ঢাকা, ০৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার, ২০২৫ || ২৫ ভাদ্র ১৪৩২
good-food
২১৩

লিটন-মিরাজের ব্যাটিং ও স্পিনারদের নৈপুণ্যে ম্যাচে ফিরলো বাংলাদেশ

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ২১:৪৪ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

লিটন দাস ও মেহেদি হাসান মিরাজের হাফসেঞ্চুরিতে ফলোঅন এড়ানোর পর ঢাকা টেস্টে প্রথম ইনিংসে ২৯৬ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। ফলে প্রথম ইনিংস থেকে ১১৩ রানের লিড পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এ লিডকে সাথে নিয়ে খেলতে নেমে বাংলাদেশ স্পিনারদের তোপের মুখে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪১ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারিয়েছে সফরকারীরা। ফলে ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ১৫৪ রানে এগিয়ে ক্যারিবীয়রা। ব্যাট হাতে লিটন ৭১ ও মিরাজ ৫৭ রান করেন।


মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় দিন শেষে গতকাল ৪ উইকেটে ১০৫ রান তোলে বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিম ২৭ ও মোহাম্মদ মিঠুন ৬ রানে দিন শেষ করেছিলেন। শনিবার তৃতীয় দিনের শুরু থেকে দেখেশুনেই খেলছিলেন মুশফিক-মিঠুন। ফলোঅন এড়ানোই মূল লক্ষ্য ছিলো তাদের। ৪৪তম ওভারে ৮৯তম বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের ২২তম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিক।


তার হাফসেঞ্চুরির পরই থামেন ধৈর্যের পরীক্ষা দেওয়া মিঠুন। উইন্ডিজের স্পিনার রাকিম কর্নওয়ালের করা দিনের ১০ম ওভারের প্রথম বলেই টাইমিংয়ে গড়বড় করে শর্ট মিড উইকেটে প্রতিপক্ষের অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে ক্যাচ দেন মিঠুন। ফলে ১৪০ মিনিটে ৮৭ বলে তার ১৫ রানের লড়াকু ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে।

 

মিঠুনকে হারিয়ে মনোসংযোগে ব্যাঘাত ঘটে মুশফিকের। কর্নওয়ালের করা ৫০তম ওভারের দ্বিতীয় বলে রিভার্স সুইপ করতে বড় ভুল করে ফেলেন তিনি। বল-ব্যাটের টাইমিং মিলে না যাওয়ায় শর্ট কাভারে কাইল মায়ার্সকে ক্যাচ দেন মুশি। ১৭০ মিনিটে ১০৫ বল খেলে ৭ চারে ৫৪ রানে থামেন তিনি। ফলে ১৫৫ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে ফলোঅনের শংকায় পড়ে বাংলাদেশ।


সেই শংকাটা দূর করতে উইকেট বাঁচিয়ে খেলতে শুরু করেন লিটন ও মিরাজ। এতে প্রথম সেশনে ৬ উইকেটে ১৮১ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। বিরতি থেকে ফিরে ৭০তম ওভারের শেষ বলে ফলোঅনের লজ্জা থেকে দলকে রক্ষা করেন তারা। এরপর সাবলীলভাবে খেলে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ড শক্তপোক্ত করতে থাকেন এ জুটি।


৭৬তম ওভারের প্রথম দুই বলে ২ চার মেরে টেস্ট ক্যারিয়ারের সপ্তম হাফসেঞ্চুরির দেখা পান লিটন। তারপর হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরি করা মিরাজ । ১১২ বলে হাফসেঞ্চুরি করেন তিনি। লিটন অর্ধশত পূরণ করেন ৯২তম বলে।

 

লিটন-মিরাজের হাফসেঞ্চুরিতে দ্বিতীয় সেশন দুর্দান্তভাবে কাটায় বাংলাদেশ। ৬ উইকেটে ২৭২ রানে চা-বিরতিতে যায় টাইগাররা। এসময় লিটন ৬৬ ও মিরাজ ৫৩ রানে অপরাজিত ছিলেন।


বিরতি থেকে ফেরার পর চতুর্থ ওভারে জোড়া ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। ৯২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে লিটনকে লেগ বিফোর আউট করে দলকে দারুণ ব্রেক-থ্রু দেন কর্নওয়াল। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি লিটন। ২১৪ মিনিটে ১৩৩ বল খেলে ৭ চারে ৭১ রান করে ফিরেন তিনি। সপ্তম উইকেটে ২৫৫ বলে গুরুত্বপূর্ণ ১২৬ রান যোগ করেন লিটন-মিরাজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সপ্তম উইকেটে এটিই সর্বোচ্চ রান বাংলাদেশের।


একই ওভারের পঞ্চম বলে নাইম হাসানকে খালি হাতে বিদায় দেন কর্নওয়াল। এতে ইনিংসে ৫ উইকেট পূর্ণ হয় দীর্ঘদেহী এই স্পিনারের। পাঁচ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বার ৫ বা ততধিক উইকেট শিকার করলেন তিনি। তার সাফল্যের পর মিরাজের বিদায় নিশ্চিত করেন পেসার শ্যানন গাব্রিয়েল। ৬ চারে ১৪০ বলে ৫৭ রান করেন তিনি।


২৮১ থেকে ২৮৩ রানের মধ্যে ৩ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ৩শ’র নিচে গুটিয়ে যাওয়ার মুখে পড়ে বাংলাদেশ। সেটি রুখতে শেষ উইকেটে চেষ্টা করেছিলেন তাইজুল ইসলাম ও আবু জায়েদ। কিন্তু জায়েদকে শিকার করে স্বাগতিকদের ২৯৬ রানে থামান পেসার জোসেফ। ১৩ রানে অপরাজিত থেকে যান তাইজুল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কর্নওয়াল ৩২ ওভারে ৭৪ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া গাব্রিয়েল ৩টি এবং জোসেফ ২টি উইকেট নেন।


বাংলাদেশের ইনিংস শেষে দ্বিতীয়বারের মতো ব্যাট করতে নেমে বিপদে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০ রানে প্রতিপক্ষের ২ উইকেট তুলে নেন নাইম-মিরাজ। ক্যারিবীয় অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে ৬ রানে নাইম এবং শায়নে মোসলেকে ৭ রানে থামান মিরাজ। আরেক স্পিনার তাইজুলও উইকেট শিকারের আনন্দে মাতেন। জন ক্যাম্পবেলকে ১৮ রানে বোল্ড করেন তিনি।


এরপর দিনের বাকি সময়ে বিপদ ছাড়া কাটিয়ে দেন এনক্রুমার বোনার এবং নাইটওয়াচম্যান জোমেল ওয়ারিকান। বোনার ৮ ও ওয়ারিকান ২ রানে অপরাজিত আছেন। বাংলাদেশের তাইজুল-নাইম-মিরাজ ১টি করে উইকেট নেন।

খেলাধুলা বিভাগের পাঠকপ্রিয় খবর