ঢাকা, ২৬ এপ্রিল শুক্রবার, ২০২৪ || ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৬৪৭

যে ১৩ অভ্যাসে বিশ্বের শীর্ষ ধনী বিল গেটস

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ০০:৫০ ১ মে ২০২২  

ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী বিল গেটসের এখন মোট সম্পদের পরিমাণ ১৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু এক সময় তিনিই ছিলেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী। তবে শীর্ষ ধনীর তকমা হারালেও ধনীর তালিকা থেকে তিনি বাদ যাননি। 

 

বিল গেটস এত সম্পদের মালিক হলেন কী করে এ নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। তিনি তার মেধা, পরিশ্রম দিয়েই আজ এ পর্যায়ে পৌঁছেছেন। এছাড়া তিনি মেনে চলেছেন কিছু অভ্যাসও। যে অভ্যাসগুলো তাকে বিশ্বের শীর্ষ ধনীর কাতারে নিয়ে গেছে। 

 

১. জ্ঞানের প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষা

জ্ঞান আহরণের ক্ষেত্রে বিল গেইটসের ছিল তীব্র আকাঙ্ক্ষা। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যাল থেকে তিনি শিক্ষা জীবন শেষ করতে পারেননি সত্য। কিন্তু সফলতায় তিনি অনেককে ছাড়িয়ে গেছেন। হার্ভার্ডে কম্পিউটারবিদ্যা শিখলেও অন্যান্য অনেক বিষয়েও জ্ঞান অর্জনে রত ছিলেন গেটস। নিজের কোর্সের বাইরেও অন্য অনেক টিচারের ক্লাস করতেন তিনি।

 

২. প্রচুর বই পড়েন গেটস

ফোর্বস-এর সাথে এক সাক্ষাৎকারে বিল গেটসের বাবা জানিয়েছিলেন, তারা ছেলে ছোটবেলা থেকেই প্রচুর বই পড়তো। বই পড়ার ক্ষেত্রে কোনো বাছবিচার ছিল না গেটসের। এখনো নিয়মিত বই পড়েন গেটস। 

 

৩. মা-বাবার সমর্থন

১৯৯৮ সালে বিল গেটস জানিয়েছিলেন তার রোল মডেল হচ্ছে তার মা-বাবা। কম্পিউটার নিয়ে বিল গেটসের আগ্রহের পেছনে উৎসাহ দিয়েছিলেন তার মা-বাবাই, এমনকি হার্ভার্ড ছাড়ার পরেও সে সমর্থন জুগিয়ে গিয়েছিলেন এ দুইজন। মায়ের কল্যাণেই আইবিএম-এর সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে গেটসের। বাবার কাছ থেকে তিনি পেয়েছিলেন মানবহিতৈষী কাজের ধারণা। 

 

৪. কাজের প্রতি ভালোবাসা 

বিল গেটসের ছোটবেলা থেকে কম্পিউটারের প্রতি মুগ্ধতা ছিল। বড় হয়ে তাই নিজের কাজকে ভালোবাসতে তার কোনো অসুবিধা হয়নি। গেটসের ভাষায়, 'প্রতিদিন যে কাজটা করেন সেটা আপনাকে উপভোগ করতে হবে। আমার জন্য এ উপভোগের জায়গাটা হলো আমি খুবই স্মার্ট কিছু মানুষজনের সাথে কাজ করি।'

 

৫. স্বপ্ন নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন গেটস

লেকসাইড স্কুলে পড়তেন গেটস। এটি ছিল একটি ব্যয়বহুল প্রাইভেট স্কুল। ওখানে পড়ার সুবাদে ক্লাস সেভেনে থাকতেই কম্পিউটারের সংস্পর্শে আসেন গেটস। ওই স্কুলে ধরাবাঁধা শেখানোর সময়ের বাইরেও শিক্ষার্থীরা কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারতো। সেসময় গেটসের এখনকার সফলতা অবাস্তব শোনানোই স্বাভাবিক ছিল। গেটস মনে করেন, ওই স্কুলে কম্পিউটার নিয়ে অভিজ্ঞতাই তাকে ভবিষ্যতের কাজে উৎসাহ জুগিয়েছে।

 

