ঢাকা, ১৬ এপ্রিল মঙ্গলবার, ২০২৪ || ৩ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৫৯৮

নারী নভোচারির বিরুদ্ধে অভিযোগ

মহাকাশে প্রথম অপরাধের তদন্তে নাসা

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২৩:১৩ ২৪ আগস্ট ২০১৯  

সাবেক স্বামীর ব্যাংক একাউন্টে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছিলেন। সাবেক স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ। এমনটা হতেই পারে, সাধারন ভাবনায়। কিন্তু সেটা যদি হয় আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের ঘটনা! আর অভিযুক্ত যদি হন নারী নভোচারী!
অভিযোগ অনুযায়ী ঘটনা মহাকাশে অবস্থানকালে। অভিযোগে বলা হয়েছে, একজন নভোচারী মহাশূন্য থেকে পৃথিবীতে তার এক সাবেক জীবনসঙ্গীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বেআইনিভাবে ঢুকে পড়েছেন।  সম্ভবত মহাকাশ থেকে অপরাধ ঘটানোর এটাই প্রথম ঘটনা। 

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা ওই অভিযোগ তদন্ত করে দেখার ঘোষণা দিয়েছে। 

নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, মহাকাশ স্টেশনে বসে তার সাবেক স্বামীর ব্যাংক একাউন্টে প্রবেশের চেষ্টা করার কথা স্বীকার করেছেন নভোচারী অ্যান ম্যাকক্লাইন।

তবে তার দাবি, তিনি অন্যায় কিছু করেননি। 
এই ঘটনার পর মিজ ম্যাক্লেইন পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন।


তার সাবেক স্বামী সামার ওর্ডেন ‘ফেডারেল ট্রেড কমিশনের’কাছে ম্যাকক্লাইনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
শনিবার বিবিসি জানায়, বিমান বাহিনীর গোয়েন্দা কর্মকর্তা ওর্ডেন ও ম্যাকক্লাইন ২০১৪ সালে বিয়ে করেন। চার বছর পর ২০১৮ সালে ম্যাকক্লাইন বিচ্ছেদের আবেদন করেন। তিনি বর্তমানে মহাকাশে রয়েছেন।

ম্যাকক্লাইন তার আইনজীবীর মাধ্যমে নিউ ইয়র্ক টাইমসকে জানান, তিনি শুধু তার পরিবারের আর্থিক অবস্থার খবর জানতে চেয়েছিলেন। তাদের একমাত্র ছেলের বেড়ে ওঠা, তার যত্ন এবং বিল ঠিকঠাকভাবে পরিশোধের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ আছে কিনা, তিনি শুধু সেটা দেখতে চেয়েছিলেন।

তিনি অত্যন্ত জোরাল গলায় অন্যায় কিছু না করার দাবি করেছেন।

নাসার মহাপরিদর্শকের কার্যালয়ের তদন্ত কর্মকর্তারা উভয়ের বক্তব্য জানতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বলেও জানায় নিউ ইয়র্ক টাইমস।


অ্যানি ম্যাক্লেইন মার্কিন সামরিক অ্যাকাডেমি ওয়েস্ট পয়েন্ট-এর গ্র্যাজুয়েট। পাশ করার পর সেনাবাহিনীর পাইলট হিসেবে তিনি ইরাকে ৮০০ ঘণ্টা যুদ্ধকালীন দায়িত্ব পালন করেন।

এরপর তিনি টেস্ট পাইলট হন এবং ২০১৩ সালে তিনি নাসার পাইলট পদের জন্য নির্বাচিত হন। তিনি ছয়মাস আইএসএস-এ অবস্থান করেন।

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন আইএসএস-এর মালিকানা পাঁচটি দেশের - যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইউরোপ, জাপান এবং ক্যানাডা।

মহাশূন্যে যে কোন মহাকাশচারী এবং যন্ত্রপাতির ওপর এই দেশগুলোর নিজস্ব আইন কার্যকর হবে বলে আইনি কাঠামো তৈরি করা হয়েছে।

সুতরাং কোন ক্যানাডিয়ান নাগরিক যদি মহাকাশে গিয়ে কোন অপরাধ ঘটান, তাহলে তিনি ক্যানাডিয়ান ফৌজদারি আইনের আওতায় পড়বেন। একইভাবে রুশ নভোচারীরা রাশিয়ার আইনের অধীন থাকবেন।

মহাকাশে ইউরোপকে একটি দেশ হিসেবে দেখা হয়। সেখানে ইউরোপীয় আইন বলবৎ থাকবে।
তবে চাইলে ইউরোপের কোন দেশ তার জাতীয় আইন প্রয়োগ করতে পারবে বলে বিধান রয়েছে। মহাকাশ থেকে অপরাধী প্রত্যর্পণের বিধানও রয়েছে।

অপর কোন দেশের নাগরিক মহাশূন্যে অপরাধ করলে দ্বিতীয় কোন দেশ তাকে ফেরত চাইতে পারবে। 

মহাশূন্যে ট্যুরিজমের সম্ভাবনা এখন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। মহাকাশে ঘটা অপরাধের বিচার ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তাও তাই বাড়ছে।