ঢাকা, ২৯ মার্চ শুক্রবার, ২০২৪ || ১৫ চৈত্র ১৪৩০
good-food
৮৪৫

ঠাকুরগাঁওয়ে দার্জিলিং জাতের কমলা চাষ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৬:৪২ ১৩ জানুয়ারি ২০২২  

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে দার্জিলিং জাতের কমলা চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন উদ্যোক্তা জুয়েল। স্বাদে, আকারে ও রঙে অতুলনীয় দার্জিলিং জাতের এই কমলা। গোটা বাগানজুড়ে প্রতিটি গাছে ২-৪ মণ করে কমলা শোভা পাচ্ছে। বড় বড় আকারের হলুদ কমলা দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। স্বাদে মিষ্টি আর মিলছে কমলার আসল ঘ্রাণ। 
 বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিদিন মানুষ দেখতে আসছে কমলা বাগান।  সরাসরি গাছ থেকে তোলা কমলা কিনছেন।

আবু সাইদ জুয়েল জানান, ২০১১ সালের দিকে আমি ঠাকুরগাঁও বিএডিসি অফিসে যাই বিজের চেক নেওয়ার জন্য। পাশে হার্টিকালচার সেন্টার থেকে আসার পথে ২৪টি দার্জিলিং প্রজাতির চারা সংগ্রহ করে নিয়ে আসি। চারাগুলো যত্নসহকারে উপজেলার মালঞ্চা এবং বীরহলি গ্রামে আমার খালি জায়গায় রোপণ করি। গাছগুলো দুই বছরের মাথায় বড় হয়ে ফুল আসা শুরু করে। দেখে আমার অনেক আগ্রহ তৈরি হয়। 
আবারো চেকের জন্য বিএডিসি আফিসে গেলে হার্টিকালচার সেন্টারের সাইট্রাস প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় কমলার গাছগুলো তুলে ফেলা হচ্ছিল। ডিডি সাহেব আমাকে সে সময় বেশ কিছু গাছ দিয়ে বলেন, আপনি তো গাছ অনেক পছন্দ করেন তাই এ গাছগুলো রোপন করে দেখেন। যদি সফল হতে পারেন। আমার একটা বিশ্বাস তৈরি হয় আমি পারব। এর সাথে একাধিকবার আমি দাজিলিং যাই। 
কারন হিসেবে জুয়েল জানালেন,  কমলার চারাগুলো দাজিলিং থেকে নিয়ে আসা। সেখানকার শীত, মাটি, আবহাওয়া খুব পর্যবেক্ষণ করি। দেশে ফিরে আরো দুই জাতের কমলার চারা ঢাকা থেকে সংগ্রহ করি। যার একটি অস্ট্রেলিয়ার অপরটি চাইনিজ কমলার চারা। ৮/৯ বছর ধরে এর পেছনে লেগে থেকে আমি কমলা চাষের পদ্ধতি ভালোভাবে রপ্ত করে ফেলেছি।

জুয়েল আরো জানান, এ বিষয়ে আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন দিনাজপুর হার্টিকালচার সেন্টারের উপসহকারী উদ্যান কর্মকর্তা কামরুজ্জামান। তিন জাতের কমলা গাছে এখন ফল আসছে। আমার কমলা গাছের কমলার রং, আকার এবং মিষ্টত্ব যেকোনো দেশ থেকে আমদানি করা কমলার চেয়ে উন্নত বলে আমি মনে করি। দার্জিলিং এর মাটির সাথে এ অঞ্চলের মাটির বেশ মিল রয়েছে সেই সাথে এ অঞ্চল একই অববাহিকায় হওয়ার দার্জিলিং জাতের এই কমলা চাষাবাদে এ ভূমি উর্বর। এই অঞ্চলে কমলা চাষ কৃষি অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখতে পারে।

এব্যাপারে দিনাজপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক প্রদীপ কুমার গুহ জানান, একটি গাছে ৩ থেকে ৪ শ কমলা যা প্রায় ২ থেকে ৩ মণ। যার বাজারমূল্য অনেক। জুয়েলের কমলা চাষের সফলতা দেখে আশা করি দিনাজপুর অঞ্চলের শিক্ষিত তরুণরা এগিয়ে আসবে। এ অঞ্চলে কমলা চাষে কৃষি অর্থনীতিতে বিরাট অবদানের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কৃষি বাণিজ্যিকীকরণে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে। এ এক অনন্য সফলতা।