৬. সঠিক ব্যবসায়িক-পার্টনার নির্বাচন

১৯৯৮ সালে এক সাক্ষাৎকারে বিল গেটস বলেছিলেন, আমার ব্যবসায়-সংক্রান্ত ভালো সিদ্ধান্তগুলোর সাথে সঠিক মানুষদের নির্বাচন করার ব্যাপারটি জড়িয়ে আছে। এর মধ্যে পল অ্যালেনের সাথে পার্টনারশিপ গড়ে তোলাকে তালিকায় সবার ওপরে রেখেছেন গেটস। পল অ্যালেন ও বিল গেটস ছোটবেলা থেকেই বন্ধু ছিলেন। ১৯৭৫ সালে একত্রে মাইক্রোসফট গড়ে তোলেন এ জুটি।
 
 

৭. মাইক্রোসফট-এর জন্য আপৎকালীন তহবিল

সাফল্য পেতে হলে তাকে মাইক্রোসফট-এর জন্য একটি আপৎকালীন তহবিলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। ২০১৮ সালে এক চ্যাট শো-তে গেটস জানিয়েছিলেন, তিনি সবসময় সতর্ক ছিলেন যাতে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি লোককে নিয়োগ না দিয়ে ফেলেন। তার কর্মীদের বেতন-ভাতা যেন কখনো আটকে না যায় সেদিকেও যথেষ্ট খেয়াল রাখতে হতো তাকে।

 

৮. পর্যাপ্ত ঘুম 

বিল গেটস সময়ই ঘুমের প্রতি সচেতন ছিলেন। তিনি সাত ঘণ্টা ঘুমানোর পক্ষে, কারণ কাজের ক্ষেত্রে সৃজনশীল হতে হলে পর্যাপ্ত ঘুম দরকার।

 

৯. ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ 

সবাই ভুল করে, বিল গেটসও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে ভুল থেকে শিখতে পারাটাই হচ্ছে কাজের কথা। আর সেটা খুব ভালোভাবে করে দেখিয়েছেন বিল গেটস।

 

১০. মানুষ থেকে শিক্ষা গ্রহণ

১৯৯২ সালে আরেক ধনকুবের ওয়ারেন বাফেটের সাথে পরিচয় হয় গেটসের। এরপর তারা বন্ধু বনে যান। ২০২০ সালে এক ব্লগ পোস্টে বাফেটের ৯০ তম জন্মদিন ও তাদের বন্ধুতা উদযাপন করেন গেটস। সেখানে তিনি লিখেন, "ওয়ারেন আমাকে বলেছিলেন, 'আপনি যাদের সাথে মিল পান, তাদের সাথেই মিশবেন। তাই যারা আপনার চেয়ে ভালো, তাদের সাথে মেশা গুরুত্বপূর্ণ।''

 

১১. ব্যক্তিগত পোর্টফোলিওর বৈচিত্র্য

মাইক্রোসফটকে সফল প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার পর সেখানেই থিতু হয়ে যাননি বিল গেটস। এরপর আরও অন্যান্য কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছেন তিনি। কানাডিয়ান ন্যাশনাল রেলওয়ে, অটোনেশন ইত্যাদি কোম্পানিতে গেটসের শেয়ার রয়েছে। আমেরিকার কৃষিজমির একজন বড় মালিক বিল গেটস। এছাড়া আরও অনেকগুলো কোম্পানিতে বিনিয়োগ রয়েছে বিল গেটসের। এভাবে বিভিন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে নিজের অভিজ্ঞতা আর পোর্টফোলিও, দুটোতেই বিচিত্রতা এনেছেন তিনি।

 

১২. পার্টনারশিপ ছাড়ার মনোভাব

১৯৮০-এর দশকে আইবিএম-এর সাথে যুক্ত হয়ে কম্পিউটার প্রযুক্তিতে বিপ্লব আনে মাইক্রোসফট। এরপর ১৯৯০-এর দশকে এসে গেটস ঠিক করলেন, এখন থেকে মাইক্রোসফট একা চললেই তা কোম্পানির জন্য ভালো হবে। এরপরই আইবিএম থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বিল গেটস। 

 

১৩. নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে শেখা 

২০১৯ সালে নিজের কর্মীদের বিশ্বাস করে তাদের হাতে দায়িত্ব অর্পণ করার পর আরও সাফল্য ধরা দেয় গেটসের হাতে। মাইক্রোসফট-এর প্রাথমিক সময়ে নিজেই সবকিছু দেখাশোনা করতেন বিল গেটস। পরে একসময় প্রধান প্রধান কর্মীদের সাথে ভালো বোঝাপড়া গড়েন গেটস। তাদের হাতে অনেক গুরুদায়িত্ব তুলে দিয়ে নিজে ক্ষেত্রবিশেষে মেন্টরের ভূমিকা পালন করেন তিনি।

ফিচার বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর