ঢাকা, ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার, ২০২৪ || ৫ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৯১৬

দেশে বিপন্ন হয়ে যাচ্ছে অনেক মাতৃভাষা

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৩:৫৭ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ মাতৃভাষার জন্য মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার স্বীকৃতি। কিন্তু দেশেই বিপন্ন হয়ে যাচ্ছে অনেক মাতৃভাষা। অবহেলা আর বাংলার প্রভাবে হারিয়ে যাচ্ছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা। বাংলাদেশে ৪০টি ভাষা থাকলেও এর অনেক এখন বিলুপ্ত। 


গবেষণা বলছে, দেশে বিপন্ন ভাষার সংখ্যা ১৪টি। তবে ক্ষুদ্র ভাষা রক্ষায় উদ্যোগ নিয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউট। যে দেশের মানুষ বুকের তাজা রক্ত ঢেলে মায়ের ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিল। আজ সেই অনেক ভাষাই কোণঠাসা।


আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বর্তমানে বাংলাসহ মোট ভাষার পরিমাণ ৪১টি। এর মধ্যে আদিবাসী ভাষা ৩৩টি। যার ১৫ টিকেই বিপন্ন ভাষা হিসেবে দেখছেন গবেষকরা।  এছাড়া ইতোমধ্যে দেশে ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর ভাষার মধ্যে পুরোপুরি হারিয়ে গেছে এমন ভাষাগুলো হলো রাজবংশী, রাই, বাগদি, কোচ, হদি ও ভালু ইত্যাদি।


ওঁরাও, মুণ্ডা, মালো, রাউতিয়া, মুশহর ও শবর ভাষাভাষী লোকেরাও নিজেদের ভাষার অস্তিত্ব রক্ষা করতে পারেনি। গবেষকরা বলছেন, সিং, কর্মকার, গণ্ড, বেদিয়া, বর্মন ও লোহার ভাষাও আগামী কোন এক সময় ঝুঁকির মধ্যে পড়ার সম্ভাবনা আছে।


জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা-ইউনেস্কো মতে, পৃথিবীতে কোনো ভাষায় যদি কথা বলা লোকের পরিমাণ পাঁচ হাজারের কম হয় তবে তা বিপন্ন ভাষা হিসেবে স্বীকৃত হবে। এ হিসেবে বাংলাদেশে বিপন্ন ভাষার পরিমাণ চৌদ্দটি।


ভাষার গবেষকরা জানান, ক্ষুদ্র জাতি গোষ্ঠীর বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঘটনাও ভাষা বিলুপ্তির অন্যতম কারণ। পার্শ্ববর্তী শক্তিশালী ভাষার চাপে ক্ষুদ্র ও অবহেলিত ভাষা হারিয়ে যাওয়ার উদাহরণ নতুন নয়। 


তবে জাতিগত সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষায় এ ভাষাগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ একদিকে যেমন অন্যের মাতৃভাষার প্রতি সম্মান দেখানো হয় তেমনি পুনরুদ্ধার সম্ভব হয় অনেক পুরনো সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। এসব ভাষাকে টিকিয়ে রাখতে হলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিউটকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।


ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা সংরক্ষণ ও লিপি তৈরিতে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট। এছাড়াও বাংলার পাশাপাশি কয়েকটি ভাষায় প্রাথমিকের বই প্রকাশ করা হচ্ছে নিয়মিতভাবে।


অন্যদিকে সমার্থক বাংলা শব্দের পাশাপাশি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষার শব্দ ও থাকবে। এমনকি উচ্চারণও দেয়া থাকবে। এসব নিয়ে অভিধান তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট।

ফিচার বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর