলগত কারণে দিনক্ষণ এখনই প্রকাশ করা হচ্ছে না।’

 

গত মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সচিবালয়ে নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘সোমালিয়ায় জলদস্যুর কবলে পড়া বাংলাদেশি ২৩ নাবিককে উদ্ধারের তৎপরতা চলছে। বিষয়টি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। আশা করি, অল্প কিছুদিনের মধ্যে তাদের সুস্থ অবস্থায় দেশে ফিরিয়ে আনতে পারব।’ 

 

এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে থাকা নাবিকেরা হলেন—জাহাজের মাস্টার মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খান, সেকেন্ড অফিসার মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, থার্ড অফিসার এন মোহাম্মদ তারেকুল ইসলাম, ডেক ক্যাডেট সাব্বির হোসাইন, চিফ ইঞ্জিনিয়ার এ এস এম সাইদুজ্জামান, সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌফিকুল ইসলাম, থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. রোকন উদ্দিন, ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার তানভীর আহমেদ, ইঞ্জিন ক্যাডেট আইয়ুব খান, ইলেকট্রিশিয়ান ইব্রাহীম খলিল উল্লাহ এবং ক্রু মো. আনোয়ারুল হক, মো. আসিফুর রহমান, মো. সাজ্জাদ হোসেন, জয় মাহমুদ, মো. নাজমুল হক, আইনুল হক, মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, মো. আলী হোসেন, মোশাররফ হোসেন শাকিল, মো. শরিফুল ইসলাম, মো. নুর উদ্দিন ও মো. সালেহ আহমদ। 

 

২৩ নাবিকদের মধ্যে ১১ জন চট্টগ্রামের ও দুজন নোয়াখালীর। বাকি ১০ জনের বাড়ি ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, নওগাঁ, খুলনা, নেত্রকোনা, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, নাটোর, সিরাজগঞ্জ ও বরিশাল। ৩১ দিন পর মুক্তি পেলেন তারা। 

 

এর আগে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে আরব সাগরে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল কেএসআরএমের মালিকানাধীন বাংলাদেশি আরেক জাহাজ ‘জাহান মণি’। ওই সময় জাহাজের ২৫ নাবিক এবং প্রধান প্রকৌশলীর স্ত্রীকে জিম্মি করা হয়েছিল। নানাভাবে চেষ্টা করে ১০০ দিন পর জলদস্যুদের কবল থেকে তাদের মুক্ত করা সম্ভব হয়।

বাংলাদেশ বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর