ঢাকা, ০৪ মে শনিবার, ২০২৪ || ২১ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৩৮১

পাহাড়ে ঘুরতে গেলে যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকবেন

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৫:৩৪ ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩  

ভ্রমণপিপাসু আর অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়দের কাছে পাহাড় অন্যতম এক আকর্ষণের নাম। পাহাড় একেক ঋতুতে একেক রূপ ধারণ করে। শীতে কুয়াশার চাদরে ঢাকা পাহাড় অথবা বর্ষায় ঘন সবুজে ছেয়ে যাওয়া পাহাড়, দুটোরই রয়েছে আলাদা সৌন্দর্য। তাই ভ্রমণপিপাসুরা সুযোগ পেলেই ছুটে যান পাহাড়ে। তবে পাহাড়ে ঘুরতে গিয়ে অনেকেই বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার শিকার হন। এই প্রিয় শখ থেকে যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে সেজন্য ভ্রমণের শুরু থেকেই হতে হবে সতর্ক। 

 

আবহাওয়ার পূর্বাভাস

পাহাড়ে ভ্রমণের আগে অবশ্যই আবহাওয়ার পূর্বাভাস সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত। কারণ পাহাড়ে আবহাওয়ার কারণে নানা প্রতিকূল অবস্থা সৃষ্টি হয়। শীতে অতিরিক্ত ঠান্ডা অথবা বর্ষায় পাহাড় ধসের মত দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। বিশেষ করে বর্ষায় এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।

 

নিরাপত্তা সচেতনতা

বেশিরভাগ পাহাড়ি এলাকা দুর্গম। তাই বেড়াতে যাওয়ার আগে সেখানকার নিরাপত্তা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। আশপাশের পরিবেশ সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে যাত্রা করবেন। খুব বেশি দুর্গম এলাকা এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করবেন। অসুস্থতা নিয়ে পাহাড়ে বেড়াতে না যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

 

সেখানে প্রয়োজনে হাসপাতালের সুবিধা নাও পেতে পারেন এটি মাথায় রাখবেন। যেসব এলাকায় গাইড প্রয়োজন হয়, সেসব এলাকায় গাইড নিয়েই ঘুরবেন। নিজেরা নিজেরা ঘুরতে গিয়ে বিপদে পড়বেন না। মনে রাখবেন, গাইডের পাহাড় সম্পর্কে যে অভিজ্ঞতা আছে তা আপনার নেই। 

 

প্রয়োজনীয় জিনিস সঙ্গে নিন 

পাহাড়ে বেড়াতে যাওয়ার আগে অবশ্যই পুরো ভ্রমণ পরিকল্পনা বানিয়ে নিতে হবে। কত দিন থাকছেন, কত জন যাচ্ছেন, কীভাবে যাচ্ছেন, পুরো ভ্রমণে আনুমানিক কত টাকা খরচ হচ্ছে এসব বিষয়ে পরিকল্পনা করে তবেই যাত্রা শুরু করা উচিত। পাহাড়ে ভ্রমণের জন্য কিছু বিশেষ জিনিসের দরকার হয়। যেমন- ট্রেকিংয়ের জন্য লাঠি, বর্ষাকালে পানি-কাদায় পাহাড়ে উঠার উপযোগী জুতাসহ অনেক কিছু।

 

শীতে পাহাড়ে প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়ে। তাই শীতে গেলে প্রয়োজনীয় গরম জামাকাপড় নেবেন। বর্ষাকালে বৃষ্টি থেকে বাঁচতে ছাতা, পলিথিন ইত্যাদি দরকার হয়। এসব জিনিসের তালিকা করে কিনে নিতে হবে। হিসেবের বাইরেও কিছু টাকা সঙ্গে রাখবেন। কাজে লাগতে পারে। 

 

ওষুধ  ও শুকনো খাবার

পাহাড়ি এলাকা দুর্গম হওয়ায় সেখানে ওষুধ পাওয়া মুশকিল হতে পারে। তাই সতর্কতার জন্য নিজের প্রয়োজনীয় ওষুধ ছাড়াও স্যালাইন এবং মাথা ব্যথা, সর্দিকাশি, জ্বর, পেটের সমস্যার কিছু ওষুধ সঙ্গে রাখা ভালো। পাহাড়ে উঠতে গিয়ে যেকোনো সময় হাত-পা ছিলে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে। তাই সঙ্গে ব্যান্ডেজ রাখা উচিত। এ ছাড়া, পাহাড়ে রেস্টুরেন্ট বা খাওয়ার জায়গা খুব বেশি থাকে না। তাই কিছু শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি রাখতে পারেন সঙ্গে।

 

পোকামাকড় ও মশা

পাহাড়ি এলাকায় মশাসহ বিভিন্ন পোকামাকড়ের উপদ্রব হতে পারে। এর থেকে বাঁচতে মশা প্রতিরোধকারী বিশেষ ক্রিম ব্যবহার করা উচিত। এ ছাড়া বর্ষায় পাহাড়ে জোঁকের উপদ্রব হয়। এই বিষয়টি মাথায় রেখে দরকারি জিনিস সঙ্গে রাখতে হবে। যেমন জোঁক থেকে বাঁচতে লবণ সঙ্গে রাখা যায়। সাপের বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। বিশেষ করে বর্ষাকালে।   

 

ইলেকট্রনিক ডিভাইস

দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় বিদ্যুৎ সংক্রান্ত অসুবিধা হতে পারে। তাই পাহাড়ে যাওয়ার আগেই মোবাইল ফোন, ক্যামেরা বা অন্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস ফুল চার্জ করে নেবেন। এ ছাড়া, নেটওয়ার্কের সমস্যার বিষয়টি মাথায় রাখবেন। 

 

ঝুঁকি নেবেন না

অনেকেই পাহাড়ে বেড়াতে গিয়ে ঝুঁকি নিয়ে অনেক উঁচুতে উঠে পড়েন বা পাহাড়ি ঝরনার পানিতে গোসল করতে গিয়ে বড় ঝুঁকি নিয়ে ফেলেন। পাহাড়ি ঢল সম্পর্কেও সচেতন থাকেন না অনেকে। ফলে দুর্ঘটনা ঘটে প্রায়ই। সাঁতার না জানলে পাহাড়ি এলাকায় গিয়ে পানিতে নামবেন না। ঝরনার আশপাশ অনেক পিচ্ছিল থাকে। এই বিষয়টি মাথায় রেখে সেখানে যাবেন। যেসব স্থানে যাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে, সেগুলো এড়িয়ে চলুন।   

 

এ ছাড়া ঘুরতে গেলে বিশেষভাবে প্রকৃতির দিকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন। যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নষ্ট করবেন না। পাশাপাশি, স্থানীয়দের সঙ্গে ভালো আচরণ করুন। তাদের সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রাখুন।