ঢাকা, ২৬ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪ || ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
১৫৬২

দেশের প্রথম রেলস্টেশন জগতি

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১১:১০ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

বাংলাদেশের প্রথম রেলস্টেশনের নাম হলো জগতি। এটি কুষ্টিয়া শহর থেকে ৩ কিমি দূরে। ব্রিটিশ আমলে কলকাতার শিয়ালদহ থেকে কুষ্টিয়া পর্যন্ত যাতায়াতে ১৮৬২ সালে এ স্টেশনটি চালু করা হয়।

 

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ১৮৪৪ সালে আর. এম স্টিফেনসন কলকাতার কাছে হাওড়া থেকে পশ্চিম বাংলার কয়লাখনি সমৃদ্ধ রানীগঞ্জ শহর পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের জন্য ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানি গঠন করেন।

 

এ কোম্পানি ১৮৫৪ সালে হাওড়া থেকে হুগলি পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটার রেললাইন চালু করে।  এরপর ১৮৬২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে কলকাতা থেকে রাণাঘাট পর্যন্ত রেলপথ চালু করে।

 

এই লাইনকেই বর্ধিত করে ওই বছরের ১৫ নভেম্বর কুষ্টিয়ার জগতি পর্যন্ত ৫৩.১১ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেললাইন শাখা উন্মোচন করা হয়। সেসময়ই প্রতিষ্ঠিত হয় পূর্ববঙ্গের প্রথম রেল স্টেশন জগতি।

 

ঢাকার সাথে কলকাতার যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করার জন্য প্রায় ১০ বছর পর ১৮৭১ সালের ১ জানুয়ারি জগতি রেলস্টেশন থেকে বর্তমান রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ ঘাট পর্যন্ত ট্রেন চালু করা হয়। তখনকার সময় এই পথেই সহজে কলকাতা থেকে ঢাকা বা ঢাকা থেকে কলকাতা আসা-যাওয়া করা যেত। 

 

কলকাতা থেকে মানুষ ট্রেনে করে জগতি স্টেশন পার হয়ে গোয়ালন্দ ঘাটে নামত এবং স্টিমারে পদ্মা নদী পার হয়ে ঢাকায় চলে আসত।

 

মূলত তৎকালীন সময়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য এই অঞ্চল বেশ গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার আর কলকাতা-রানাঘাট রেলপথের বেশ কাছাকাছি হওয়ায় প্রথম রেল যোগাযোগ এদিক দিয়েই স্থাপন করা হয়। 

 

এরপর ১৯০৮ সালে কুষ্টিয়াতে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘মোহিনী মিল’, যেটা ছিলো সেই সময়ের সমগ্র এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় কাপড়ের মিল। কলকাতার সাথে ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকার কারণে এত বড় কাপড়ের কল এখানে চালু হতে পেরেছিলো।

 

স্বাধীনতার পূর্বে পাকিস্তানের সময়ে জগতিতে ‘কুষ্টিয়া চিনিকল’ প্রতিষ্ঠিত হলে সেখানে আখ সরবরাহের কাজে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতো এই জগতি স্টেশন।

 

কলকাতা থেকে কুষ্টিয়ার আশপাশের জেলাগুলোতে আসা ধান, পাট, গম, আখ কিংবা অন্যান্য পণ্যসামগ্রীও খালাস হতো এই জগতি স্টেশনেই। 

 

এসব কারণেই প্রতিষ্ঠার পরেই এই অঞ্চলের মানুষের কাছে ‘জগতি স্টেশন’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। একসময়ের জমজমাট জগতি স্টেশন এখন অনেকটুকুই নীরব।

 

এখানে শুধু স্টপেজ রয়েছে সরকারের লিজ দেয়া খুলনা-গোয়ালন্দঘাট মেইল ট্রেন নক্সিকাঁথা এক্সপ্রেস এবং পোড়াদহ ও রাজবাড়ির মধ্যে চলাচলকারী সাটল ট্রেনের। এই দুটি ট্রেনের অল্পসংখ্যক যাত্রী উঠা-নামা করে এখানে।

ফিচার বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর